২৯শে অক্টোবর : বিস্ময়বোধক চিহ্ন
তিন বার । ঠিক শুনছি , এই নিয়ে তিন বার শুনলাম । সুর শলাকার রোগা শব্দের মতো শুরুর দিকটায় ছিলো , এইবার তো র্গিজার ঘন্টার মতোই ঘুম তাড়ালো । ভূতে পেলো নাকি ওটাকে ! অযাচিত বললে কম হবে , রাতের শহরে শেষ ট্রেনের শিটি মানা যায় , কোন ট্রাক থেকে ভারি মাল ফেলার শব্দ বা দূরপাল্লার ধুমসী বাসের জোর ধমক বা দু একটা অল্পপ্রাণ গুলি বাজি বোমার স্বর কিংবা কোন নারীর হঠাত্ করাত চিত্কার কাঁচের মতো অন্ধকারকেও টুকরো টুকরো করলেও মেনে নিতাম । তাই বলে ব্যাঙের ডাক … এই শহরে ! পুকুর ঝিল ডোবা কল্পনায়ও যারা দেখে না যেখানে জল মানেই সুয়েজ নর্দমা , ওখানেও বা কতোটুকো পানি ? সবটাইতো কালো ময়লায় জমটা বাঁধা , ঘনত্বে কঠিনের কাছাকাছি ।গেলো কয়েক রাতে একটা টিয়া পাখি ছিলো আমার কাছে বিজ্ঞাপনের নামে নাম ;ইরা , কথা শিখাতে শিখাতে ঘুম পাড়াতাম একদিন ঘুম ভেঙে দেখি পাখিটার পাদুটো ডানায় লুকানো ডানাদুটো শক্ত হয়ে আছে চোখ বন্ধ আমার বুকের শীতে ; সমান্য সর্দি জ্বরেই মারা গেলো পাখিটা । আজ এলো এই উভয়চরটা , রুমের কোণ থেকেই তো ডাকছে , ব্যাঙের ডাক আবার খুব একটা শালীন না … বর্ষা কাল এলো না কি ? নাতো এটাতো অক্টোবর হুম আজ ২৯ । আবার ডাকলো ! হতচ্ছাড়া আমার ঘরটাকে ঝিল বানিয়ে ছাড়বে বিছনায় কাঁদা জমে গেলো পা তুলে তুলে হাঁটছি তাতেও পাঁচ আঙুলের দাগ পড়ছে ছাঁচের মতো নরম মাটিতে … আর পারছিনা ব্যাগ খুলে ব্রোমাজেমাপ আর মিডাজোলাম … আরে যা হোক একটা কিছু চাই ঘুম চাই । আরে প্যাকেটের গায় সুন্দর একটা ছবি জানলার পাশে বিছনায় শুয়ে আছে একটা মেয়ে গালের উপর তারার ছায়া তার নিচে লিখা … now count stars in your dream . দুটা পাঁচটা দশটা বিশটা উঁ হুম কয়টাতে শেষ ঘুম আসে আমি জানি , প্রায় দেখি রুগীরা আসে একপাতা আধা পাতা ব্রোমাজেপাম খেয়ে … আমার হাসি পায় সুইসাইড এতো সোজা !
জানলা খুলো দাঁড়ালাম নক্ষত্র গুণবো বলে । বৃষ্টি পড়ছে বৃষ্টি ইলসেগুঁড়ি ; যাক এতক্ষণ জলই খুঁজছিলাম … বৃষ্টি পড়ছে চাঁদটাও কমলার একটা কোষের মতো বাতাস আসছে জানলার পর্দাগুলো আবৃত্তি করছে । কী আবৃত্তি করতে পারে ? … হুম… হুম… হুম পেয়েছি
T E HULME …
ABOVE THE DOCK
above the quiet dock in midnight
tangled in the tall masts corded height ,
hangs the moon . What seemed so far away
is but a child’s balloon forgotten after play .
