শৈলী

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর
Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

“শিশির আজম”

– ক্রুশ, তুমি তো জগতের অনেকগুলো প্রজাপতিকে বাঁচানোর ক্ষমতা দেখিয়েছ।

– যারা পুণ্যিপর্বতে অধিগমনের প্রত্যাশা ছাড়াই রক্তমাখা পেরেকে কবিতা লিখেছিল।

– আর সেই বন্ধ দরজা যার বিরুদ্ধে প্রকৃতি ক্রমাগত অভিযোগ জানিয়ে আসছিল?

– হয়তো সে প্রাচুর্যময় সমুদ্রে তার অশ্রুকে হাতড়িয়ে খোঁজে।

– আর যারা পশুর বিক্ষিপ্ত হাড়ে অপরিসর গুহাগাত্র কুঁদে চলেছে?

– ঐ একটিমাত্র বীজের যন্ত্রণায় জগতের নিদ্রাজাগরণ।

না

তুমি পারনা কৌতুক করতে

তুমি পারনা মুঘল রাজপুত্রের মতো উপভোগ করতে

পিতৃহত্যার উপকারিতা

নিরুদ্বেগ জগতে ঘাড় মটকে পড়ে থাকা

মুখ ভেঙচানি

একাকী ধাঁধা খেলা

এইসব

এরকম

আজ

তোমার সঙ্গে একদম খাপ খায়না

মিশরীয় পুরোহিতদের মধ্যে তুমিইতো দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলে-

জীবীত ও মৃতের মাঝখানে তোমার উপস্থিতি কীরকম বিশ্বাসযোগ্য,

যুক্তি

 সাহস

 হৃৎপিন্ডের কারুকাজ

সময় ও স্থানবিশেষে

 প্রতিটি

 একে অন্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে

তোমার সাধ্য ছিলনা

 ওদের অবহেলা করার

 বিপথগামী করার

যা আমার থেকে, আমাদের থেকে

দেয়নি

তোমাকে আলাদা হতে, বেশি কিছু হতে;

তাহলে প্রতারণা ফের কীভাবে ডানা ফিরে পায়

ভবিষ্যতের যাবতীয় রোমকূপ কত বাধ্য- মৃত্তিকাজাত রোঁয়া নাকি খাড়া হয়ে উঠতো-

এদিকে তাকাতে ভুলে গেছে

 প্রাণপ্রিয় পশুদেবতা

ফ্যাশান সম্মত বুলডোজার সবার শুভেচ্ছা কামনা করে

 নিজস্ব ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে অক্ষত রেখে

আর পোশা কুকুর

 তল্পিবাহক

 সামান্য উচ্ছিষ্ট পেয়ে খুশি-

ইঁদুরের গর্ত হতে উঠে এসে 

 তোমাকে মারে

বহু যুগের সোনালী মগজ

আর দুশো বছরের পরজীবি বিষ

 ওদের রক্তে

ঘাসে মুখ থুবড়ে থাকা মাছি এমন কোন সম্ভাবনা নেই যে পেতে পারে

 মাটিতে পুঁতে রাখা

 বনভ্রমণের স্বাদ:

(হ্যাঁ একটা ব্যাপার সবার কাছে নিশ্চিৎ হয়ে গিয়েছিল-

তোমার পা বিমান বন্দরের মাটি স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে

পরিবর্তিত হল বায়ুর গতিমুখ

ভুল-শুদ্ধ একাকার

গিরগিটি কিভাবে তার রং পাল্টায়

তার মহরৎ

আহ্

অন্যায়ের মতো মহত্ম)

