তন্ত্রমন্ত্রের তেলেসমাতি
ঝরাপাতা পাঠ শেষেই বরং তুমি এসো স্বাধীনতার চাদরে ঢাকা মুক্তির ঋতু। গুহাকাল পেরিয়ে চোখফোটার পর রক্তছাপা কাপড়ের আলিঙ্গনে এখনো ঘন হয়ে আসে মানুষের মুখ, নিদেনপক্ষে এও জানা ভালো— অঙ্কুরিত চারার প্রতিই চিরন্তন লোভ পোকাদের আর দিকে দিকে বাড়ন্ত বয়স থামিয়ে দিতে অবিরত লালা ছাড়ছে ছাগলের জিহ্বা। শঙ্কার ডঙ্কা বাজে অষ্টপ্রহর; প্যাঁচে প্যাঁচে গিট্টু লাগলে দৃষ্টিরা ক্লান্ত হয় পটাপট, ঘোলাজলে তখন শিকারের মচ্ছব। ভেড়ার রাষ্ট্রে ভেড়াবনে না যায় যদি আমজনতা— কী আর থাকে মর্যাদা, বলো? সুবোধ সাধুর গেরুয়া ওড়ে গেলে আমি-তুমির শরীর সব একরঙা পাখির খাঁচা। আহা মুক্তি, আহা সুস্বাদু স্বাধীনতা; শিকলে শিকল জোড়া দিয়ে দৈর্ঘ্য বেড়েছে শুধু, কেন্দ্রে তো বাঁধা আছেই প্রান্ত— পায়ে পায়ে শিকল তদুপরি বাহাদুর খেতাব দিয়েছ বটে, বাহাদুরির যন্ত্রমন্ত্র যত পরিবারতান্ত্রিক ঈশ্বরীর কাছে জব্দ।
মুক্তির জন্য যুদ্ধ শেষ হবার নয়; যেদিকে যাই দেখি— বিনীত পথেরা বিলীন হয়েছে কৃষ্ণগহ্বরবেশী নদীর তলায়। ঘাটে অপেক্ষমাণ কেলাব্দুপথিকেরা; গণতন্ত্রের নাও ভাসিয়ে মাঝিরা নৌকাবাইচে ব্যস্ত ভীষণ। ওপারে যাওয়া হবে না, জানি। মুক্তি ও স্বাধীন শব্দদ্বয় ভালোবেসে বুক ভরে শ্বাস নিতে চাই তবু। হায়রে, বায়ুস্তরেও কর্পোরেট তেলেসমাতি, দূষণের দমকায় দূষিত অক্সিজেন।
অপার হয়ে বসে থাকা স্মৃতিকালের ঘাট কেবল সাক্ষী, উৎসবদিন শেষে এও আরেক বিসর্জন বিলাস। প্রকাশ্যে ন্যাংটা চাকু নাচায় ঠোটরাঙা মৌলভী, বলিকাষ্ঠের পুরোহিত, ব্যবসায়ী যাজক আর তার সাথে নির্বাণলিপি পুড়ে আজ ছাই; স্বার্থতন্ত্রমন্ত্রের গ্যাড়াকলে ওষ্ঠাগত ইতিবাচক শব্দসমুচয়। তবু জেনো— বিশ্বাসের আরেক নাম রাতকানা। পরকালও তবে স্বৈরতন্ত্রের কল্পিত আমল। আহা গণতন্ত্র, চশমায় ঢাকা চোখের ভাষার মতন।
তন্ত্রমন্ত্রের ছোঁয়াচে বায়ুকে তাই বলি— দূর হ শালা, ঝরাপাতা পাঠ শেষ হলেই আসবে সকল দায়মুক্তির ঋতু, আরাধ্য শান্তির স্বাধীনতা।
25 Responses to তন্ত্রমন্ত্রের তেলেসমাতি
You must be logged in to post a comment Login