কাজী হাসান

স্বাধীনতার গল্প: ঝুম বৃষ্টি

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।

১৯৭১ সালের অক্টোবার মাস। বৃষ্টি হচ্ছে তো হচ্ছেই। ক্লান্তিহীন বৃষ্টি। আজ দুই দিন হয়ে গেল। থামবে, এ রকম কোন সম্ভবনাই নাই। এক মনে স্বপন ছবি এঁকে চলেছে । গত তিন দিন ধরে ছবি আঁকছে। হাতে বেশী সময় নাই। হাত থেকে পেন্সিলটা পড়ে যাবার আগে যদি ছবিটা শেষ করা যেত!

স্বপন বাম পায়ের দিকে তাকাল। না খুব ভাল অবস্থা না। সম্ভবত গ্যাংরিন হয়ে গেছে। কেমন একটা পচা পচা গন্ধ। ক্ষত জায়গাটায় নিজে একটা অপারেশান করেছিল। একটা ব্লেড দিয়ে জায়গাটা নিজেই কাটল। তার পরে কিছু উপরে পা টা শক্ত করে বাঁধল। মনে একটা ক্ষীণ আশা ছিল, যদি পায়ের ক্ষতটাকে আরও কিছুটা সময় জিইয়ে রাখা যায়। এর মধ্যে যদি একটা ডাক্তার আসে। পা বাঁচাতে না পারলেও, যদি জানটা বাঁচাতে পারে।

বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ একমাত্র মাধ্যম দশ বছরের ছেলে ইদ্রিস। দিনে তিন চার বার লুকিয়ে সে আসে স্বপনের কাছে। ওই কিছু খাবার, ব্লেড, ব্যাথার ওষুধ, পানি দিয়ে গেছে। প্রথম দিন ব্যাথার ওষুধ কাজ করলেও, পরের দিন থেকে তাও কাজ করছে না। স্বপন ইদ্রিসকে বলল, তোমাদের গ্রামে কি কেও ছবি আঁকে? আমাকে কি রঙ তুলি এনে দিত পারবে? প্রশ্ন শুনে ইদ্রিস হা হয়ে তাকিয়ে থাকলো। ছোট মন বুঝতে চেষ্টা করলো, এই লোক কি বলে। মানুষ গান গায়, নাচে, তারা আবার ছবিও আঁকে না-কি? ও যতটুকু জানে, স্কুলের ছোট বাচ্চারা গরু, ছাগলের ছবি আঁকে। কিন্তু শহরের এত শিক্ষিত মানুষ কেন স্কুলের বাচ্চাদের মত হতে চাচ্ছে।

ছোট ইদ্রিস এও বুঝল, এই লোকের হাতে বেশী সময় নাই। তার শরীরে অনেক জ্বর। তার পরে পায়ের থেকে এখনো রক্ত বের হচ্ছে। এত রক্ত বের হলে, শরীরে কি আর কিছু বাকি থাকে?

জাহিদ হাসান স্বপন। ঢাকা আর্ট কলেজ থেকে পাশ করলো কৃতিত্বের  সাথে। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার,  প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী জয়নুল আবেদীন সেখানেই শিক্ষকতার চাকরির ব্যাবস্থা করে দিলেন। এর পরের ঘটনাগুলো বেশ নাটকীয়ভাবে তাড়াতাড়ি হল। তিন মাসের মধ্যে বিয়ে আর তার কয়েক দিনের মধ্যে কমনওয়েলথ স্ক্লারশিপ হয়ে গেল।

বিয়ে হল যার সাথে তার নাম, সুপর্ণা। পাশের বাসার মেয়ে। ইডেন কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। ভাল লাগা দু জনের বহু দিনের। কিন্তু মুখ ফুটে কেও কাওকে কিছু  বলে নি। তার পরে যখন ওদের বাড়ি থেকে প্রস্তাব আসলো, স্বপনের মনে হল যেন আকাশের চাঁদ এসে হাতে ধরা দিয়েছে। বৃহস্পতি নিশ্চয়ই তুঙ্গে, না- হলে কি করে সব বিশাল ব্যাপারগুলো না বলতেই একে একে চলে আসছে।

