শাহেদ

একজন মুসলমানের কোন মাযহাব মানা উচিৎ ? শেষ পর্ব।

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

৪. আল কোরআন নিজেদেরকে মুসলিম বলে পরিচয় দিতে বলে:

ক. কেউ যদি কোন মুসলমানকে জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি কে? তখন উত্তরে তার বলা উচিৎ যে, ‘আমি একজন মুসলিম-হানাফী-ও নই শাফেয়ি ও নই।

আল্লাহ বলেন-“আর তার চেয়ে কার কথা অধিক উত্তম, যে মানুষকে আল্লাহর প্রতি আহবান করে এবং নিজে সৎকাজ করে। আর বলে আমিতো একজন মুসলিম ও আত্মসমর্পনকারী।” [আল-কোরআন ৪১:৩৩]

খ. নবী (সা: ) অমুসলিম রাজা-বাদশাহদের নিকট ইসলামের দাওয়াত দিতে গিয়ে চিঠি লিখিয়ে ছিলেন। সেসব চিঠিতে তিনি সূরা আলে-ইমরানের নিচের কথাগুলো উল্লেখ করেছিলেন—“আপনি বলে দিন, ‘হে আহলে কিতাব! এসো সে কধার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন তাহলো, আমর যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত না করি। কোন কিছুতেই যেন তার শরীক সাব্যস্ত না করি। আর আমাদের কেউ যেন আল্লাহকে বাদ দিয়ে অপরকে প্রতিপালকরূপে গ্রহন না করি। অতপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বলে দাও, তোমরা স্বাক্ষী থেক, আমরা মুসলমান।” [সূরা আলে-ইমরান: ৬৪]

৫. ইসলামের সুবিজ্ঞ মহান ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান:

আমাদের অবশ্যই ইসলামের সুবিজ্ঞ মহান আলেমদের প্রতি সম্মান জানাতে হবে, যাদের মধ্যে রয়েছে চার ইমাম: ইমাম আবু হানীফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল এবং ইমাম মালিক (র: ) আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষন করুক। তারা ছিলেন ইসলামের জ্ঞানে সুবিজ্ঞ ব্যাক্তিত্ব। আল্লাহ তাদের জ্ঞান-গবেষনার জন্য উত্তম পোরষ্কার দান করুক। সর্ব সাধারন মানুষের মধ্যে কেউ ইমাম চতুষ্টরের মধ্যে কারো অনুসরন করলে ক্ষতি নেই যদি তাদের কথা কোরআন ও সহীহ হাদীস সম্বলিত হয়, কিন্তু তুমি কে? এ প্রশ্নের উত্তরে তাকে বলতে হবে যে, আমি একজন মুসলিম।

কেউ কেউ সুনানে আবু দাউদের ৪ ৫ ৭ ৯ নং হাদীসটির উদ্বৃতি দিয়ে যুক্তি দেখাতে পারেন যে, এ বিভক্তির কথা স্ময়ং রাসূল (সা: ) নিজে বলে গেছেন। উক্ত হাদীসের রাসূল (সা: ) এরশাদ করেছেন, আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে।

হাদীসটির মর্ম হল, রাসূল (সা: ) তার উম্মতের পরিণতি সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করেছেন যে, তার উম্মতের অবস্হা এমন হবে যে, তারা মত পার্ধক্যে জড়িয়ে পড়বে, এমনকি তারা ৭৩ তি দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে। তিনি এ কথা বলেন নি যে, তাতে উম্মতকে ৭৩টি দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। কোরআন মাজীদ আমাদেরকে দল-উপদল সৃষ্টি করতে আমাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। যারা কোরআন ও সহীহ হাদীসের নির্দেশ মেনে চলে এবং দল-উপদল সৃষ্টি করে না, তারাই সঠিক সত্য পথে আছে।

তিরমিযীর ১৭১ নং হাদীস অনুসারে রাসূল (সা: ) বলেছেন, ‘আমার উম্মতগণ ৭৩ দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে, এবং ১টি দল ছাড়া বাকি সব দলই জাহান্নামে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সেই দল কোনটি হবে? তিনি উত্তরে বললেন, :সেই দলটি হবে যার মধ্যে আমি এবং আমার সাহাবায়ে কেরাম থাকবে।“

কোরআন মাযীদের বেশ কিছু আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর তার রাসূলের। একজন খাটি মুসলমানের উচিৎ হল আল্লাহর কিতাব আল-কোরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসারী হওয়া। সে যে কোন ইসলামি বিশেষজ্ঞের মত অনুসরন করতে পারে , যদি সে বিশেষজ্ঞ আল-কোরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসারী হয়ে থাকে। কিন্তু যদি তার মত আল্লাহর কিতাব ও তার রাসূলের সহীহ হাদীসের সাধে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে তার মতের কোনই মুল্য নেই-এতে সে যত বড় বিশেষজ্ঞই হোকনা কেন।

যদি সকল মুসলমান কোরআনকে বুঝে পড়ে এবং সেই মূলণীতি অনুসারে রাসূলের হাদীসকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালায়, তবে ইনশাল্লাহ সকল মত পার্থক্য দূর হয়ে যাবে এবং আমরা সকলেই একটি ঐক্যবদ্ধ মুসলিম উম্মাহ হিসাবে গড়ে উঠব।

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


2 Responses to একজন মুসলমানের কোন মাযহাব মানা উচিৎ ? শেষ পর্ব।

You must be logged in to post a comment Login