সুন্দরবন ছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আস্তানা

আর সুন্দরবন সম্পূর্ণ বাংলা জুড়েই

সবুজ ও লালের চিত্রকল্পে

 ভিন প্রজাতির চলাফেরা

তোমার মৃতদেহ

ঠিকমতো গায়েব করা যাচ্ছিল না

সবুজের ভিতর সবুজ গ্রামগুলোতে উড়ে যাচ্ছিল ধুলোমলিন হাওয়া

হাওয়ায় কাকের বিচ্ছিন্ন পালক

আগুনের সে এক নির্জনতা

 অন্ধকার সিঁড়ি

 মহাশূন্যের আঘাতে

 অজানা জড়জগৎ …

ঝুঁকে পড়া পর্বতশ্রেণীতে স্তব্ধ বাদুড়েরা আশ্রয় খুঁজে চলেছে

হ্যা বাদুড়েরা বেঁচে আছে

গঙ্গাফড়িং বেঁচে আছে

কে পাবে অতৃপ্ত রাজহাঁসের ডানা

নির্বাসিত স্বদেশের দিকে অন্ধকার চোখ বিচ্ছেদের ফাঁকা জায়গাগুলোতে

যেন হয়ে উঠবে হিংস্র

জিজ্ঞেস করোনা ঘুঘুপাখিদের আপন জগতের কথা

প্রতিটি ছোলার দানায় ক্ষুব্ধ রোদ

উষ্ণ হলুদ ক্ষেত ফিরে গিয়েছিল শুরুতে

  যেখানে বিরাট বিরাট পাথর সে আটকে দিয়েছিল

উজ্জ্বল শয়তানগুলোর বন্ধুত্ব দেখিয়েছিল এমন অতিসাধারণ পথ

 যা পবিত্র খাদ্যশস্যের সঙ্গে বেঈমানী করতে অক্ষম

ক্ষমতাধর মূর্তিগুলোর জন্য অবিশ্বাস শুরু হয়েছিল আগেই

নালন্দার রূপালী চামচ চলে এসেছে কারো কারো হাতে

যা হারিয়ে গিয়েছিল

সংগীত ও প্রকৃতির মোহ

আর ভূমিদখল

অক্ষত যমুনায় পরাজিত বাঙালি ও অলৌকিক ইস্টিমার

মাদকগ্রস্তের মতো সবুজ গ্রামগুলো ডানা ঝাপ্টাচ্ছিল

দুর্লভ অতীত তরঙ্গের পর তরঙ্গ

আমাদের চোখের দিকে তাকায়

পরীক্ষা নেয়

আমরা কোথাও ঠেকছি কি না বা জরুরী বিষয় কী আছে

রবীন্দ্রনাথের গ্রাম ও বাগান যেন গররাজি পুরোপুরি ক্যামেরার পেছনে যেতে

গ্রন্থ থেকে মুখ তুলে পেঁচা হাসছিল

কত কিছুই তো অনুমান করা হয় যদি ইতিহাসের উলঙ্গ পাতাগুলো জেদী

নিশ্চয় প্রত্নতাত্ত্বিকদের গলদঘর্ম হতে হবেনা

যারা চর্যাপদ পড়েনি বলা যাবেনা তারা পাপী

রূপালী শেয়াল রাতে কাঁথা শুঁকে যায় আর পরপরই শুরু হয় অরণ্যের শাখাপ্রশাখায় আগুন

আর বিমূর্ততা থেকে বর্ণমালা

আদিবাসী উপত্যকার নাচ গুমোট আকাশে অমলিন

 ইতিহাসের মারপ্যাঁচ

কিস্তি মাফিক নশ্বর পাচীলগুলো টেনেহিচড়ে পার হতে

ওরা শিখেছে

 কীভাবে যুক্তি থেকে আবেগকে ছেটে ফেলতে হয়

 যুক্তিকে

 আবেগকে

 বলি দিতে হয়

 দাঁড়িয়ে যায় নতুন ও অকাট্য যুক্তি –

আর এসবের খেল ঠাউরানো যথার্থ খেলোয়াড়েরই কম্ম

 ফুঃ

দরকার ছিল তোমার মগজের বাম পাশটা খালি থাকা

 না, সেখানে সবুজ

 শ্রীচৈতন্য

 খুঁড়ে চলছেন রূপান্তরের পথ

ধানমন্ডি, ৩২ নম্বর নির্জন আগ্নেয়গিরি

 আর গাঁয়ের চাষীর উঠোন

ভালবাসা আর আকাংখা

 একাকার – ফৌজি ভবনের রস ও বায়ুচর্চার জগতের বাইরে:

দক্ষিণ ভারতের চাষীসমবায়ীদের মধ্যে তুমি আর সম্রাট অশোক এসব ব্যাপারে কথাবার্তা বলেছ

সবুজ গ্রীষ্মকাল বরাবর যাওয়া-আসা করেছে কিন্তু হারিয়ে যায়নি

তার গভীরতার ভিতর সুকান্ত ভট্টাচার্যের আক্রান্ত ফুসফুস

 জালালাবাদ পাহাড়ের বিস্তৃত উপত্যকা

নিভিয়ে দেওয়া আলোয় স্বপ্নেরা কানামাছি খেলতে শুরু করে

বাতাস এতো গভীর কীভাবে হয়

এই ভাবনা থেকেই তৈরী হয় শূন্যতার চক্র

শূন্যতার চক্রে আত্মাহুতি দেয় ২৫০০০ মূর্খ কৃষক

 আর তাদের অন্ধত্বের জন্য দায়ী কয়েকটি কোকিল

এসবের গোড়ায় কে,

 আমরা

এখন মাজেজা দেখায় কে,

 আমরা

আমাদের মধ্যে রয়েছে ১৭৭৬ বঙ্গাব্দ

আমাদের  মধ্যে রয়েছে জয়নুল আবেদিনের কাক ও মানুষ

আমাদের ডাকছে কামরুলের তিন রমনী, কিন্তু তাদের তো ডানা নেই যে

 দুর্গ-দেয়ালের বাইরে আমাদের বের করে আনবে

মাছিদের সঙ্গে খেলছে আহ্লাদি কুকুর

 আমাদের অদৃষ্ট

 আমাদের আত্মআস্বাদন

 আমাদের অসময়ের বাষ্পায়িত ভ্রমণ

 বিপরীত পৃথিবীতে নেতিবাচক আকাক্সক্ষার জন্মদাতা

বিষয়টির শিকড় জনপ্রিয় মাকড়শা বহন করছিল

কেউ জানতো না কবিতা কী

কেন বধির মেয়েটা ধনেপাতার চপ ভালো বানায়

হেঁসেলঘরের কুলুঙ্গিতে সময় খেলছিল হিংস্র বিড়ালের সঙ্গে

কেউ মুখ ফুটে বলেনি, প্রবাল প্রাচীর সবুজ নিরবতার প্রতিধ্বনিতে উদ্বিঘ্ন –

কেউ মুখ ফুটে বলেনি, মাটির ময়না কথা বলছে

শেষ না করতে পারা মোড়ানো চিঠির কাগজ আদৌ পারেনি দুশ্চিন্তামুক্ত হতে

 পিচের রাস্তায় তার ছবি

মেয়েটি ভেবেছিল জগৎ রাজহাঁস

রাজহাঁসের গ্রীবা সোজা উঠে গেছে চাঁদে

একটি ছাইরঙ দরজা হেঁটে এলাচের গ্রামের দিকে

সেখানে বিশাল বিশাল সব খাঁদ

মুঠো মুঠো গোলাপী সূর্যকে 

শুইয়ে দিচ্ছে নকশী কাঁথার মাঠে

আর তখনই শুরু হলো গুরুজনদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া ভারতবর্ষের

