সেজান মাহমুদ

হুমায়ূন আহমেদ এর সাক্ষাৎকারঃ কিছু প্রশ্ন, কেন এ বিভ্রান্তি?

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

humayun-ahmed-bangladesh-file-670হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের প্রবাদতূল্য জনপ্রিয় লেখক, একজন সন্মানিত প্রাক্তন শিক্ষক। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁর স্নেহ ও প্রশ্রয় পেয়েছি, আমার আগের বিভিন্ন লেখায় তার উল্লেখও করেছি। কিন্তু গত জুলাই ১৮ তারিখে (২০০৮) দৈনিক সমকালে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়, যাতে তিনি এমন সব মন্তব্য করেছেন যে এটার প্রেক্ষিতে এই লেখাটা লেখা আমার নৈতিক দায়িত্ব মনে করতে বাধ্য হয়েছি। এই লেখার হয়তো প্রয়োজন পড়তো না, যদি তিনি একজন জনপ্রিয় লেখক না হতেন, এবং তাঁর লেখার প্রভাব সাধারণ পাঠকের ওপর ব্যাপক না হতো। এই সাক্ষাৎকারে তিনি সুইডেনে তাঁর ফিল্ম সুটিং নিয়ে কথা বলেছেন, কথা বলেছেন রাজনীতি, বাংলাদেশে বর্তমান সেনানায়কদের ভূমিকা, লেখকের দায়িত্ব, ইত্যকার বিষয়ে; এবং যথারীতি তিনি তাঁর নিজস্ব স্টাইলে অনেকটা হালকা গলায় কথা বলেছেন। এই হালকা-চালে বলতে গিয়ে তাঁর অনেক মন্তব্য রীতিমত বিভ্রান্তির  পর্যায়ে পৌছে গেছে। এখানে তার ওপরই কিছু আলোচনাঃ

প্রথমেই তিনি লেখক হিসেবে তাঁর একমাত্র অঙ্গীকারের কথা বলেছেন, তা হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা সবাই কে জানিয়ে দেয়া। এই জানিয়ে দিতে গিয়ে মৌলবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘তবে আমাদের দেশে এতো মৌলবাদ-মৌলবাদ বলে চিৎকার করে লাভ নেই, কারণ বিশ্বের সব দেশেই এখন এসব আছে, ইন্ডিয়ায় আছে বিজেপি, আমেরিকায় আছে ক্লু, ক্লাক্স ক্লান-সারা পৃথিবীতেই আছে মৌলবাদ।’ সাক্ষাৎকারগ্রাহক অবশ্য উত্তরে খুশী হন নি তা বোঝা যায়, এবং পরের প্রশ্নটি করেন এই আশায় যে উওরে হয়তো পরিবর্তন ঘটতে পারে। কিন্তু এখানে হুমায়ূন আহমেদ আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিটি খোলাসা করেন; ‘জনগণ যদি ভোট দিয়ে মৌলবাদীদের নির্বাচন করে, তাহলে গণতান্ত্রিকভাবে কি তাদের বাদ দেয়া যায়, হোক না তারা মৌলবাদী।’

এর আগেই তিনি বলেছেন লেখকের দায়িত্ব সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করা, সমাধান করা তার দায়িত্ব নয়। খুব ভালো কথা। যখন রাজনৈতিক বিষয়ে লেখক ইঙ্গিত করছেন তখন মৌলবাদ যে একটা সমস্যা তা চিহ্নিত করা কি উচিত ছিল না? কিম্বা লেখক হয়ে তিনি যখন রাজনৈতিক বিষয়ে মতামত দিচ্ছেন (এখানে গণতন্ত্রের কথা বলেছেন) তখন সেই গণতন্ত্রের  ফ্যালাসি কি তার উল্লেখ করাও জরুরি ছিল। তিনি যদিও বলেছেন যে তিনি বাংলাদেশের মৌলবাদকে কোন সমস্যা মনে করেন না। তা না করতেই পারেন। এখানেই বিভ্রান্তির সৃষ্টি, কেন? একটু তাত্ত্বিক দিক থেকে ব্যাপারটার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করি।

