দেশলাই
প্রচারসত্যে উম্মাদ ছিলাম। নিউরোনমাঠে খেলার দিন হুজুগে ক্রিকেটাররা বোল্ডআউট হতো। দিনেরা মা রাতেরা বাপ হলে উঠে দাঁড়াতেন মহান ঘূর্ণিঝড়। পাশের বাড়ির তৈয়েনকানার মন্ত্রপূত কফে কী ছিল, দূর-দূরান্ত থেকে জ্বীন-পরীর দল বাসনে বাসনে নিয়ে যেত কফ। একদিন আমিও গিয়েছিলাম হাফপ্যান্ট সময়ের যুগে। তার বাড়ির কুকুর আমার আজন্ম শত্রু। ফলে আমি কফবঞ্চিত ভাগাড়ের ভোলানাথ।
সেদিন খেলায় বেবাক খেলোয়াড়ের চোখে চেয়ে থাকত বর্ষাসুন্দরী কদমের ফুল। বুবুর গৃহশিক্ষক বলেছিল, কদম গাছে ভালো দেশলাই হয়। ব্যয়কৃত বাক্যের শেষে স্যারের হাত পেয়ে যেত বুবুর স্তনপ্রদেশ। আর হঠাৎ করেই নিভে যেত পাঠকক্ষের আশ্চর্যপ্রদীপ। গাধার শ্রমে কষ্ট হলে আমি টের পেতাম অন্ধকারের স্তর। কেননা- আমি উম্মাদ ছিলাম। অন্ধকারে বড়ো ভয়, আলো জ্বালতে বুবুর বারণ ছিল। যদি প্রেতের নিঃশ্বাসে পুনর্জ্বলন্ত শিখা নিভে যায়, বিপদের সমূহ সম্ভাবনা। দেবদারুর ছায়ায় আরো ডাকিনী-যোগিনীর বাস।
কালসন্ধ্যায় ভুতুরে বর্গি নামত পাড়ায় পাড়ায়। তৈয়েনকানা স্বর্গীয় বেশ্যা নিয়ে ফুর্তি করত রাতভর।
উম্মাদ ছিলাম যেহেতু আমি কদম গাছ বুক পকেটে নিয়ে বানর হতাম। হাতকারিগর মুখস্ত বানাতো অরূপ দেশলাই কাঠি। আত্মার ঘর্ষণে জ্বলে উঠলে কাঠি বধকৃত শিকারউল্লাসে আমি ধেই ধেই নাচতাম।
বিজয়ের নৃত্যে নতজানু হতো পরাজিত ঈশ্বর।
10 Responses to দেশলাই
You must be logged in to post a comment Login