গর্ভযণন্ত্রণা 

অন্ধকারের সেই সাপ যে আলিঙ্গন করেছিল বাদ্যযন্ত্র

আর তার চোখের আগুন

জ্বলছিল ধানের ক্ষেতে

আলখাল্লা ফেলে যেন কোন স্বপ্নের আবির্ভাব ঘটবে

ঘোড়ার খুরের গর্ত

   কোন বিশ্বাসঘাতকতা না

বঙ্গোপসাগরের প্রাচীন ঘুর্ণাবর্ত

 জড়িয়ে ধরেছিল লালনের একতারার গ্রীবা

সুমহান নগ্নতা

 তরঙ্গ ও ফেলে আসা নগরের অভীলাষ:

এই প্রেক্ষাপট আর পুঁজিবাদ

 ভিন্ন

ঘেয়ো নেড়িকুত্তার সাথে আমাদের গাভীটার চেতনার পারষ্পরিক লেনদেন সূচিত হয়েছে

সময়ের দাবী আমাদের মানতে হবে

কে দেখছে অন্ধকার উপত্যকায় সূর্যের প্রসববেদনা

নন্দনকাননের পচন থেকে সরবরাহ হবে শিশুদের জন্য পাস্তুরিত দুধ

কলাবিদ্যালয়ের বায়ুসমগ্রকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে

যেন কবরখানা থেকে উঠে আসা ফুলের গন্ধ দিগি¦দিক ছড়িয়ে না পড়ে

যেন দেশদ্রোহীর অস্থি রোদে না দাঁড়ায়

বিচিত্র সব প্রাণী, কিন্তু স্বর অভিন্ন, ঘোঁতঘোঁত

তাদেরকে কেউই কিছু জিগ্যেস করেনা

অবশ্য তাদের পছন্দ-অপছন্দ আছে

এভাবে টব সমেত ফুলের গাছ কেনা হয়

যে কোন মূল্যে আয়ত্বে রাখা হয়

 বিষ্ফোরিত বোমার অবশিষ্ট

মৃত ফুলের তেজ

অতীতের নিরীহ প্রাণীদের বিষয়ে কাগজ-কলম খরচা হয়েছে

এটা শতভাগ নিশ্চিৎ যে কোন প্রতিষ্ঠানের এক্ষেত্রে বিফল হবার সম্ভাবনা নেই

তা সময় যা-ই লাগুক

মুরগীগুলোকে খাঁচায় ভরতে হবে

কেননা তা ডিম দেবেই (যদি সেগুলো সত্যি সত্যি মুরগী হয়)

এ ব্যাপারে সামরিক কর্মকর্তাগণ ওয়াকিবহাল আছেন

আর ধর্মপুরুষের লেজ থাকে তার ভেতরে

 ফলে বাইরে থেকে দেখা যায় না

(এই ফাঁকে, ছকটা মিলিয়ে নেয়া যাক,

 পুঁজি

 লক্ষ্য মুনাফা

 মুনাফা

 লক্ষ্য আরও মুনাফা

 ষাড়

 নিজেই সীমানা)

পুঁজির পাহাড় থেকে সা¤্রাজ্যবাদ

 সুনিয়ন্ত্রিত

 সুশৃংখল

 পাইপলাইন হতে পারে চিলি বা ইরাক অব্দি বা …

পাইপলাইন বিস্তারে

 পাইপলাইনে পর্যাপ্ত পুষ্টি জোগানে বাঁধা পেলে

রীতি আছে

 তাৎক্ষণিকভাবে সামগ্রীক ব্যবস্থাটাই গিলে খাবার

 (ইনকা, মায়া বা মেসোপটেমিয়া

  যেন ষড়যন্ত্রের গন্ধ!)

মৃত্তিকাফলক থেকে ধোঁয়া বের হয়ে আসছে

বায়ুতে ভর করে বায়ু কামড়াতে কামড়াতে উড়ে আসছে পোস্টকার্ড

আমাদের সারা শরীরে পচাঁ-কাটা ঘা, আমরা কি নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারি

ফেরিঘাটের কুলিদের জিজ্ঞেস কর, অবসরে বসে বসে হাই তোলে কিন্তু পকেটে থাকে ছুরি

আমরা যদি আমাদের কঙ্কালগুলোর কাছে ফিরতে চাই তা হবে অনুচিৎ

গাছের ডালে বুনো ফুলের মতো ফুটে থাকে পাখির বাসা

কেন আমরা সেখানে যাব

সমুদ্রের একেকটা ঢেউয়ের সঙ্গে হাজারে হাজারে উঠে আসছে লাল কাঁকড়া

কেন তাদের সঙ্গে খুনসুটি করতে হবে

ঠিক আছে, অক্সিজেন প্রয়োজনীয় জিনিস

  বেঁচে থাকতে অক্সিজেনের দরকার হয়

বড়দের পুতুল খেলার ফাঁকে বাতাসের সঙ্গে মিশে অক্সিজেন টেনে নিতে হয়

 এ-রীতিই দেখে আসছি

গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আবার অক্সিজেনকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়

মসলাপাতি মিশিয়ে তা পরিবেশন করা হয় উৎসবের ভঙ্গিতে

যদিও বদহজমের শংকা থাকেই 

এজন্য বাংলা নববর্ষ ঢুকে পড়ে জখম হৃৎপিন্ডে

আগুনের আঁচে উঠে আসে শীতের পিঠাপুলি

চাষীর মেয়েদের সঙ্গে হঠাৎ হঠাৎ গোল্লাছুট খেলতে লেগে যায় আনা ফ্রাংক

চাষীরা পড়তে পারেনা কিন্তু তাদেরই লেখা কমুনিস্ট ইসতেহার

  ক্ষেতখামারগুলোতে আগুন লাগিয়েছে

সমকামী ফড়িঙের তলোয়ারে কার কার মুন্ডু খসে পড়েছে

 তার তালিকা তৈরী হওয়া দরকার

এরপর অনুতপ্ত কাকের সঙ্গে আমাদের কথা হবে

প্রকৃতির ডিম ফোটানোর মুহূর্তকে স্মৃতিতে ধরে

 অদৃশ্য রেখা বরাবর আমাদের এগিয়ে যাবার কথা

ভয়ংকর রাস্তাগুলোর জীবনে কিন্তু দ্বিমুখী আচরণ

টেবিলের পাট উল্টে ফেলে পায়াগুলো

 উর্দ্ধমুখী হয়ে দাঁড়ায়

এতে পেঁচাদের সঙ্গে কথাবার্তায় সুবিধে

গাঁদার বাগানে আগ্নেয়গিরিও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্ব শেষ হয়েছে বলে নিশ্চিৎ হয়

