চারুমান্নান

অণুগল্প-এবং কবিতা

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

অণুগল্প-এবং কবিতা

জ্বালে আলো প্রভাতফেরি, রং ছড়ালো ভোর। ঘাস ফুলে ফড়িং ডানা কাঁপে।
কাঁপে পুকুরের জল, হাওয়ার ঢেউ’য়ে। তির তির করে কাঁপে পুবের লাল আলো, পুকুরের জলে।
হেমন্ত শেষ, শীত পরছে ঠান্ডা আভরন। দক্ষিনের বিমর্স বাতাস ঘুরে, উত্তরের হিম স্পর্শে সবে বইতে শুরু করেছে।
হেমন্তের হৈমন্তিকা ফসলের ক্ষেতের স্বর্ণচুর থেকে কৃষকের ঘড় কবেছে উজল। উদাস আজ মাঠের পর মাঠ।
গো’বালক খেলছে মাঠে ডান্ডাগুলি, ক্ষেতের মর্মবেদনায় সামিল আজ কুয়াশা শিশির।
শিশির চুঁয়ে ভিজে মেঠো পথ, সকালের আকাশ নেমে আসে ঘাসে। ঘাস ফড়িং এর পাখা তেতে উঠে রোদে।
পুকুরের ধারে লাউয়ের মাছায় মোরা বাবলার ডালে, ধ্যানে মগ্ন মাছরাঙা। জল ছবি দেখে নিজের,
আর মাছের ছবি আঁকে; আচমকা ঝাপ দেয় জলে। ঠোঁটে লাফায় চকচকে পুঁটি মাছ।
পুবের আলো চকমকিয়ে উঠে মাছরাঙার লাল ঠোঁট। এমনি ভোর বেলার সকালকাহন,
আকাশ কবিতা আওরায়।

ঐতো হেমন্তের হৈমন্তিকা হিমেল হাওয়ায় ডুবে,
কুয়াশা শিশির রং ছড়ালো, শুভ্র চাদর ঢেকে।
শঙ্খচিলের সূক্ষ্ণ চাওয়া, দিগন্ত ছবি আঁকে,
হাত বাড়িয়ে হাতের কাছে, স্বপ্ন ধর স্বপ্ন যত উড়ে।

আকাশের আবৃতি শুনে, মেঘ বালিকা এক ঝাঁক ধুঁয়াশা মেঘ দিল ছুঁয়ে। বলল হেসে হেসে, তুমি আমার স্বপ্নগুলো
এমনি নিলে কেড়ে। হতাশায় উদাস আকাশ বিবর্ণ হল নীলে। বাড়তি বেলার রৌদ্র ছায়ায়, আকাশ গেল দুরে।
কৃষক মাথাল মাথায় ক্ষেতে, পুড়ছে ক্ষেতে ধানের খড় আগুন জ্বলে ভুঁইয়ে। ধুঁয়া উঠা পোড়া গন্ধ ভাসে বাতাসে।
শিশির গন্ধ শিউলি ঝরা সকাল। গাছি খেঁজুর গাছে, রসে ভরা হাঁড়ি আনে পেরে। উঠানে কামরাঙা গাছটায়,
টোনাটুনি লাফায়। কামরাঙা সকালে আলোর ঝলমল উঠান জুড়ে। উঁকি দেয় মেঘ বালিকা, উতল স্বপ্ন খুঁজে।
দুরে যাওয়া আকাশ আবার কবিতা আওরায়।

আমায় ছুঁয়ে আমার বুকে সপ্ত রং এ ভাসো,
তবু আমার হূদয়টাকে বুঝলে না অবহেলে।
মন ভরালো হৈমন্তিকা আমি হইলাম বাঁসি
শিশির ভেজা শিউলি ঝরে ধুলায় লুটোপুঁটি।

উত্তরের ক্ষেপ ভুলে হাওয়া। আকাশের কবিতা শুনে, হিমালয়ের ঠান্ডা উপহার দেয় নীলে।
বাবুই বাসা ঝলে তাল গাছে। বাবুই জোড়া দোল খায়, উত্তরের বায়। পালক ফুলিয়ে ঘুঘু বসে আছে,
বাবলার ডালে। নাঙা সজনে গাছ সবুজ পাতা ঝরে। লেজ উঁচিয়ে কাঠবিড়ালী, এদিক ওদিক চায়।
সরষে ক্ষেত হলুদাভা আবির ঢালে, মৌমাছির ঝাঁক গুনগুনিয়ে গানে মাতে। মধু স্বপ্ন মধু মাখে।
মধু খরায স্বপ্ন বাঁচে। এমনি স্বপ্নকাতর হাওয়ার যৌবন, আকাশ দেখে লজ্জা পায়।

দুপুর রোদ চরম তাপে, আকাশ লুটায় দিগন্ত পথে। মেঘ বালিকা তা’ ধিন তা,
থৈ থৈ হাওয়ার শরীর জড়িয়ে বাঁচে।

১৪১৭@ ১১ মাঘ,শীতকাল

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


One Response to অণুগল্প-এবং কবিতা

You must be logged in to post a comment Login