তিনি বলেছেন আমেরিকার আছে ক্লু ক্লাক্স ক্লান। ক্লু ক্লাক্স ক্লান একটি মারাত্নক বর্ণবাদী, ধর্মবাদী সংগঠন যা আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পরে ১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এদের কাজ ছিল কালোদের সিভিল রাইট প্রতিহত করা, শাদাদের সুপ্রিমেসি তুলে ধরা, ইমিগ্রান্টদের হত্যা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন ইত্যাদি অমানবিক কাজ। একারণেই এই সংগঠন ১৮৭১ সালেই আমেরিকার ৪২তম কংগ্রেস এবং প্রেসিডেন্ট ইউলিসিস গ্রান্ট নিষিদ্ধ করে দেন। শুধু তাই নয় এদের কে ’টেরোরিস্ট’ সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয় ১৮৬৯ সালে। এরা আবার একত্রিভূক্ত হয়ে শক্তি সঞ্চয় করে ১৯২০ সাল থেকে। কিন্তু বর্তমানে এদের সদস্য সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশী নয়, এবং এদের কার্জক্রমও নেই বললেই চলে। তার বড় কারণ আমেরিকার সাধারণ মানুষ এদেরকে একেবারেই বর্জন করেছে। এখন এই আমেরিকায় ক্লু ক্লাক্স ক্লান দের উপস্থিতি আর ইন্ডিয়ার বিজেপি বা বাংলাদেশের মৌলবাদীদের উত্থান কি এক পাল্লায় তুলনীয়? যে দেশে মানুষ শিক্ষাবঞ্চিত, দরিদ্র ও ভঙ্গুর সে দেশে অনেক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধও অচল ও ক্ষতিকর হতে পারে। খোদ আমেরিকাতেও ক্লু ক্লাক্স ক্লান কে নিষিদ্ধ করতে হয়েছিল তাদের গণতন্ত্রের গোড়ার দিকে। আর বিজেপির উত্থান ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য এখনও কলঙ্ক। হুমায়ূন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমি কোন রাজনীতি বন্ধ করার পক্ষপাতী নই, সারভাইভাল ফর দ্য ফিটেষ্ট।’ খুবই গণতান্ত্রিক কথা। কিন্তু ধর্মভিত্তিক রাজনীতিবিদেরা এই ’ফিটষ্ট’ থাকার জন্য মানুষের ধর্মানুভূতির মতো স্পর্শকাতর বিষয় ব্যবহার করছে যার নৈতিকতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন আছে। তিনি এটাও বলতে পারতেন যে, আধুনিক সমাজবিজ্ঞানী বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সহায়ক মনে করেন না। এতে মানুষের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হয়। তার কারণ, ধর্মবাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ’বাই ডিফলট’ এরা নিজেদের কে শ্রেষ্ঠ মনে করে এবং এটা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের একেবারেই পরিপন্থী। অন্যদিকে একটি মনুষ্য প্রবর্তিত তন্ত্রের যেভাবে সমালোচনা করে উত্তরণ ঘটানো যায় ধর্মতন্ত্রে তা যায় না। সেখানে সমালোচনা করলেই নানান জনের ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে। যুক্তির কাছে ধর্ম একেবারেই নারাজ। তাহলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি কি এক ধরনের এক্সপ্লয়টেশন নয়? একারনেই রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের সমান অধিকার থাকবে, কিন্তু ধর্মকে রাষ্ট্রযন্ত্রের সংগে এক করা যাবে না। গণতন্ত্রের একটি বড় ফ্যালাসি হল, যদি সংখ্যাধিক্য লোক একযোগে বলে যে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে না, তা কিন্তু কখনই সত্যি হয় না। হুমায়ূন আহমেদ নিজে যেহেতু রসায়নবিদ তাই রসায়ন শাস্ত্রের ইতিহাসেরই উদাহরণ দিচ্ছি; অক্সিজেনের আবিস্কারক এবং আধুনিক রসায়নের জনক ল্যাভয়সিয়  কে যখন বেশিরভাগ মানুষ এক সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত করলো এবং গিলোটিনে হত্যা করলো, তা কি গ্রহণযোগ্য ছিল? এটাও তো করা হয়েছিল বলা যায় গণতান্ত্রিক ভাবে (যেহেতু মেজরিটি মানুষ তার মৃত্যুই চেয়েছিল)। আমেরিকায় রাষ্ট্র কোন ধর্মকে আলাদাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে না (যদিও গত আট বছর নিয়ে বিতর্ক হতে পারে), ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকেও নিজেরা অনুমোদন করে না; যদিও এখানে খ্রিশ্চিয়ানদের দাপট এবং উপস্থিতি বেশি (আমি এখানে আমেরিকার সাফাই গাচ্ছি না, শুধু হুমায়ূন আহমেদের তুলনার অসারতা দেখানোর জন্য উদাহণ টানছি)। হুমায়ূন আহমেদ লেখক হিসেবে সমস্যার সমাধান দিতে না পারলে কোন ক্ষতি নেই, কিন্তু এরকম মরাজনৈতিক মন্তব্য করলে নির্ঘাৎ মনে করার কারণ আছে হয় তিনি সজ্ঞানে মৌলবাদ কে জায়েজ করার ব্রত নিয়েছেন, না  হয় অজ্ঞানে মারাত্নক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। আমি আশা করবো এর কোনটাই সত্যি নয়।