শুনেছি তরুলতার রস পবিত্র কাজগুলোর সহায়ক হয়েছিল

হ্যা, সেই কাজগুলোর সারাংশ পাওয়া যায়নি

তারপর কি হল, ছুটন্ত নক্ষত্রমন্ডলীতে আমরা আচ্ছন্ন,

 অনুজ্জ্বল রূপকথার লেজ

অদ্ভুত যোগাযোগ

 সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্যবাদ

 একই বোতলে

তৃতীয় দুনিয়ায় ড্যানিশ গুড়ো দুধ

 আর মার্কিন অস্ত্র কোম্পানির যৌথ সেবাকর্ম;

অবাক হয়োনা

 মিলিয়ে দেখ –

 আমেরিকা… চিন

 চিন… পাকিস্তান

 নিক্সন… চৌ এন লাই

 চৌ এন লাই… ইয়াহিয়া

পাকিস্তান জন্মই নিয়েছে খন্ডিত মাথা নিয়ে

সেই খন্ডিত মাথার বড় একটা অংশকে পাওয়া যাবে 

 হোয়াইট হাউজের দরজায়

 (-ইয়াহিয়া একটা কুত্তার বাচ্চা, কিন্তু হেনরি, ওটা তো আমাদেরই!)

ফলে

 তোমার হাত ধরে

 যখন একটি ভূখন্ড পরিণতি পেল স্বাধীন সত্তায়

তা ছিল রীতিবিরুদ্ধ

 আর ডাইনিদের তোয়াক্কা না করা:

তুমি কি ভেবেছিলে

 ক্ষমা অত সোজা, মানবিকতা আর নিষ্ঠুরতা পরস্পরবিরোধী,

না কি বিজাতীয় রক্তে

 পাকস্থলি ভর্তি না করা অব্দি

 উঠতে চায়না তৃপ্তিকর ঢেকুর –

অবশ্য

 সবতাতেই দশমিক বিন্দু

 মাথা গোলমাল করে দেয়,

আর ঐ বিন্দুগুলো কোথায় কোথায় বসলে

 সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়,

 যদি মনে না হয়

 তা মনে হওয়ানোর যোগাড়-যন্তরের জন্যও

 দরকার হয়

 দশমিক বিন্দু,

কার্তুজ ও বোমা সব মুসকিল আসানের নিয়ামক হবে

 এমন আশা করা বোকামী

তাছাড়া আটলান্টিকের ওপারের স্টুডিও হতে

ছবি প্রিন্ট হয়ে আসে

ছবিটা সার্বিকভাবে

১০০% নিখুঁত

ও সৃজনশীল

 এ বিশ্বাস করতেই হবে

কেননা কাঁচের দুর্গের মধ্যে গটগট করে ঢোকা

গটগট করে বেরিয়ে যাওয়া

এই প্রতিধ্বনি

 কানে বাজে – সুন্দরী মহিলাটি সব বলতে গিয়েও বলা শেষ করতে না পেরে

 ধবধবে বিছানায় চিৎ হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে,

আদূরে পেট্রোল পাম্প, ইউনিফর্মের সঙ্গে তার বোঝাপড়া সামঞ্জস্যপূর্ণ ধরা যায়

টেবিলে শুকিয়ে আসা গোলাপে অনভ্যস্ত ভয়

দেয়ালের মানচিত্রে দাগানো জায়গাগুলো অভোগ্য বস্তুসমূহের মতো বিস্বাদ

কি অদ্ভুত নিয়ম, গোলাপ ও গোলাপের কাঁটা

 পরস্পর প্রতিশ্রুতিশীল

দাবার বোর্ডে ব্যবহৃত খেলার সামগ্রীগুলো দ্বিমুখী আচরণ করতে পারে

হ্যা, নিয়তির বীজ

 কিন্তু একে যে কেবল প্রস্তুত করা যায়

 এটা অর্ধেক সত্যি

বাকি সত্যি হল 

 এ নিজে নিজে হয়ে ওঠে:

এখন, পূর্ব ধারণামতোই, যার যার দস্তানায় হাত ঢেকে নিতে হবে

আর

প্রয়োজনীয় সব কাহিনীর স্তূপ:

 ‘ইসলাম বনাম কমিউনিজম

 কমিউনিজম বনাম ক্যাপিটালিজম

 ব্যাক্তি স্বাধীনতা বনাম রুশ

 রুশ… ভারত

 ভারত… বাংলাদেশ

 বাংলাদেশ… ভিয়েতনাম

 ভিয়েতনাম… কিউবা

কিউবায় নির্যাতনের বীজ বপনকারী ফিদেল

 গণতন্ত্রের শত্রু

 মার্কিনের শত্রু’

