এক পা কাটা– তিন পাঅলার আষাঢ়ে গপ্প
লিমন নামের এই ছেলেটির জন্মের আগে থেকেই এক পা কাটা ছিল। তার বাবারও পা কাটা। মায়েরও তাই। এই ব্যান্ডেজটি ভুয়া। খুলে দেখতে পারেন।
লিমনের দাদাজানের পা কাটা ছিল। নানাজানেরও তাই। এরা বংশগতভাবেই এক পা-কাটা। চণ্ডাশোকের আমলের কলিঙ্গ যুদ্ধের আগে থেকেও লিমনের চৌদ্দপুরুষের পা কাটা ছিল। অশোক স্তম্ভে সেরকম সাক্ষ্য আছে। বিভারেজ সাহেবের বাকেরগঞ্জের ইতিহাস বইয়ের ৪২ সংখ্যক পৃষ্ঠায় এই পা-কাটাদের কাহিনী পাওয়া যায়। ফিল্ড মার্শাল আয়ূব খানও এরকম ভাষ্যের ইঙ্গিত করেছেন তার ফ্রেন্ড, নট মাস্টার নামক আত্মজীবনীতে। পশতু ভাষায়ও এই বইটি ছাপা হয়েছিল। লিমনের পা কাটার কারণ হিসাবে শুধু শুধু র্যাবের নামে দোষ দেওয়া হচ্ছে। আষাঢ়ে গপ্প ফাঁদা হচ্ছে। যাদের পা-ই নেই–তাদের পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করা যায় কিভাবে? র্যাব ওদিন ঝালকাঠিতে ছিলই না। মিঠেকাঠিতে তখন র্যাব একটি বৃদ্ধআশ্রমে উদ্দিপনামূলক নাটক মঞ্চায়নে ব্যস্ত ছিল। পাকা অভিনেতা ছাড়া র্যাবে নিয়োগ দেওয়া হয় না। র্যাব অভিনীত এই নাটকের ভিডিও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করবেন বলে পুলিশের আইজি আশা করছেন। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুভি ভালবাসেন। প্রধানমন্ত্রীর দেখার পরেই ইউটিউবেও খুব শিঘ্রই ভিডিওটি দেওয়া হবে।
কষ্ট করে তদন্ত রিপোর্ট লেখার জন্য ধন্যবাদ বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শ. আকবরকে। তিনি আরেকটি তথ্য লিখেছেন সাদা কালিতে যে, লিমন নামে কেউ ঝালকাঠিতে কোনোকালেই ছিল না। আর ঝালকাঠিতে সাতুরিয়া নামে কোনো গ্রামই নেই। যে গ্রামটিই নেই–সে গ্রামে র্যাব সন্ত্রাসী ধরতে যাবে কেন? লিমন নামে ঝালকাঠিতে/মিঠাকাঠিতে/ তিতাকাঠিতে কোনো মানুষ কিংবা ভূতপ্রেতও নেই– সন্ত্রাসী সন্দেহে সেই গায়েবী লিমনের পায়ে র্যাব গুলি করতে পারে না। এটা জলের মত সত্য। এই অসাধারণ সৃজনশীল তদন্ত রিপোর্টের কারণে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শ. আকবরকে হাভাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট দেওয়া হবে এবং অচিরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদায় কপি রাইটার পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। তালিয়া বাজান ভাইসগোল।
ফাঁকে প্রশ্ন হল–যাদের পা কাটা থাকে তারা কি সুস্থ স্বাভাবিক কেউ? অসম্ভব। তারা সন্ত্রাসী। তাদের ভাই ভইনরাও সন্ত্রাসী। তারা সন্ত্রাসী পরিবার। সন্ত্রাসীদের দুটো পা থাকে না। তারা এক পায়ী। এটা ট্রেড মার্ক। এসব মাননীয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন ভাল করে। সারা জীবন তিনি এই সন্ত্রাসীদের পক্ষে-বিপক্ষে ওকলাতি করতে করতেই পার করেছেন। বিয়ে করার সময় পর্যন্ত পাননি। জাতির জন্য এটা একটা মহান আত্মত্যাগ বটে। এই উপলক্ষ্যে তাঁকে একটা নো-বেল দেওয়া হোক। এই নো-বেলের প্রতি রাষ্ট্রীয় সমর্থন থাকবে। নো চিন্তা। ১০০% গ্যারান্টি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক ভাগ্নে না ভাতিজা ঠিক ঠাওর করতে পারছি না, সঙ-বাদপত্রে পড়েছিলাম কদিন আগে, সন্ত্রাসবান্ধব আইনকে শ্রদ্ধা দেখিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল। তার পায়ে আরেকটি পা লাগানো হয়েছে। তার এখন তিন পা। দুপায়ে সন্ত্রাস করতে ছেলেটির সুবিধা কম হয়। এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ে সন্ত্রাসীদেরকে আর কে ভালভাবে চিনতে পারে, বলেন ভাইসগোল?
……………………………………………………………………………………………………………..
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : রাষ্ট্র সন্ত্রাসীদেরকে সমর্থন করতে পারে না। তাহলে রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র থাকে না।
নোট: আসেন, এই উপলক্ষ্য একটা বিড়ি খাই।






সেরা বাংলা ব্লগ পুরস্কার পেলো -শৈলী














6 Responses to এক পা কাটা– তিন পাঅলার আষাঢ়ে গপ্প
You must be logged in to post a comment Login