বাহ হিউম বেলুন বললো চাঁদকে , মাস্তুলের উপর ঝুলছে । তাইতো এই চাঁদটাওতো ঝুলছে দূরের এন্টেনার উপরের …
আবার ওদিন কোথায় যেন পড়ছিলাম বৃষ্টিকে প্রস্রাবের সাথে তুলনা করছে কোন একটা কবিতায় হয়তো ! সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে ও দেখি জল জল করতে করতে পেচ্ছাপ করে দেয়
এই যেমন তাঁর জলের সামনে কবিতায়
” জলের ভিতর গিয়ে নিজের শরীরটাকে চিনে নেয়
জলের ভিতরে
সহাস্য পেচ্ছাপ করে লজ্জাহীন বাতাসের মতো জল , পরাগ ছড়ায় “
আবার ইচ্ছে কবিতা বলছেন
” কাঁচের চুড়ি ভাঙার মতই ইচ্ছে করে অবহেলায়
ধর্মতলায় দিন দুপুরে পথের মধ্যে হিসি করি “
আরে অনেক জায়গায় কবি হিসি করেছেন তাঁর ব্লাড সুগারটা দেখা দরকার বহুমুত্র রোগ কি না কে জানে ! হিসির উপর অতি আগ্রহের
আরেকটা ডায়গোনোসিস হতে পারে urolagnia , সঙ্গাটা এমন a pervertion in which sexual excitement is associated with the sight or thought of urination . কী বিচিত্র ! … Havebck Ellis একজন বিখ্যাত sexologist ৬০বছর বয়সে যখন তিনি এক মহিলা কে প্রস্রাব করতে দেখলেন তখনই তিনি প্রথম বারের মতো আবিষ্কার করলেন তিনি নপুংসুক না । এটাকে বিকৃত কাম বলা যেতে পারে । কিন্তু ফ্রেয়েড আবার তাঁর Three essay on the theory of sexuality তে এই বলেই রেশ টানেন all human are innately perverse .
কী জানি জানি না ! পড়তে হয় তাই পড়ি পড়ে এমনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ পাই যেন পাবলিক টয়লেটের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি …
এরচেয়ে হিউমের বেলুনটাই বেশ , শান্ত উড়ছে চাঁদটা ঝুলছে আমার মুঠোর মধ্যে নক্ষত্র জ্বলছে একমুঠো সিডেটিভ
২
– কি রে ? ঘুমাসনি ?
– বাবা তুমি ! কি একটা শব্দ বিরক্ত করছে খুব । তুমি ঘুমোও নি ?
– হুম ঘুমিয়েছিলাম । ভেঙে গেলো । কিসের শব্দ পেলি আবার ?
– একটা ব্যাঙ । আচ্ছা এমনি এমনি ঘুম ভেঙে গেলো ? ঘুমের ঔষধ লাগবে ?
– না রে । বসবি ? একটু কথা বলি
– হুম । বসলাম
– তুই একটা স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে পারবি ?
– বলো , শুনি ।
– ছেলে বেলায় একটা স্বপ্ন প্রায় দেখতাম আমি আর তোর দাদী একটা মাঠ পেরুচ্ছি … আমি বারবার জিগ্যেস করছি মা আমরা কোথায় যাচ্ছি ? তোর দাদী বলতো তোর নানার বাড়ি যাচ্ছি বাপ । যেতে যেতে একটা কাশবন নিবিড় সাদা … তোর দাদী আমাকে টেনে ঢুকে পড়লো ঐ বনে আমার নাকে মুখে তুলো চোখে তুলো চোখ বুজে ফেলি । হাঁটছি আর হাঁটছি ঐ হাঁটা শেষ হয় না … আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখি আমি একলা সাদায় ডুবে যাচ্ছি তোর দাদী নেই । আমি মা মা কেরে ডাকছি তোর দাদী নেই … শুধু একটা কথা কানে এলো হাঁটতে থাক বাপ থামিস না , আমি আর পারছি না রে বাঁকিটা তুই একাই পারবি … আমি ছুঁটতে শুরু করলাম তোর দাদীর কন্ঠটার দিকে ..
জানিস তুই এই স্বপ্নের মানে ?