হ্যা, এ-তো দেখাই যায়, থুথু ও রক্তের মিশেল ধমনিতে কেমন টগবগ করছে – 

পাকিস্তানের নির্জন কারাকুঠুরিতে বসে

যখন তুমি স্বাধীন এক মাতৃভূমির স্বপ্ন বুনছিলে

তখনও যা

 এখনও তা

কালো টাকা

 সাদাকালো মিশানো টাকা

অবাধ প্রবাহ

পবিত্র জগতে তলিয়ে যাচ্ছে অবচেতন নড়াচড়া ও আতংক

ব্যাক্তিস্বাধীনতা

রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র সত্তা

 অক্ষত যোনিতে নিরাপদ

মেয়েদের গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকা আর মোড়ের বৃদ্ধা দোকানীর ফুচকা

আর Fashon Tv-র ৩৫০০০০০০ রোমাঞ্চ

আর কবিতা রাষ্ট্রীয় সিন্দুকের ক্ষেত্রফলের সমান;

মুজিব,

তোমার ধর্তব্যে এসব ছিলনা

(ক্রীতদাসের বিচক্ষণতার কাছে কাল-উপাদান নিষ্প্রভ)

তোমার সাদাসিদে মগজের কোষগুলো

আস্ত বেআক্কেল

বুঝতে চায়নি

সবুজ ও সা¤্রাজ্যবাদ দুটো বিপরীত মেরুমানতে হবে ইকোসিস্টেমের অনিবার্যতা

এভাবে

 নকশাটা দাঁড়িয়ে যায়:

 লাহোর… ঢাকা

 ওয়াশিংটন… লাহোর

 লাহোর… পিকিং

 (সমীকরণটা কি অচেনা মনে হয়?)

ম্যাজিকের মতোই এগোয়

আফ্রিকায়

মধ্য আমেরিকায় (ব্যানানা রিপাবলিকস্!)

একই

 বা সামান্য হেরফেরে

 যা হয়েছে আর কি

মাকড়শার উড়ালজালের ভিতর আমাদের অসম্পূর্ণ প্রতিধ্বনি আমরা টের পাইনে

এসবের পর, অভিযোগের অভাব হবে, এমনটা হতেই পারেনা –

‘গণতন্ত্রের টুটিচাপা’

 ‘গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ’

 ‘মানবাধিকারের বিপর্যয়’

জিগ্যেস করার আগেই সুবিশাল গবেষণাকর্ম ঝাঁপিয়ে পড়েছে উন্নয়নখাতে –

হ্যা, এসবের প্রাচূর্যে

 এদ্দিনে

 আমাদের হাবুডুবু খাবার জোগাড়

আমরা দেখি সুদর্শন প্রাণীরা বিবিধ বৈপ্লবিক প্রকল্পে ধাবিত

সরল গবেষণাপত্রে পৃথিবীর উপরিতলের কষ

 যার বিক্রয়মূল্য বৃদ্ধি পায় জ্যামিতিক হারে

আর অতিসাধারণ পানাপুকুর ফ্যাকাশে হয়ে আসে

কে সুখী, এই প্রশ্ন করার পর

 ঘুমের জন্য মধ্যবিত্ত শয়তানেরা চোখ কচলায়

নগরে কৃষ্ণের বাঁশী

 গ্রাম হা করে শোনে, তিনরঙা প্রাপ্তীর আদেশে,

উঠোনে বরফের চাঁদ

 গা ঘসে মৃতের চামড়ায়

গিয়েছি আমরা ঐ তেপান্তরের দেশে 

 বলা যায় নারীদের প্রতি ফেরেশতাদের তেমন অনীহা দেখা যায়নি

অন্ধ নক্ষত্র অপেক্ষায় থাকে

স্বাস্থ্যবতী গাভীর

 গরম বায়ুতে মিশে যায়

গাঁয়ের মানুষ দেখেছে কতবার জামপাতায় আধঘুম নীলপরী

 কেউ কি জানতো জেলের মেয়েটিই লালপরী জেলের মেয়ে সমুদ্রের লাল চূড়া

কেউকি জানতো কুয়াশার স্তূপ

 এভাবে আগুনের কুন্ডু হয়ে উঠবে

মধ্যরাতের সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়তো বিস্ময়কর সব কথাবার্তা