ক্যানাডায় স্বপন-সুপর্ণার জীবন বেশ সুখেই যাচ্ছিল। স্বপনের এর মধ্যে বেশ নাম ডাক হয়ে গেছে। তার জল আর তেল রঙের কয়েকটা প্রদর্শনী হয়েছে। তার আঁকা ছবির মধ্যে প্রতিবাদের একটা ভাষা সবাই এক বার দেখলেই খুঁজে পায়।  এক বার তার এক শিক্ষক তার কাছে জানতে চাইলো, তোমার কিসের এত ক্ষোভ? তোমার তো ভারী সুন্দর জীবন। দেশে ভাল চাকরি, সুন্দরী বউ, যুবক বয়স; তোমার জীবনে আমি দেখি আনন্দ, আনন্দ আর রঙ। উত্তরে স্বপন বলল,  আমি এখন সংঘাতের অস্ত্র ধারালো করছি। সময়ে তা ব্যাবহার হবে। তার পরে আমার ছবিতে আসবে বিজয়ের রঙ।

মার্চ ১৫, ১৯৭১। ঢাকার থেকে টেলিগ্রাম গেলঃ Father sick, come sharp. স্বপন বুঝল, বাবাকে শেষ বারের মত দেখতে হলে এক মুহূর্তে দেরী করা যাবে না। তড়িঘড়ি করে  দেশে যাবার সব আয়োজন করতে লাগলো। সুপর্ণাকে আর সাথে নিল না। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফিরে আসাটা দরকার। তা ছাড়া সুপর্ণার পক্ষে এখন যাওয়া সম্ভব না। ডাক্তার না করে দিয়েছে। তারও শরীর বেশ খারাপ। Early pregnancy complication চলছে।

সব গুছিয়ে ঢাকায় আসতে আসতে পুরো এক সপ্তাহ লেগে গেল। সুপর্ণাকে একা রেখে আসতে মন চাচ্ছিল না। কিন্তু উপায় নাই। বাবাকে শেষ বারের দেখতে না পারলে নিজেকেই তো ক্ষমা করা সম্ভব হবে না। ভাগ্যিস ছোট বেলার বন্ধু বেলাল আর তার স্ত্রী রুপা একেবারে কাছে থাকে। সেও একই ইউনিভারসিটিতে পিএইচডি করছে। বেলাল বলল, তুই একটুও চিন্তাও করিস না। আমরা ভাবীকে দেখে  রাখব। তুই খালুকে দেখে আয়।

বাবা হয়তো স্বপনকে শেষ বারের মত দেখার জন্যে বেঁচে ছিলেন। তিনি কোন কথা বলতে পারলেন না। শুধু ছেলেকে দেখে মৃদু হাসার চেষ্টা করলেন। এই ছেলে হওয়ার সময় তার স্ত্রী মারা যায়। তার পরে তিনি বিয়ে করেন নি। নিজের হাতে ছেলেকে মানুষ করেছেন। এ নিয়ে কখন তার মুখে কোন অভিযোগ ছিল না। এক বার স্বপন, বাবাকে মায়ের কথা জানতে চাইলে বলেছিলেন, এই দেশটাই তোর মা। তোর মা ভালবাসত এই দেশের ফুল, আকাশ, গাছ, নদী আর মানুষকে। তুই যখন তাকে পাস নি, তখন তার ভাল লাগার সব কিছু যেই দেশের, সেই দেশ-ই তোর মা।

গ্রামটার নাম শ্যামপুর। যশোর থেকে যেতে দু দিন লেগে যায়। দূরত্ব হিসাবে বেশী না। হয়তো বেশী হলে ৫০ কিলোমিটার। কিন্তু কথা হচ্ছে ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের সময়কে নিয়ে। ওখানে যেতে বাস, রিকশা, গরু গাড়ি, নৌকা সব এক এক করে ব্যাবহার করতে হয়।  গ্রামে বেশীর ভাগ মানুষ ছিল হিন্দু। ১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলমানের যে দাঙ্গা সারা দেশে ছড়িয়ে পরেছিল, তার ছোঁয়া এই গ্রামেও এসে পড়েছিল।

পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্ম নেয়ার পরে বেশীর ভাগ হিন্দু ভারতে চলে গেল। বিত্তশালী হিন্দুদের সম্পত্তি কে কি ভাবে দখল করবে তার একটা প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়ে গেল। বাড়ি-ঘর আসবাব পত্র শুন্য হয়ে পড়ল, মন্দিরগুলো থেকে দেবদেবীদের মূর্তিগুলো উধাও হয়ে গেল।

কিন্তু গ্রামের হিন্দু জমিদার বাড়ি অক্ষত থেকে গেল। কিছু মানুষ অবশ্য চেষ্টা করেছিল দখল করতে। ভয় পেয়ে জান নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছে। অনেক কিংবদন্তি চালু আছে বাড়িটাকে নিয়ে।  কেও বলে ভুত আছে, কেও বলে ইয়া বড় বড় অজগর সাপ আছে। সেখানে একটা বড় জায়গা জুড়ে জঙ্গল তৈরি হয়েছে। গ্রামের মানুষ জন আশে পাশে যায় না। এই বাড়ি আর জঙ্গলকে মিলিয়ে জায়গাটার নাম হয়েছে, জংলা বাড়ি। গ্রামের মানুষরা বছরে কমপক্ষে দু বার জঙ্গলের ধারে কয়েকটা ছাগল বেঁধে আসে। পরের দিন দেখা যায়, ছাগলের কোন চিহ্ন নাই। আর দড়ি ছেঁড়া।

স্বপন তার ক্যানাডা ফিরে যাওয়ার টিকেট কনফার্ম করলো। ৩১ শে PIA র প্লেনে করে লন্ডন। তার পরে সেখান থেকে ক্যানাডা। তবে প্ল্যান একে বারে ওলট পালট হয়ে গেল। ২৫ শে মার্চ রাতে গোলাগুলির প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। বুঝতে সময় লাগলো কি হচ্ছে। পাক হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত বাঙ্গালীদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছে। নির্বিচারে খুন করে চলেছে। মানুষ তো গরু, ছাগল, হাস, মুরগীকেও এভাবে মারে না।

পরের দিন নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হল। পৃথিবীর সব চেয়ে সু-সজ্জিত সেনাবাহিনী এটা কি করেছে। চারিদিকে লাশ আর লাশ। শরীররের রক্ত টগবগ করে উঠলো। বদমায়েশ তোরা কি মরদ? নিরস্ত্র, ঘুমন্ত মানুষ মারিস? আল্লাহ কি তোদের শরীরে মানুষের রক্ত দেয় নি। তোদের শরীরে কি পশুর রক্ত? পশুও  এতো  জঘন্য কাজ করত না। তোরা নরকের কীটের থেকেও অধম। প্রস্তুত হ। তোদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব পেতেই হবে। কি মনে করিস, বাঙ্গালী শুধু লাঙ্গল দিয়ে চাষ করতে জানে, কলম হিয়ে শুধু কবিতা লিখতে জানে? এই বার দেখবি একই হাতে কি উঠে আসে। তোদের থোতা মুখ ভোতা না হওয়া পর্যন্ত, তোরা আমাদের চেহারার অন্য দিকটা দেখবি!