– না বাবা জানি না ।ঐ স্বপ্নটা দেখলে বুঝি এখন আবার ?
– তোর দাদী মরার পর প্রায় দেখতাম ।
– না তুমি আর দেখবে না এই স্বপ্ন । বাবা তোমার কোলে মাথা দেই একটু ?
– কি রে কাঁদছিস না কি আবার ?
– না তো এমনি শুয়ে আছি খুব ঘুম বাবা অনেক ঘুম পাচ্ছে । আমি আর কাঁদি না বাবা চোখে পানি আসলেও কাঁদি না বাবা । নিষেধ আছে …
– কার নিষেধ রে ?
– আমার এক বন্ধুর ।
– তোর বন্ধু ? হাসালি ।
– কেন ? আমার বুঝি বন্ধু থাকতে নেই ?
– আজ কি স্বপ্ন দেখেছি জানিস ?
দেখলাম আমি আর তুই ঐ মাঠটায় হেঁটে যাচ্ছি তোর কত্তো প্রশ্ন … আর আমার আঙুল ধরে টানছিস এই বলে সেই বলে যেতে যেতে ঐ কাশবন , তুই ছুটে যেতে চাইছি ওদিকটায় আমি দিলাম না জাড়িয়ে রাখলাম দুবাহুতে … তারপর হঠাত্ তোর ডাক শুনি ” বাবা বাবা আমি হারিয়ে যাচ্ছি বাবা আমাকে তুলে ধরো আমি ডুবে যাচ্ছি “। দেখি আমার মুঠো ভর্তি কাশ ফুল তুই নেই …
আর তখনই ঘুম ভেঙে গেলো তোর ডাক শুনে ।
– না বাবা , আমি ডাকি নি । ঐ ব্যাঙটা ডেকেছে ।
– কোথায় ব্যাঙ ! দে ঔষধগুলো দিয়ে দে মুঠ খোল বলছি ।
– নাও বাবা ফেলে দাও ওগুলো । আমি যাবো না , তুমি আমাকে এই ভাবে জাড়িয়ে রাখো ।
– তুই আর বড় হলি নারে ! মনে আছে একবার রাগ করে তোর মায়ের ঔষধ খেয়ে ফেললি ?
– হুম মনে আছে হোমিওপ্যাথের ছোট্ট শিশিগুলো তিনটা একসাথে ।
তারপর তো খুব মারলে আমায় ওটা বুঝি মনে নেই ? জ্বর চলে এসছিল
– আছে আর আজও তোকে মারতে ইচ্ছে হচ্ছে ।
– তো মারো আপত্তি নেই ।
– না মারবো না । একটা কবিতা শুনাবি ? ঐ ফররুখ আহমেদের কাশবনের কবিতাটা …
– ফররুখ আহমেদ কেন বাবা ! ওনার কবিতা আমি পড়ি না , উনি বির্তকিত । ডানপন্থী ঘেঁসা ছিলেন ।
– তাতে কি রে ? ডান বাম আমি সারা জীবনেও বুঝলাম না ?
– হা হা ওটা আমিও বুঝি না । ধরো এমনিতেই পড়ি না ।
– তোর মুখস্থ নেই ?
– বাবা বৃষ্টি বেড়েছে আমি জানার পাশে যাচ্ছি তুমি শুতে যাও আমি বৃষ্টি দেখবো …
৩.