হুমায়ূন আহমেদ সবচেয়ে মারাত্নক কথাটি বলেছেন লেখকের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে। প্রশ্নকারী প্রশ্ন করেছেন, ’বাংলাদেশের লেখকেরা কি স্বাধীন?’ উত্তর, ’বাংলাদেশের লেখকেরা স্বাধীন।’

’তাহলে হুমায়ূন আজাদ কে মরতে হলো কেন?’

‘কারণ যে বই টা তিনি লিখেছিলেন, তা এতই কুৎসিত যে, যে কেউ বইটা পড়লে আহত হবে। তারজন্য মৌলবাদী হতে হয় না।‘

বাহ, কি চমৎকার যুক্তি!!  একথার মানে কি তা আমি তাঁর কাছ থেকেই জানতে চাই। এর মানে কি কেউ কুৎসিত বই লিখলে তাকে মরতে হবে? মৌলবাদীরা না মারুক অন্য কেউও মারতে পারে? এর মানে কি লেখকের লেখার স্বাধীনতা আছে বাংলাদেশে, কিন্তু কাউকে আহত করতে পারবেন না? না কি কারো কারো মতো অশিক্ষিত ধর্মভীরু মানুষদের অনুভূতিকে কাজে লাগানোর সব রকম মালমসলা নিয়ে লেখাই একমাত্র স্বাধীনভাবে লেখা? কী এর মানে?

আমি জানি হুমায়ূন আহমেদ একজন বুদ্ধিমান মানুষ। কোন কোন ক্ষেত্রে একটু বেশি বুদ্ধিমান। অতীত থেকে কতগুলো উদাহরণ আজকে টানতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ এই প্রশ্নগুলো আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকে মাঝে মাঝে আহত করে বৈ কি। তাঁর প্রবাদতূল্য জনপ্রিয় নাটক ’কোথাও কেউ নেই’ তে একটি ছোট্ট চরিত্র আছে, মুনার ছোট ভাই। সে বসে বসে পড়ালেখা করছে। সে উচ্চ স্বরে যে কবিতা টি পড়ছে তা হলো,

‘আমরা শক্তি আমরা বল আমরা ছাত্রদল।’

বাংলাদেশের কে না জানে এটা তখনকার ক্ষমতাসীন বি এন পি’র ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ’জাতীয় সঙ্গীত’? পাঠ্য বইতে আর কোন কবিতা কি ছিল না? কিংম্বা তাঁর ’জোৎস্না ও জননীর গল্প’ উপন্যাসে পৃষ্ঠা ১৮২-৮৩ তে বলা হচ্ছে ২৭ শে মার্চ শনিবার রাত আটটায় মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা কথা। এখানে ফুটনোটে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তির ফিরিস্তি দিয়েছেন যা এই বিভ্রান্তি্কে আরও জোরালো করেছে। কিন্তু তিনি বলেছেন যে সত্যের জন্যেই সবকিছু। তাহলে এখানে কি কোন স্বচ্ছ মন্তব্য তিনি করতে পারতেন না, সত্যের খাতিরে? যেমন এখানে বলা যায় যে, যুক্তির খাতিরে ধরে নিই একমাত্র জিয়াউর রহমান-ই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, আবদুল হান্নান নন, আর কেউ নন। কিম্বা আবদুল হান্নান ঘোষণা করলেও মানুষ শুধুমাত্র জিয়াউর রহমানের ঘোষণাতেই বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছে। কিন্তু আমরা এটাও জানি জিয়াউর রহমান ’শেখ মুজিবের পক্ষে’ ঘোষণা দিয়েছিলেন। আগের যুগে রাজা বাদশাহেরা তাদের ঢোলশহরত দিতেন এভাবে, ‘ঢোল ঢোল ঢোল, কিসের ঢোল? রাজা এলান করেছেন ………..‘ এই যে ঢোলক বললেন রাজার হয়ে, সেই ঢোলক কি রাজার সমতূল্য? আমি এখানে কোনভাবেই জিয়াউর রহমান কে খাটো করছি না বা আবমূল্যায়ন করছি না। বলতে চাচ্ছি যে রাজনীতিদিরা এই ঘোষণা নিয়ে ধুম্রজাল তৈরি করেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। লেখক হিসেবে হূমায়ূন আহমেদের কাছে এটা কি পরিস্কার নয়? আজ থেকে আরও পঞ্চাশ বছর পর একজন নতুন পাঠক যখন পড়বে এই বই তখন কী ধরণা করবে সে এই বিভ্রান্তি থেকে? সত্যের খাতিরে সত্যের দিকে ইঙ্গিত থাকাটাই কি শ্রেয়তর ছিল না?