যখন মনে হবে সময় বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে

 তখন কিন্তু সময় ফুলে উঠছে সমুদ্রের মতো

তুমি চেয়েছিলে শুদ্ধ অবস্থান,

আর তোমার জানালা ক্ষুধার্ত কাকের পাকস্থলিতে উড়ে বেড়াচ্ছে

আর তোমার আত্মসাৎ করা হৃদয়

তা দিচ্ছে দোয়েল

মেঘের উৎসস্থলের দিকে যেতে যেতে আমার পা বেঁকে গিয়েছে

যদিও হাজার হাজার গ্লাদিয়াতোর এই ভূলটাই করেছিল

 প্রান্তিক কালকিশুন্দি

 কেন্নোদের গোত্র

 ভ্যাপসা গরমের মধ্যে গান গায়

প্রত্যেকের আশ্রয়স্থলের পাশেই বাগান

সেই বাগানের মধ্যেই তারা হুড়োহুড়ি করছিল

 নিজেদের সৎকারের জন্য

পেঁচা সব সময়ই একা

কিন্তু আমরাতো আমাদের চোখগুলো তাকে দিয়েই দিয়েছি

সবকিছুই যেমন নিরর্থক

সেই হিসেবে পেঁচাদের অন্ধকারে ছেড়ে দিয়েছি আমাদের আগুনের বাগান

পেছনে পড়োবাড়ি 

মাথায় সিদুঁরে মেঘ

পথ প্রদর্শনের জন্য ধাড়ি-ইঁদুর গেছো-ইঁদুর মেঠো-ইঁদুর নেংটি-ইঁদুর

 তাদেরকে মান্যিগন্যি করতে হয়

কেননা তারা ঈশ্বর-ভক্ত

কেননা তারা ঈশ্বর-সমর্থিত

পটকা ফাটানোর শব্দে 

   দেখি তাদের শাসন-চোখ

আর আমাদের প্রাপ্য এন্টাসিড

 এযাবৎ বিনামূল্যেই সরবরাহ করা হয়েছে

ঘুণপোকার শারীরিক গঠন এবং ধ্যানস্ত জীবনের সুফল

সপ্রভিত আলোচিত, বলবে তো অশিক্ষিত কিন্তু কাঠমিস্তিরির বৌ ঘোড়ার বা-ঠ্যাং

 ঠিক ঝুঁলে পড়তে পারে

যেমন টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সুউচ্চ টাওয়ার 

জনতার দিতে ছড়িয়ে দেয় এক ধরণের কৌতুহল

সেই কৌতুহল এক ধরণের শাস

 যা পেট ভরায়

 যা ক্ষুধা অক্ষুন্ন রাখে

স্তব্ধ সাগর আমাদের পথ হতে দূরবর্তী, কার্বাইডের আলোয় উজ্জ্বল অন্ধত্বের অলৌকিকতা-

সত্য একমুখী হতে পারে

দ্বিমুখীও হতে পারে, না কি

শক্ত মলাটের ইতিহাসের ভিতর থেকে বেরিয়ে

আমরা পেয়েছি আমাদের পোশাকের ভষ্ম

 নকশিকাঁথার গুঞ্জন

 আলাউদ্দিন খাঁ

 নারিকেল বনের ভিতরে সূর্যের শিশুদল

সেইসব গভীরতা আর সত্তার শোষণে অনিচ্ছুক দিনলিপি, যা নিতান্তই প্রভাবক –

আপনারা দেখছেন এই ওয়ার্ল্ড-ওয়াইড সেক্সমার্কেট

নিগ্রো যুবতীর মিস ইউনিভার্স খেতাব জয়

কুমারীর পেটের ভিতর ৩০০০০০০০০ ভ্রুণ

উঠে আসতে চাইছে জৌলুসের মঞ্চে

অটোগ্রাফ শিকারীদের দিকে তাদের ভূবনভোলানো বিনয়ী হাসি

তবু সুষম পাঠচক্রের ভিতরে

 উত্থান হয়েছে ঝিনুকের

ঝিনুক পেয়েছে খোল

 যার ভিতরে সমুদ্রকে আটকে রাখা যায় তার ঘুর্ণিহাওয়া আর বীজকণাসহ

আর দুর্মর ভ্রমণকাহিনী কল্পলোক থেকে রেডিও স্টেশন টাওয়ারে

 ক্রমাগত চক্কর খেয়ে

মাধ্যকর্ষণ সূত্র অনুযায়ী

 অন্তরঙ্গ দ্বীপপুঞ্জে বপন করে শিল্পভিত্তিক ব্যাকটেরিয়া

যা বিষাক্ত এবং পোতাশ্রয় আঁকড়ে থাকে

পরিস্কার কাপড়চোপড়ে ঠিকরে পড়ে এবং মারাত্মক সব আনকোরা আইডিয়ায়

নিশপিশ করে হিমবাহসমূহ

অনামিকার অগ্রভাগ থেকে ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন

চঞ্চল এই উপসাগর

কিছুতেই কিছু এসে যায় না

দশকের পর দশক পেরিয়ে সিঁড়িটা দুলছে

নিহতের রক্ত

প্রতিশ্রুতি

গঙ্গাফড়িঙের ঘনিষ্ঠতা

আগামীকালের সূর্য

কারখানার চিমনিতে জড়িয়ে রয়েছে

দুপুররোদের পেছনকার খানিকটা ভষ্ম

সিদ্ধান্ত নিয়েছি

অন্তত আজ

ঘুমোতে যাবার আগে

উপসাগরকে

‘শুভরাত্রি’ বলবো না

গনগনে আকাশ আমাদের গুচ্ছ ঘরগুলোতে হেলে পড়েছিল

যেন ছায়ারাশির দিকে সমস্ত মনোযোগ,

নিচু এলাকার সঙ্গে আকাশের সমন্বয় হয়

আর বলে, ‘আমি নতুন, কিন্তু আমি শুরু নয়’

প্রবাল প্রাচীরে রক্তপাত ঘটতে পারে

বিবাদমান মুঘল রাজকুমারগণ সান্ধ্যপ্রার্থনা সেরে নেয় তলোয়ারের খাপের ভিতরে

বাগানে পোতা বীজ

 নিয়তিতে বেড়ে ওঠে

সন্যাসীর কন্ঠস্বর 

 উজ্জ্বল সন্দেহ

সবুজ দ্বীপটা এক সময় হুড়মুড় করে ভরে উঠেছিল কাঠের ঘোড়ায়

এমন ভাবে ঘুর্ণিবায়ু ও তদারকি এসেছিল

যেন শিশুরা ছুড়ে ফেলে দেয় মাটির ময়না

তরুনরা ভুলে যায় মাটির ময়না

বুড়োরা আফসোস না করে (বিশৃঙ্খল ভূগোলকতো অবিশ্বাস্য পরিচিত)