হুতুম ,
অনেকদিন পর লিখছি তোকে । আমি জানতাম না আমার চিঠিগুলো তোর বিরক্তির কারণ হবে , একটা একটা করে লিখেছি কখোন হসপিটাল থেকে কখনো রিকসায় কখনো ঘুমতে ঘুমতে কখনো ঘুম থেকে জেগে কখনো অঘুম নাইটডিয়্যুটি থেকে ফিরে ।আর ঐবজ্জাত ডাকপিয়নটা সব জমা করে রেখে তোর ঘাড়ে এক বস্তা চিঠি নিয়ে ফেললো , তুই খুব বিরক্ত হয়েছিস জানি মাফ করে দিস । আমার ছেলেমানুষীগুলো তোকে খুব কষ্ট দেয় ।
একটা কবিতা লিখেছি শুনবি
…
আমার জমানো চিঠিগুলো ভারি হয় পোস্টবক্সে
তোর সামনে পড়লে ঝরে যায় মাথা নিচু করে
আমি বলি – পাঠাবো না আর ।
সাজ করে আনা , কড়ি আনা কথাগুলো
চিঠির পাতায় থাকে না আর চুপ করে
ডাকঅফিসে পোস্ট করার আগে ঠিকানা জিগ্যেস করে
আমি বলি – ভুলে গেছি
তামাদি শব্দরা পৌঁছে যায় লাশকাটা ঘরে ।
তাও খাম কিনি বিষের মতো নীল খাম
চিঠি পুরি খামে কাফনের মতো সাদা চিঠি
আমি বলি – তোর ঠিকানাটা কী
… যদি এটাই হয় শেষ চিঠি ।
আজ মন খুব ভালো তাই তোর নিষেধ শুনবো না তোকে আবার লিখবো ।আজ খুব বৃষ্টি হচ্ছে । তোর চুল নিংড়ানো জল দিবি না আমায় ? আমার জ্বর নামাবো ।কয়েক সপ্তা ধরে রাতের খাওয়ার টাকা থেকে জমাচ্ছি একটা বই কিনব তোর জন্য কিন্তু তোকে লিখাইতো বারণ পাঠাবো কি করে জানি না । হুতুম আমি আর ঘুমের ঔষধ খেয়ে তোকে খুঁজি না যেদিন এক্কেবার ঘুমবো …
দেখিস একদিন আমি ঠিক খুঁজে নিবো তোকে ঐ কাশবন থেকে । তুই কি এখনও প্যাঁচাটাই আছিস না একটা সাদা বক … ভালো থাকিস তোর জন্য অনেক দোয়া করি চিঠিগুলো না পৌঁছোলেও দোয়া তো পৌঁছুবে … তাতে তো তোর রাগ হবে না ।
…
চিঠিটা শেষ হলো হয়তো শেষ চিঠি … তারপর একটি ! বিস্ময়বোধক চিহ্ন চিঠিটার উপর নড়ে বসলো । আরো একটা তামাদি চিঠি
একটা কল করবো । এতোক্ষণ ধরে এলার্ম বাজছিল ফোনটায় খেয়াল করিনি …
“হ্যালো ,
বাবা ।
নাতো নাইট ডিয়্যুটি না
এমনিতেই জেগে আছি
ঘুম আসছিল না
একটা কবিতা শুনবে বাবা
…
বৃষ্টি এলো কাশ বনে ,
জাগল সাড়া ঘাস বনে ,
বকের সারি কোথায় রে
লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে ।
নদীতে নাই খেয়া যে
ডাকলো দূরে দেয়া যে ,
কোন সে বনের আড়ালে
ফুটল আবার কেয়া যে ।
গাঁয়ের নামটি হাটখোলা
বৃষ্টি বাদল দেয় দোলা ,
রাখাল ছেলে মেঘ দেখে
যায় দাঁড়িয়ে পথ ভোলা ।
মেঘের আঁধার মন টানে
যায় সে ছুটে কোন খানে
আউশ ধানের মাঠ ছেড়ে
আমন ধানের দেশ পানে ***
