সজল স্বরাজ

সূর্যকুসুম

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

সাদামেঘ ক্যানভাসে কুসুম সূর্যের মুখ
মায়ের হাতের নাস্তা ঝালফ্রাই ডিম
প্রার্থনা শেষে পায়চারী, শুভ্রদাঁড়ি মুসুল্লীর
তসবীর পুঁতি আঙ্গুলের ফাঁক গলে কপিকল
রাতের চাদর ফেলে, আলগোছে চোখ মেলে, আঁতুড়-দিন
নম্র বাতাসের পালকে দূর সমুদ্রের আদর
সারিসারি আকাশমণির পথ
ইটের গুঁড়োর গালিচায় পড়ে থাকে সর্পিল
কয়লার দহন উগড়ে দেয়, ইটভাটার নাক
পাকা ধূমপায়ীর মতো পোলো-প্রশ্বাসে

পাশেই ছোট নদী, বাঁধানো ঘাটের খয়েরি
সিঁড়ির ধাপ নেমে গেছে ক্লিভেজ খাদে
পাড়ের সন্ধি-ঝোপের সবুজ, চুম্বন আঁকে
বহতা সলিল জায়নামাজে
কিশোর বাঁশের নোঙর, বেঁধে রাখে ডিঙ্গি
সৌখিন মাঝি পড়িয়ে দিয়েছে ময়ূর-টোপর
পাশাপাশি দু’টি নাও, দম্পতি
ছোট ঢেউ চঞ্চল, দুলে ওঠে শিহরণে

একটু এগুলেই, নদীর পাড় ঘেঁসে
সদ্য-যৌবনা বট-সুডৌল শাখা-ফলে, অলঙ্কারে
তলার বেঞ্চিটা মুচকি হেসে কাছে ডাকে
চারপাশে ওড়া-উড়ি গঙ্গাফড়িং
বউ কথা কও ডাকে ভেতর-গাঁয়ে কোথাও
ব্যাথাতুর সুরে, সোনালুর ডালে অথবা ডুমুরের
আপিসের একতলার ছাদে কবুতর
কেশচর্চায় মগ্ন, ওষ্ঠ চিরুনি; অদূরে
চড়ুইয়ের সোৎসাহ কিচিরমিচির, দোয়েলের সুখীপ্রাণ শিষ
কাছেই একলা শালিক আনমনে ঘাসফুল খোঁটে
বিষণ্ণতার তীর বিদ্ধ করার আগেই
সঙ্গী উড়ে আসে, সহচর-সহচরী

চারপাশে সবুজের শাসন
ছাদ ফুঁড়ে মাথা তোলে, উঁকি দেয়
মুঠোফোন ইস্পাত, অলস অগ্নিরোধক
ইটভাটার শিশু-শ্রমিকের দল
ছাঁচ কাটে মাটির মণ্ডে, প্রতিদ্বন্দ্বী রোদ্দুর
সময় বেড়ে গেলে সূর্যকোমল খসে পড়ে
খোলা মাঠের পাখি, ছায়ার কাছে পাতে চোখ
নদীর বুকে কচুরিপানার ঝোপ ভাসে
মাঝপথে একটু থামে
প্রজাপতির সাথে জমে ওঠে সখ্যতা
বাঁধন ছিঁড়ে গেলে, মিলনপ্রহর ভুলে
জলের স্রোতে ধোয় পিচ্ছিল পা

শান-বাঁধানো ঘাটের শেতল
বটতলা-বেঞ্চির বেঁকে যাওয়া দোল
গঙ্গাফড়িং, শালিকের জোড়
আর্দ্রগন্ধী বাতাসের ভোর
পেছনে পড়ে থাকে, আগের মতোই
পথিকের রাজহাঁস চলন
ব্যাস্ততার বাবল-পৃষ্ঠটানে গতিময়
অনিচ্ছা-পদভারে শেকলবন্দী নিয়মিত দহন।

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


5 Responses to সূর্যকুসুম

You must be logged in to post a comment Login