বাবার বালিশের তলায় স্ট্যাম্প লাগান তার ক্যানাডার ঠিকানা লেখা একটা খাম পেল। বাবা সারা জীবনই খুব গোছান ছিলেন।  মাসের ১৫ আর ৩০ তারিখে স্বপনকে চিঠি পাঠাতেন। মাসের প্রথমেই খামগুলো রেডি করে রাখতেন। শুধু সময় মত চিঠি লিখে, খামে ভরে মেল বক্সে ফেলে দিতেন। বাবা মারা গেছেন ২২ তারিখে। ৩০ তারিখের খামটা এখন ব্যাবহার হয় নি।

স্বপন সুপর্ণাকে লিখতে বসল, চিঠিটা পাবে কিনা, জানি না। তোমার আর আমার অনাগত সন্তানের সাথে আমি একটা অন্যায় করতে বাধ্য হচ্ছি। আজকে নিজের চোখে আমার মা, আমার দেশকে নিশ্চিহ্ন করার যে জঘন্য চেষ্টা দেখলাম, তার বিরুদ্ধে আমাকে রুখে দাঁড়াতে হবেই। মায়ের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে না পারলে, আমার হাতে তুলি আর রঙ উঠবে না। আমি যুদ্ধ করবো। আর যদি কখন তোমার সাথে দেখা না হয়, তা হলে মাফ করে দিও। শুধু আমার একটা কথা রেখ। ছেলে হলে নাম রেখ জয়, আর মেয়ে হলে নাম রেখ মুক্তি।

ইদ্রিস দুটো কাঠ পেন্সিল আর একটা বড় কাগজ এনে দিল। বলল, গ্রামের কোথাও কোন রঙ পেলাম না। যে দিন আপনি এই গ্রামে এলেন, সেই দিন আপনারে না পেয়ে মিলিটারিরা গ্রামের বাজার পুড়িয়ে  দিল। বেশীর ভাগ পুরুষ মানুষ এখন পালিয়েছে। আর যারা আছে, তারা রাজাকার, শান্তিবাহিনী করে।

ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হল। শক্তিতে কুলাল না। এত টুকু বাচ্চার হৃদয় এত বিশাল কি করে হতে পারে। তার নিজের সন্তান কি এ রকম হবে? ইশ যদি দেখে যেতে পারতাম। যে জায়গায় গ্রামের মানুষ ভয়ে আসে না, সেখানে এই ছেলে কোন দ্বিধা ছাড়াই আসছে। চোখটা তার জ্বল জ্বল করছে। স্বপনের কাছে মনে হল, তার জন্যে প্রতিটা কাজ করাতে,যেন তার, পাক হানাদার মাথা গুড়িয়ে দেওয়ার উল্লাস।

ইদ্রিস স্বপনকে বলল, চাচা আপনার শরীর ভাল  হলে, আমিও আপনার সাথে যুদ্ধে যাব। বিদেশীরা আমাদের দেশ দখল করে সবাইকে অত্যাচার করবে, সেটা আমরা মানবো না। স্বপন বুঝল, পুরো জাতি ক্ষেপে উঠেছে এবার হানাদারদের রক্ষা নাই। যেখানে দশ বছরের শিশু পর্যন্ত যুদ্ধে যেতে চায়, সে দেশ  অবশ্যই মুক্ত হবে। তার মৃত্যু হলেও, এরাই অসমাপ্ত কাজটা শেষ করবে।

জাহিদ হাসান স্বপন মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার। ত্রিশ জনের এক দল তার সাথে। তার সাহসিকতা আর রনকৌশল পাক বাহিনীকে  বারে বারে বিপর্যস্ত করছে। পুরো যশোর অঞ্চল জুড়ে তার অপারেশান চলে।  হাই কম্যান্ড তার উপরে বেশী নির্ভর  করছে, কারণ ভারত বাহিনীর জন্যে বেনাপল- যশোর সড়ক খুব জরুরী। তারা বলেছে এলাকাটা যতটুকু সম্ভব শত্রু মুক্ত রাখতে। তাদের পরিকল্পনা ওই রাস্তা দিয়ে ভারী অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে যশোর ক্যান্টনমেন্ট দখল করে, ঢাকার দিকে আগান।