জানলার ফাঁকে হাত হাতের মুঠোয় নক্ষত্র বৃষ্টিতে ভিজছে সবগুলো ছুঁড়ো দিলাম শহরটার দিকে শহরটা ঘুমোক আমি ঘুমোবো না । শহরটা ঘুমোবে তার স্বপ্নে একটুকরো গ্রাম , গ্রাম জুড়ে বৃষ্টি কাশবনে বৃষ্টি একটা বক নরম বাতাসে দুলছে একটা বিস্ময়বোধক চিহ্নের মতো ।
[ আমি যা ভাবি তাই লিখি আমি যা তাও লিখি তাতে অনেক খসড়া হয় দুএকটা কবিতা হয় কিন্তু গল্প তো আর হয় না , তাই এই পোস্টটায় গল্প করতেই চেষ্টা করেছি তাতে আমি হয়তো কম কিংবা একটুও নেই কিন্তু আমারইতো লিখা আর আমার গল্প লেখার এই চেষ্টাটুকো আমার প্রিয় লেখিকা রাবেয়া রব্বানির জন্মদিনে বিনীত হোক । শুভ জন্মদিন অনেক ভালো থাকুন আবার লিখুন … অনুরোধ ]
17 Responses to ২৯শে অক্টোবর : বিস্ময়বোধক চিহ্ন
You must be logged in to post a comment Login
শৈবালের লিখা, ফেসবুকে লিংক পেয়েই ঢুকলাম। আর ভাল লাগার অনূভুতি নিয়ে গেলাম। রাবেয়া রাব্বানীর জন্মদিনে এমন একটি লিখা আপাকে নিশ্চয়ই আরও আবেগঘন করে তুলবে। আপাকে জন্মদিনের একরাশ শুভেচ্ছা। আর লেখককে বাহবা।
লেখালেখির কথা বলব না আর ব্লগিং ও না শৈলীতে এসে যা কিছু পেয়েছি তা হলো কিছু স্বজন । আর এই অভূতপূর্ব আত্মিক সম্পর্ক এই শৈলীকে প্রফেশনাল ব্লগিং থেকে আলাদা করে । অনেক কৃতজ্ঞতা রিপন ভাই । আপনার ও মঙল হোক ।
হুম আমার লিখাই তো , অন্য নামে লিখলেও বুঝতেন আমার এক ঘেঁয়ামি কথাগুলো আপনি পড়েন সব সময়েই … ভালোবাসেন বলেই পড়েন । কৃতজ্ঞতা ধন্যবাদ এসবও আর বলতে পারি না আপনাকে , শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাই ।
কানে কানে যেটা বলি ভালো হয় নি আমিও বুঝতে পারছি তাই এলোমেলো বলে পাড় পাচ্ছি , এমনটা আর হবেও না বলছি , আমি কবি হতে চাই লেখার সাথে আমার এই চুক্তি । আমি লেখক হতে চাই না
রাবেয়া রব্বানির গল্প পড়লে আমার লিখতে ইচ্ছে হতো … জানি না উনি পড়বেন কিনা ।
ঈশ্বর তাঁর মঙ্গল করুন , শৈলীর নতুন কোন পোস্টে তাঁকে যেন আবার দেখতে পাই ।
আমার গল্প পড়ে লিখতে ইচ্ছা হতো শুনে অবাক হলাম ।লেখক হতে চান না ভালো কথা তবে যদি বলেন একসাথে লেখক আর কবি হওয়া যায় না তাহলে মানব না । অনেক নামকরা কবি ই পাশাপাশি ভালো লেখক ।
গল্পের পাঠকরাই বুঝেন আলাদা আলাদা প্যাটার্নের গল্পের কী স্বাদ !আপনার গল্পটা আলাদা ধাঁচের এলোমেলো ক্যাটাগরীটাও খারাপ না ।আমি আরো গল্প পড়ার আশা রাখছি ।
আর আমাকে নিবেদন করেছেন তাতে অবাক বা কৃতজ্ঞতা জানালাম না শৈলীর বাঁধনে আমরা অনেক আগে থেকেই স্বজন ।