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম  সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন যে ’ওনাকে দেশদ্রোহী কখনোই বলা হয় নি। ’ আমাদের জানা মতে ভুরিভুরি পত্রিকার পাতা আর খবর আছে যেখানে তাঁর সম্পর্ক কুৎসিত মনতব্য দেখতে পাওয়া যায় তদকালীন শাসকগোষ্ঠী বা তাদের সমর্থকদের মুখ থেকে যার মধ্য ’দেশদ্রোহী’ বহুল ব্যবহূত শব্দ।  নারীর সম অধিকার প্রসঙ্গে তিনি যখন বলেন, ’এটা বাংলাদেশের সবাই করে’, তারপর বলেন, ’ তার (স্ত্রীর) মতামতের যথেষ্ঠ গুরুত্ব আমি দেই’। অথার্ৎ বাংলাদেশের সব মানুষই স্ত্রীর মতামতের গুরুত্ব দেন সুতরাং বাংলাদেশে নারীর সম অধিকার আছে, বা বাংলাদেশের অফিস আদালতে মেয়েদের দেখতে পাওয়া যায়, সুতরাং বাংলাদেশের নারীদের সমান অধিকার আছে, তখন সত্যি অবাক হতে হয়, নারী অধিকার মানে কি শুধু এই? বাংলাদেশের যারা নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছেন, তাদের নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে না, চল যাই ঘরে ফিরে যাই, আমাদের সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে!

এই সাক্ষাৎকারে যে হুমায়ূন আহমেদ উন্মোচিত হয়েছেন তা রীতিমত ভীতিকর। তাঁর কাছে পবিত্র কোরান হতে পারে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। খুবই ভালো কথা, তা হতেই পারে। কিন্তু অন্য কোন লেখকের বা অন্য কারো কাছে তা নাও হতে পারে। তাঁর বিশ্বাস তাঁর একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু প্রশ্ন জাগে কেউ যদি কোরানের বিরুদ্ধে বা বিপক্ষে লেখেন এবং তা কাউকে আহত করে বা সেই লেখা কে কুৎসিত মনে হয় তবে লেখক কে হত্যা করলে স্বাধীনতার ক্ষুন্নি হয় না? তিনি যখন মতামত দেন যে একটি কুৎসিত (তাঁর ভাষায়) বই লেখার কারণে হুমায়ূন আজাদ কে মরতে হয়েছে, এবং তা লেখকের স্বাধীনতার পরিপন্থী কিছু নয়, তখন তা অশিক্ষিত মানুষের বিভ্রান্তির চেয়েও ক্ষতিকর। একজন সত্যিকারের লেখক অনেক কিছুই প্রথার বাইরে গিয়ে লিখবেন, ভাববেন, তাতে কেউ আহতও হতে পারেন। তাই কি তাঁর হত্যাকে যুক্তিগ্রাহ্য করে? তাছাড়া কী কুৎসিত আর কী কুৎসিত নয় তাও কিন্তু নির্ভর করে যিনি পাঠক তার মেধা-মনন-জীবনবোধ- এবং উন্নত রুচির ওপরে। কোন উন্নত পাঠকের কাছে অন্য কারো মননহীন, ষাট পাতার চটি জাতীয় উপন্যাসকেও কুৎসিত মনে হতে পারে। তা কি সেই পাঠককে লেখকে হত্যার অধিকার দেয়?

আমি আশা করি তাঁর কথা যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, বা যে অর্থ প্রতিভাত হয়েছে তা তাঁর সত্যিকার মনের স্বরূপ না। আর মৌলবাদকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার পক্ষে তাঁর কথাগুলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক পরিকল্পণার ’প্রিলিউড’ নয়। আমার এই ধারণাই যেন সত্যি হয়! আগুণে যার ঘর পুড়েছে, সিঁদুর-রাঙা মেঘ দেখে তার ভয়!!

জুলাই, ২৩, ২০০৮

ইউ, এস, এ

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


One Response to হুমায়ূন আহমেদ এর সাক্ষাৎকারঃ কিছু প্রশ্ন, কেন এ বিভ্রান্তি?

You must be logged in to post a comment Login