খবর আসলো  কপোতাক্ষ নদীর উত্তর পাশে পাক বাহিনী ক্যাম্প করেছে। উদ্দেশ্য আশে পাশে পুরো অঞ্চল চষে মুক্তিবাহিনি আর তার সব সমর্থকদের নিশ্চিহ্ন করা। মুক্তি বাহিনী হাই কম্যান্ড স্বপনকে দায়িত্ব দিল, পাক বাহিনী ওই এলাকায় শক্ত হয়ে বসার আগেই ওদের উপরে আক্রমন চালিয়ে ক্যাম্প ধংস করতে। স্বপন বাহিনীকে সাহায্য করার জন্যে আরও ২২ জনকে দলে দেয়া হল।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধারা রাত দু’ টা নাগাদ পাক বাহিনীর ক্যাম্প আক্রমন করে বসল। ব্যাপক গোলাগুলি চলতে লাগলো। জয় মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু পরিকল্পনার বাইরে একটা কাজ হল। যশোর ক্যান্টনমেন্ট তিনটা হেলিকপ্টার আসলো পাক বাহিনীদের সাহায্য করতে। উপর থেকে আক্রমনের জন্যে স্বপন বাহিনী প্রস্তুত ছিল না।

ভোরের আলো আসতে আসতে মুক্তি পাগল ছেলেগুলো পিছু হটতে লাগলো। এর মধ্যে বার জন প্রান হারিয়েছে। হানাদাররা বুঝে ফেলল, মুক্তিরা সংখ্যায় একেবারে নগন্য। নতুন উদ্যম নিয়ে তারা পাল্টা আক্রমন আরম্ভ করলো। বাঙ্গালী ছেলেদের দল ভাংতে লাগলো। স্বপন চিৎকার করে সবাইকে বলল, যে যেদিকে পার, জান নিয়ে পালাও।

সাথে সাথে স্বপনও দৌড়াতে লাগলো। জানে পাশেই নদী। সরাসরি ওই দিকে গেলে হানাদারদের পাল্লায় পড়তে হবে। কিছুটা কোনাকুনি করে দৌড়াতে লাগলো। নদীতে ঝাঁপ দিতে পারলে, ডুব সাঁতার দিয়ে ওই পারে চলে যাওয়া যাবে।  কিন্তু নদীতে ঝাঁপ দেয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে পায়ে গুলি এসে লাগলো। রক্তাক্ত পা নিয়ে ডুব সাঁতার আরম্ভ করলো।

ডঃ রুবিনা হাসান মুক্তি। এমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ায় জীববিজ্ঞান বিভাগে সরীসৃপ প্রাণী নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে গবেষনা করছে। গত তিন বছর ধরে তার পরীক্ষা, নিরীক্ষা চলছে বার্মা আর বাংলাদেশের অজগর সাপ নিয়ে। এরা কি করে খায়, কি করে হজম করে, কান না থাকা সত্বেও কিভাবে শুনে।  এ গুলো থেকে এমন সব তথ্য পেল, যা দিয়ে মানুষের অনেক সমস্যা সমাধানের সম্ভবনা আবিস্কার হতে থাকলো।

মুক্তির কাছে খবর আসলো যশোরের শ্যামপুরে জংলা বাড়ির কথা। ছোট একটা জঙ্গলের মধ্যে পুরনো একটা জমিদার বাড়িকে প্রচুর অজগর সাপ ঘিড়ে রেখেছে। অনেকের ধারনা কোন কিছু, সাপগুলো পাহাড়া দিয়ে রেখেছে। ১৯৭১ সালের পরে কেও সেখানে ঢুকতে পারে নি। বেশ কিছু মানুষ চেষ্টা করে প্রান হারিয়েছে কিংবা কোন রকমে রক্ষা পেয়েছে। মুক্তি অবাক হয়ে শুনল, গ্রামের মানুষরা সাপদের খাবার দিয়ে আসে। সে সিদ্ধান্ত নিল, অজগর সাপের জীবনযাএা   নিয়ে গবেষণা করবে।  তা ছাড়া বাংলাদেশের ওই অঞ্চলটা নিয়ে তার বিশেষ দুর্বলতা আছে। শুনেছে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে তার বাবা জাহিদ হাসান ওই অঞ্চলেই পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেয়ে প্রান হারিয়েছে।  মুক্তি তার এ পর্যন্ত গবেষনার ফলাফল পাঠিয়ে দিল এক সহকর্মী বন্ধুর কাছে। সে খুব অবাক হল। কেও কি কখন নিজের কষ্টের ফলাফল অন্যেকে দিয়ে দেয়। মুক্তি শুধু একটা অনুরোধ করলো, গবেষণা যাতে চালিয়ে যাওয়া হয়। সে একেবারে নিশ্চিত এর থেকে মানুষের জন্যে বিশাল কিছু বের হয়ে আসবে।