তবে আপনার প্রথম পোষ্টকৃত গল্প নিবেদন করে যে সম্মান আর শুভেচ্ছা জানালেন তার ঋন শোধ করা হয়ত সম্ভব না । ঈশ্বর আপনার মঙল করুন ।
এলেন ! অপেক্ষায় ছিলাম … অপেক্ষায় থাকি , আপনার মতো করে হয়তো বলতে পারবো না কখনো তাই আপনার শব্দেই বলি শৈলী ব্লগিংএর উপরে , আলাদা একটা আত্মিক সম্পর্ক । তাই অপেক্ষায় থাকি আজিজ স্যার , মাহির ভাই , নীল নক্ষত্র , জুলিয়ান সিদ্দিকী , আপনি … যাদের কে দেখেছি এই সম্পর্ক চিনতে চিনতে এখনো আমাকে টানে শৈলী বলতে এই নামগুলো পর্দায় কাঁপতে থাকে সীমানার মাঠিতে পুঁতে নিশানার মতো যেন আমি হাঁটছি না পথটাই দূরে হেঁটে যাচ্ছে । রিপন দা , রাজন্য ভাই এখনো আছেন আমিও যেতে পারি না আর ভুলতেও চাই না , আরো নতুন আত্মীয়রা আসছেন বেড়াতে নয় এটা যেন তাদের ঘর হয় এই আশা করি ।
… গল্প লেখা নিয়ে সাহস করে কিছু বলতে পারবো না , অন্তত ” গ্রহণলাগা মানুষ “এর স্রষ্টার সামনে ।আবার শুধু ধার করে বলি এলোমেলো ক্যাটগরিটা খারাপ না … সময় নিবো জানি না কতখানি তবে এখন কবিতার ঘোরে আছি ।
আপনি ভালো থাকুন , রাগ না করলে আবার ঐ অনুরোধ করি লেখায় ফিরে আসুন , আবার লিখুন আমাদের শৈলীতে ।
হিবজিবি ছবি দুটো আমার আঁকা আর কাঠগোলাপটা আমায় মায়ের লাগনো গাছের বাসায় গিয়ে দেখি ছোট্ট টবটাতেই ফুটে আছে সুন্দর ফুলগুলো ।
বেশ ভাল লিখেছেন । আমি নতুন হিসাবে এলেও আপনার লেখা পড়েছি । ভাল লিখেন । আগামীতে ও লিখবেন সেই শুভকামনায় ।
শাকিল ভাইয়া আপনি নতুন হলেও আমার কাছে পরিচিত , শৈলীতে বেশ নিয়মিতই । আমার লিখা পড়নে তাই কৃতজ্ঞ । আমিও হয়তো আপনার লেখা পড়তে ভুল করি না । নতুন বলতে যাদের সাথে কথা বলতে কিছুটা জড়সড়ো ভাব আসে , আপনি আমার কাছে তেমনটা না … তাই সহজেই আপনার লেখায় কথা তুলি আপনিও সহজ করে নেন আমার এতেই আপন মনে হয় । শৈলীতেই থাকুন এই অনুরোধ থাকবে ।
দাদা বলে ঢেকে পিছনে ফিরতে পারব না । অধিকার নিজেই আধায় করে নেব । দাদা বলেছি বলব । এমনিতেই আমি সংসারে বড় । সেই হিসাবে একজন দাদার প্র্যোজন অপরিহার্য । শৈলীতে আছি যতদিন লিখব ততদিন । আপনার জন্য মঙ্গল কামনায় ।
লেখক এবং রাবেয়া ম্যাডামকে শুভেচ্ছা
কৃতজ্ঞতা নেলীপাল , এই ভাবে বলতে পারেন লেখক ও কবি রাবেয়া ম্যাডাম কে শুভেচ্ছা ।
আমি তো লেখক না সুহৃদ … যেন কবি হতে পারি আর্শিবাদ করবেন ।
ধন্যবাদ নেনী পাল ।
আমি কী বলি! কী বলার আছে আর এখন! হায়রে প্রকৃতির কানামাছি খেলা, আমি তবে খেলার পুতুল!