তা বেশ ভালই আর কি

বসন্ত ও নক্ষত্রপুঞ্জের জন্য অবাঞ্চিত মিতালী

 সূর্য ছিল নির্বাসিত

 বা আমাদের অজানা

কিন্তু অনেকগুলো মুকুটের মধ্যে একটিতো আমারই

যেমন এটি পেয়েছিল বাঘা যতিন 

যেমন কর্ণেল আবু তাহের 

যেমন হুমায়ুন আজাদ

  সেই মুকুট মৃত্যুর গভীরতায় আর প্রত্যাশাকে উশকে দিচ্ছে

ধুসর মেঘ আমার কাঁধে হাত রেখে তার উষ্ণ প্রান্তরের দিকে ফিরে তাকায়

তার হিমশীতল ঘাম

 তার ক্ষুদ্র বুকের ধুকধুকানি

 আমার হৃৎপিন্ডে যেন গর্জে ওঠা সমুদ্র বা বালকের কুয়াশা

আমাদের জন্মানোরও বহুদিন আগে জেদী রাস্তা যাত্রা শুরু করেছিল

 আমাদের মগজের ভিতর দিয়ে

সামনে পড়েছিল বিচিত্র সব অন্ধকার ও সাদা জোব্বাধারী পুরোহিত

সূর্য থেকে ধোঁয়া বের হলে তারা পড়েছিল তার ঝাঁজে

যেসব জন্তুর লেজ দেখা যায়না কিন্তু লেজের দাবড়ানিতে টেকা দায়

 তারা না পারে ধোঁয়া গিলতে

 না পারে শিকার-প্রকৃতিতে আগুনের অবস্থান সহনীয় করতে

বাড়ির পাশেই কলমিলতার ঝাঁড়ে

 আমরা রেখে এসেছিলাম আমাদের মাথা

আর ধড়টুকু নিয়ে দুনিয়া চক্কর মেরে বেড়াচ্ছি

 সঙ্গে কাঁটাকম্পাস

হাজার হাজার নদী যার একটাওতো স্বর্গ থেকে নেমে আসেনি যে কনুইতে চোয়ানো রক্ত

  সেখানে ধোঁয়া যাবেনা

মাত্রই এক টুকরো মেঘ জেদ করে উঠে গিয়েছিল আকাশের মিনার পর্যন্ত

 নিজের জন্য না

বাজপাখির ঠোঁটের ভিতরে সাত রাত সাত দিন কাটিয়ে নিজের জন্মদিন উদ্ধার করে

তা ছড়িয়ে দেয় শেওলা-মাখা উচু উচু মিনারের বদ্বীপে

কালো কালো ভাস্কর্যগুলোর জন্য এখন চ্যালেঞ্জ হয়েছে হুল-ওলা মাছিদেরকে কীভাবে তারা

 ঠায় দেবে তাদের কোটরে

কেননা তাদেরতো কখনো মরা হবে না

কখনো গাছের পাতার শিশির কখনো ফুটকারা ফুটকারা রোদ জমা হয় জানা-অজানা

   কোটরে আর শরীর চিড়বিড় করে

কানে বাজে চকচকে দেয়ালের মিউমিউ

কুন্ডলি পাকানো শ্বাস খড়ের গাদায় বসে আঁকবে পরবর্তী পরিকল্পনার ছক

ঘোলাটে জলের গোপনীয়তা তো উদ্ভাবনের কিছু নেই

কাঁচা-পাকা পাথরগুলোও বাজারের হৈচৈয়ে হারিয়ে ফেলেছে মগজে রাখা হিসেবপত্তর

হতাশ চাঁদ তুলে নিয়ে যায় কিশোরীর ঘুঙুর

 আর ঘাসের গর্ভবেদনা এক সময় নিস্তব্ধ

উত্তপ্ত রোমকূপ হতে সরে গিয়েছিল

 যাবতীয় চোখ

ফেরেশতা ও বিপ্লবীরা ব্যবস্থা করে দিয়েছিল চৌবাচ্চার

 স্বাধীনতার উৎসব

  ঠোঁটের জমা রক্ত রুমালে মুছে

 পবিত্র মানচিত্র আগলে রাখা

কুকুরের ডাক বা অপেক্ষা দেখা যায়নি

 শহরের কাছেই যে সামরিক ব্যারাক সেখানে প্রহরী ও মালি

 গল্প করছিল

  কোন অসুখী ভাব ছাড়াই

বাজপাখির নির্জনতা তখন আমাদের গৃহসরঞ্জামাদিতে কৌতুহল দেখায়নি

লেকের জলে কয়েকটি কুমারী মেঘের অস্থিরতা ডেকে আনে এক কাহিনীকে

যা মূলত শূন্য ক্যানভাস

কোন ভূখন্ডে হঠাৎ কোন মানবগোষ্ঠী নাজেল হয়েছে আর কি

 এমন কি তাদের কোন মিথও নেই

মঠ ধ্বংসের কাহিনী সবার জানা

 কিন্তু কে বলবে কখন কোন মঠ অগ্নিকান্ডের শিকার হয়েছিল

আর তার ফুলকি এখনো ধাঁধিয়ে দেয় রাখালের চোখ

মাদুলীর রূপো গলে পাটলিপুত্রের আত্মীয়ধ্বনিতে কাঁচা মাংসে অসংযমী আচরণ

তবে খন্ড খন্ড সুদৃশ্য হৃৎপিন্ড নিয়ে খেলাটাই নিরাপদ

প্রথমত কৈফিয়ত দেয়ার ঝক্কি নেই

 দ্বিতীয়ত ভাঁটির অস্থিজোটকে ঘুমের বড়ি গেলানো সম্ভব হয়েছে

বল কেন বঙ্গপোসাগর এক দন্ডের জন্যও স্থির হয়না

তার শামুকে রেডিয়াম

আর ভয়ংকর জুয়েলারি, জয়নুল আবেদিনের ছবি থেকে যেন উৎসারিত

সেই সাধারণ জাহাজ বন্দর ছেড়ে যাবার পর

ফেরেনি

মসলার কাহিনী সবাই জানতো

অতীশ দীপঙ্কর

পার্বত্য চট্টগ্রামের জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া সাঁওতাল কন্যা

