শৈলী বাহক

মন্ট্রিয়লে নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত

মন্ট্রিয়লে নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত
Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

গত ২৯ জুলাই মন্ট্রিয়লের উইলিয়াম হিংস্টোন সেন্টারে (পুরনো ইমিগ্রেশন ভবন) কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটি নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে একটি নাগরিক শোক সভার আয়োজন করে। শোক সভায় মন্ট্রিয়লের বাঙ্গালী কমিউনিটির কবি-সাহিত্যিক, অধ্যাপক, রাজনীতিকসহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। সংগঠনটির কর্ণধার ও এক সময়ের প্রখ্যাত ছাত্রনেতা জিয়াউল হক জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক মাহাবুবুল হাসান নীরু। অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন মন্ট্রিয়ল পার্ক এক্সেটনশনের সিটি কাউন্সিলর ম্যারিডেরস, প্লামন্ডন এলাকার স্কুল কমিশনার খোকন মনিরুজ্জামান, প্রবীণ শিক্ষক প্রফেসর আবু আলম, ড. আকমল হোসেন, ড. মহিউদ্দিন তালুকদার, বিশিষ্ট সমাজসেবক লুৎফর রহমান ও শাখাওয়াৎ হোসেন, কানাডা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদ মিয়া, মন্ট্রিয়লের আওয়ামীলীগের সভাপতি মুন্সী বশির, বিশিষ্ট রিয়েল এষ্টেট ব্যবসায়ী রশিদ খান, কবি হাসিনা মমতাজ, আবৃত্তিকার আফাজ উদ্দিন তোতন প্রমূখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে বেহালায় করুণ সুর বাজিয়ে শোনান পন্ডিত সমীর চন্দ কটন।

বক্তারা নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের জীবন ও সাহিত্যের ওপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন। কেউ কেউ হুমায়ূন আহমেদের সাথে ফেলে আসা দিনের স্মৃতিচারণ করেন। প্রফেসর আবু আলম বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের মুত্যুতে জাতির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।’ খোকন মনিরুজ্জান হুমায়ূন সাহিত্যের প্রতি কানাডার সাহিত্যানুরাগীদের আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে ম্যাকগিল ইউনির্ভাসিটিতে সেখানকার ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে একটি শোকসভার আয়োজন করার পরামর্শ দেন কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটিকে। ড. আকমল হোসেন হুমায়ূন সাহিত্যকে অমূল্য সম্পদ বলে উল্লেখ করেন। কানাডা আওয়ামীলীগ সভাপতি মাহমুদ মিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেন এই দেশ বরেণ্য সাহিত্যিকের অকাল মৃত্যুতে। মন্ট্রিয়ল আওয়ামীগ সভাপতি মুন্সী বশির হুমায়ূন আহমেদের অকাল মুত্যুকে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি বলে উল্লেখ করেন। তিনি হুমায়ূন আহমেদের ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ ও তৎপরতার কথা তুলে ধরেন।

কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটির উপদেষ্টা শাখাওয়াৎ হোসেন হুমায়ূনের বলিষ্ট লেখনির ওপর আরোকপাত করেন। মাহাবুবুল হাসান নীরু তার বক্তব্যে বলেন, ‘তাঁর এই অকাল বিদায়ে আমার মতো লক্ষ-কোটি মানুষ স্তম্ভিত, ব্যথিত, গভীরভাবে আহত হয়েছেন। এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষের এভাবে আকস্মিক বিদায় কারুরই কাম্য ছিলো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ হুমায়ূন আহমেদ আমার দৃষ্টিতে ছিলেন, আমাদের সাহিত্য-নগরের যাদুকর বংশীবাদক। অদ্ভূত এক যাদুর বাঁশি নিয়ে এই অসাধারণ প্রতিভাধর মানুষটি পা রেখেছিলেন বাংলা সাহিত্যের আঙ্গিনায়। তিনি তাঁর সে বাঁশির অপ্রতিরোধ্য সুর-মূর্চ্ছণায় মোহাচ্ছন্ন করে চুম্বকের মতো আমৃত্যু টেনে ধরে রেখেছিলেন সুবিশাল পাঠক-গোষ্ঠি। একাধারে সৃষ্টি করেছেন নতুন নতুন পাঠক। আমাদের মতো দেশে বই লিখে কতোটা জনপ্রিয়তার শিখরে আরোহন করা যায়, হওয়া যায় কতো অর্থ-বিত্তের মালিক তার এক অনন্য-সাধারণ উদাহরণ স্থাপন করে গেছেন এই নন্দিত কথাশিল্পী। একই সাথে প্রশস্ত করে দিয়ে গেছেন বাংলা সাহিত্যের নবাগত ও অনাগত লেখকদের পথ।’

অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত উক্ত শোকসভায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক-স্রোতা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মন্ট্রিয়লের স্বনামধন্য উপস্থাপিকা ও কবি শামসাদ আরা রানা। মরহুম লেখকের ওপর আলোচনা শেষে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। একেবারে শেষভাগে ছিলো ইফতারের আয়োজন।

—আছাদুল হক

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


You must be logged in to post a comment Login