কিছুতেই লগইন হতে পারছিলাম না কাল। সব ঠিকঠাকই ছিল, ফেসবুকও করেছি পাঠ। নেট ব্যবস্থাও ব্যঙ্গ করেছে অযাচিত। এ দুর্বোধ্য, এ অজানা, এ প্রকৃতির খেয়াল, নাকি…।
যাহ বাবা, দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমাদের প্রিয় কলমসৈনিক রাবেয়া রব্বানিকে প্রণতিসহ অনুভব জগত হতে শুভ কামনা। প্রিয় শৈবাল কায়েসকেও বিনম্র অভিবাদন।
প্রিয় একজন বলেছিলেন, প্রকৃতির খেয়ালেই হয়তো আপনার সাথে যোগাযোগ; প্রকৃতির ইচ্ছাতেই ইথার তরঙ্গে ওঠানামা খেলা। প্রকৃতির এই প্রভাবে ব্যক্তিমানুষ কি অসহায়? নাকি আমরাই পরিবেশ তৈরি করে প্রকৃতির সাথে একাত্ম হই? অনুভবে ইচ্ছেটুকু জিওল রাখি; যদি কোনোদিন সাধ হয় চলে যাবো নিধেষরেখা ভেদ করে অপার মহিমায়, ক্লেদহীন, খেদহীন অনুভূতির স্বাধীনতায়। স্মৃতিটুকুই রয়ে যাবে সম্বল। প্রীতিও কি সাবানের মতো ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় কিংবা সম্পর্কের সুঁতোয় ওড়া ঘুড়ি কেন ছিন্ন হতে চায়? আহা, শুধু পড়ে থাকে একলা নাটাই…।
কী সব আবোল-তাবোল বকছি! কেন? একই শৈলীট্রেনের যাত্রী আমরা, যাত্রাপথেই পরিচয়, বন্ধুত্ব এসে বন্ধনটাকে শক্ত করেছিল আরও। কেউ কেউ কোনো স্টেশনে নেমে গেছে। পথের এবং মতের মিলের এই অনুভবের অভাবে কান্না আসবে, বুক মোচড়াবে, এটাই প্রকৃত সত্য। তবু যেতে নাহি দেব, তবু চলে যায়…। এত অনুনয়-বিনয়, এত প্রার্থনা যদি বিফলে যায় তবে কি আছে কোনো উপায়?
শৈবাল ভাই, আরও বলার ছিল অনেক। এ বলা শেষ হবার নয়। শুধু গলাগলি ধরে মেঘজমা আকাশের নীচে চলুন দাঁড়াই, প্রার্থনা করি বৃষ্টির, বৃষ্টি এসে মুছে দিক অঝোর কান্নার দাগ…।
ভালো থাকবেন, প্রীতি।
একটাছেলে ছোট্টবেলা থেকেই খুব থ্রিলার জাতীয় লেখা পড়তো , খুব ভায়োলেন্স উদ্ধত রোষকষায়িত লেখা পড়তে পড়তে একসময়ে ঐধরণটাই নিজের জন্য পছন্দ করে নিলো , খুব অল্প বয়সেই কুখ্যাত হলো কিছুদিন পর আদালত থেকে তার অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড ঘোষনা হলো । তাকে জিগ্যেস করা হলো শেষ ইচ্ছে কী … ছেলেটা বললো আমার কোন দুঃখ নেই কারণ আমি নিজেই এমনটা চেয়েছি আমি আমার জন্য এই শাস্তিটাই পছন্দ করছি তবে যদি অনুমতি পাই আমি আমার প্রিয় লেখকের সাথে একবার দেখা করতে চাই । তাকে সেই সুযোগটা দেয়া হলো … শহরের কাছঘেঁসেই একটা ছোট্ট শহরতলী যেখানে ছেলেটা তার প্রিয় লেখকের বাড়ি খুঁজে পায় , ঘরে ঠুকতে দেখে খুব অন্ধকার জানলা সব আঁটা তার মধ্য একবৃদ্ধ বসে জালবুনছে … ছেলেটা অবাক হলো , আপনি অন্ধকারে বসে জালবুনছেন কেন , বৃদ্ধটা হাসলো যে জন্ম থেকে অন্ধ তার কাছে অন্ধকারইতো সব , ছেলেটা তখন আরো হতবাক তাহলে আপনার গল্প আপনার চরিত্র আপনার নায়করা ? বৃদ্ধ সহজ ভাবেই জবাব দিলো ওগুলো গল্প আমি নিজে যা কখনো করতে পারিনি তা আমার গল্পে লিখি আর চরিত্রগুলোও আমারই সাজানো তবে আমি তাদের ভালোবাসি অনুভব করি , ওরা আমার কল্পনায় যেমন সমাজেও হয়তো থাকতে পারে নাও থাকতে পারে । … মৃত্যুদণ্ডি ছেলেটা চুপ থাকে অনেকক্ষণ তারপর বলে হ্যাঁ আছে আপনার সমাজেই আছে এইযে আপনার পাশেই আছে ।