সমুদ্রে

তারাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে

ভবিষ্যৎ-চাঁদের বুড়ি তার জন্য চরকা কাটছে

তোমাদের পিতামাতা তোমাদের পাঠিয়ে দিতে চায় 

ঘুমের কলরব থেকে অনেক দূরে।

পেঁচার বন্ধু হয়ে বুঝেছি বাতাসের ভিতর পৃথিবীর কণাসমূহ কিভাবে হাসাহাসি করছে

এমনকি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে। 

দেখো ছোট্ট ওই মরা ফড়িংটা কিভাবে শান্ত হয়ে 

শুয়ে আছে ঘাসের উপর।

যে ঘাস কুড়ি লক্ষ বছর ধরে প্রকৃতিসমেত প্রতিটি রাতকে দেখে আসছে,

রাতের নির্জন অরণ্যে ফণিমনসারা খেলায় নিমগ্ন

বন্দী রাজকুমারীদের সঙ্গে-

চাঁদের মহাপথে জোনাকি হারিয়ে ফেলবে ডানা।

তাকিয়ে দেখ ওই ছায়া-স্থাপত্যটিকে, মধ্যযুগের বাদ্যযন্ত্রের মতো ধ্যানী-

অন্ধকার খিলানে আচ্ছন্নতা, 

মৃত্যুর বিচূর্ণ কণাসমূহ ধারণ করছে একেকটি গ্রহের প্রকৃতি।

বেকার বসে থাকা আঙুলে

এলামেলো গল্পের ফোকড় দিয়ে

উড়ে আসে প্রজাপতির রক্তাক্ত ডানা

(স্থাপত্য নিদর্শনে অন্যতম ভাগের দাবীদার লোকায়ত হিং¯্র সত্তা)

বিক্ষিপ্ত বুনো পথগুলো আড়মোড়া ভেঙে দেখে নিচ্ছিল অসম দূরত্ব

  যে দৃশ্য বিশ্বস্ত ও সীমাহীন তার উল্লম্ফন

হ্যা, ভারসাম্যতো আছেইগমের পোকা

 আমাদের উদরে

নিচু গাছগুলো আর ধারালো লতালতিকার অন্ধকারে পেঁচার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে

 কালো হৃদপিন্ডের

যদিও বাধ্যতামূলক গোধূলিলীলার কার্যকারীতায় কোন ক্ষতিবৃদ্ধি হয়না

পঞ্চাশ পয়সার কাঠিলজেন্সে আঠার মতো লেগে থাকে মৌমাছির দল

   গোপন শরীরে সংস্কার দরকার হয়ে পড়েছে

কিন্তু সফল ভোর শেষে স্বাভাবিকভাবেই স্ত্রীভ্রমর নিশ্চিন্ত

ওড়নার আয়তক্ষেত্র আধুনিকতাকে ধাঁধিয়ে দেয়

     সোনালী পেরেক ভক্তিবায়ুতে মূল্যবান

হয়তো বড়শির সাহায্যে ডাঙায় ওঠার পর আমাদের অভূতপূর্ব আনন্দে

 কাক হাততালি দিয়েছে

দরকার পড়লে আমরা হাততালি দিই

যাহোক দূরের বেসামাল প্রতিধ্বনি আমাদের অন্ধকার শরীরকে ক্রমাগত

নাড়িয়ে যায়

আমরা টের পেয়ে গিয়েছিলাম জানালার সাদাসিদে পর্দাগুলো গৃহপালিত প্রাণীগুলোর সঙ্গে

আলাদা ভাষায় কথা বলছে

ঘড়ির কাঁটা কারোর কথাই শুনছে না যেন পন করেছে আমাদের উড়িয়ে গোলযোগপূর্ণ

ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে ফেলবে

বলা বাহুল্য, দূর্বলতা থেকে অনেক বিষাক্ত শাখাপ্রশাখা গজিয়েছে

সেই শাখাপ্রশাখা বংশগৌরব সব ধুয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে

 পবিত্র মানচিত্রের চরিত্র নাশ করতে উন্মুখ

সূর্যের তাপে ধুলোয় গজানো ডিম্বকণা পটাপট ফুটছিল, অনূভূতিহীন শিরাসমূহে

 বিপুল সামুদ্রিক ক্ষতিসাধন

তখন তোমরা অংক কষছিলে-

 আহা গরীব পাকিস্তান

 অসহায় পাকিস্তান

তার দরকার আধুনিক সাঁজোয়া ট্যাংক

  বোমারু বিমান

 মিসাইল

আর ঐ ইন্দিরা, শয়তান মহিলা

 দস্তুরমতো ঘুম হারাম করে দিয়েছে

মুজিবকে

 বাগে আনা যাবেনা (লুমুম্বার মাথার খুলির পাশে আরেকটা খুলি বাড়বে)

কিছু লোক আমাদের দরকার

 ‘জয় বাংলার’ ভিতরের

‘জয় বাংলা’ ছাড়াও

 যাদের আরও মোহ আছে

 থাকতে পারে;

অবশ্যই

 মীরজাফর খুঁজে পেতে কোন কালেই বেগ পেতে হয়না,

বিষাক্ত আইসবার্গ শব্দতরঙ্গ ছাড়াই পৌঁছে গিয়েছিল পোতাশ্রয়ের সন্নিকটে –

তোমার চোখের পাতা কি ভিজে আসছে

না কি আলোর কারসাজি

নিজের প্রতি ক্ষমাহীনতার দাহ-

 ‘ব্যক্তির মৃত্যু’

 ‘আদর্শ’

 শব্দের এসব প্রতারণা কেন –

দেখ বদ্বীপের এই মানচিত্র জুড়ে আছড়ে পড়েছে মানব প্রকৃতির সূর্য

লাল –

ধানমন্ডি

 ৩২ নম্বর

 সিঁড়িতে রক্তের দাগ

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


You must be logged in to post a comment Login