… রাজন্য ভাই গল্পটা বলছি এই জন্যই , আমি যেমন আমার এই এলোমেলো পোস্টের চরিত্রটা তার বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে , আমি সবকিছুতেই আনন্দ খুঁজতে চাই কাক কেও আমার ভালোলাগার পাখি মনে হয় কখনো হর্ণ শুনেও পিয়ানো মনে হয় … কাজের মধ্য আনন্দ খুঁজে নেয়া জীবনকে সহজ রাখা এইটুকু আমার বাবার শিখানো , আর এই গল্পের যে চরিত্র সে পুরোউলটো একটা ডিপ্রেসিভ মুডে থাকা যার পুরো শহরটাই অসহ্য মনে হয় যা পড়ে তাতেও বিরক্তি ধরে , মাঝ রাতে ব্যাঙের শব্দ শুননে আমি কখনো বিরক্ত হই না , আমি যেখানটাই থাকি তার কিছুদূরেই রেলক্রসিং রাতে রেলের শব্দ শুনে ঘুম ভাঙলে আমি জেগেই থাকি রেশটুকু শুনার জন্য । তাই এলোমেলোর চরিত্রটিকে আমার নিজের জানলায় দাঁড়করিয়ে দেখলাম আমার খুব প্রিয় দুজন মানুষের সাথে পরিচয় করিয়েছি ।
খ্রিস্টফার কডওয়ের একটা কথা বলি ” He is already exhibiting that paradox of art . Man withdrawing from his fellow his fellow into the world of art only to enter more closely into communion with humanity ,
শিল্পসৃষ্টি করে শিল্পী তার নিজ বিন্দু থেকে সড়ে যায় খাঁচা থেকে উড়ে যায় আবার ঐ সৃষ্টিই বিবর্তনের ধরায় এসে মানুষের সত্য বিশ্বস্ত জগত্ হয়ে উঠে ।
আমি নিজে ব্যাক্তিগত ভাবে ভালো থাকি আমার আমার কাজ ভাবনা কবিতা অবসর মনের মানুষের ভালোবাসায় আর এটাও বলাও ভুল হবে আমার ভুল নেই আমি কষ্ট পাই না তবে মেনে নেই …
আপনি কষ্টপাওয়া ভালোমানুষ আমার প্রিয় একজন মানুষ আপনার জন্য আমার শ্রদ্ধা হৃদ্ধতা সবসময়েই , কবি আপনার মতো আমারও অনেক কথা বলতে হচ্ছে কিন্তু আমার বন্ধু বলে সবকিছু বলতে হয় না বুঝে নিতে হয় … কবি আপনি কি ! আমার সালামটুকু পেলেন । কান্নার দাগমুছতে নয় যদি আকাশে পরীদের ঘুম ভাঙানো হাসি হাসতে চান তবে বৃষ্টিতে ভিজতে রাজি আছি …
আমি জানি পড়েছেন আর নেট ঝামেলায় কাল আসতে পারেননি ওটাও আঁচ করেছি , জানতাম আসবেন , এতো অভিমান কেন কবি দেখননি কাল মাহির ভাইয়ের পোস্টে আমাদের প্রিয় দুজন আবার লিখার কথা দিলেন । নিজনিজ স্টেশনে নামার জো নেই শৈলী আমার দম দিয়ে ছেড়ে দেয়া খেলনা গাড়ি , এর কোন স্টেশন ই নেই যে … কেউ হয়তো জনলায় উদাসী কেউ হয়তো সিটে হেলান দিয়ে ঘুম দিয়ে নিচ্ছে একটু … ঠিক ই লিখবে ।
ধন্যবাদ রাজন্য ভাই
ভালো থাকুন সব সময়।
আপনিও ভালো থাকুন সব সময়ে , সব কিছুতেই ।