ডঃ রুবিনা হাসান ঠিক করলো, সে নিজে বাংলাদেশ সফরে যাবে। নিজের চোখে দেখে আসবে অজগর সাপ কি করে এ রকম আচরন করছে। তারা কি কোন কিছু আগলে  রেখেছে… । গুপ্ত ধন ধরনের কিছুর সম্ভবনা নাই। আবার এও শোনা যাচ্ছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে সেখানে এক মুক্তিযোদ্ধা সেই জমিদার বাড়িতে যেয়ে ছিল। বিষয়টা নিয়ে ভেবে ভেবে কোন কুল কিনারা বের করতে পারলো না।

স্বপন যখন নদীর অন্য পাড়ে যেয়ে পৌছাল, তখন তার হুশ নেই। বিধবা আনোয়ারা খালা নদী থেকে পানি আনতে যেয়ে বুঝল, এক জন মুক্তিযোদ্ধা অচেতন হয়ে পড়ে আছে। সাথে সাথে ডেকে নিয়ে আসলো নাতি ইদ্রিসকে। দু’ জনে মিলে অনেক কষ্টে করে স্বপনকে নিয়ে আসলো বাসায়।

স্বপনের জ্ঞান ফিরে আসলো। পায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা সাথে সাথে অনুভব করলো। খালার কাছে জানতে চাইলো, একটা ডাক্তার কি পাওয়া যাবে? খালা বলল, গ্রামে তো কোন ডাক্তার নাই। তবে দেখি শরিফুদ্দিন কবিরাজ কিছু করতে পারে কি-না।

কবিরাজ সাহেব  যখন শুনল স্বপন এক জন মুক্তি, তখন সে দৌড়ে পালাল। বলল, অস্তাগফিরুল্লাহ, আমি যারা ধর্মের বিরোধিতা করে, তাদের চিকিৎসা করি না। সাথে সাথে খবরটা সে পুরো গ্রামে রাষ্ট্র করে দিল। তার পরে একটা নৌকা ভাড়া করে চলল, নদীর ওই পাড়ে পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পের দিকে।

ইদ্রিস হন্তদন্ত হয়ে তার দাদীকে জানালো, কবিরাজ সাহেব নদীর ওপারে গেছে পাক বাহিনীকে খবর। আনোয়ারা খালা বুঝতে পারলো না, সে এখন কি করবে স্বপনকে নিয়ে। বেচারার একটা পা হয়তো নষ্ট হয়ে  যাবে।  কিন্তু পাক বাহিনী একে দেখলে সাথে সাথেই মেরে ফেলবে।

আনোয়ারা খালা আর ইদ্রিস মিলে স্বপনকে জংলা বাড়িতে দিয়ে আসলো। জঙ্গল এলাকায় ঢুকার  সময়ে লক্ষ্য করলো, এক অদ্ভুত ব্যাপার। আশেপাশের জঙ্গল থেকে কেমন একটা সর্ সর্ শব্দ । যেন কিছু সরেসরে যাচ্ছে । কোন সমস্যা ছাড়াই জংলা বাড়িতে যেয়ে পৌঁছালো তারা। অল্প সময়ের মধ্যে কিছু জায়গা পরিষ্কার করা হল, স্বপনের থাকার জন্যে।  ফিরে আসার সময় আনোয়ারা খালা বলল, বাবা সাপের থেকে ভয় পেও না। ওদের বুকের ভালবাসা অনেক বড়। ওরা তোমাকে দেখে রাখবে।

১০

যারা বিজ্ঞান নিয়ে খোঁজ খবর রাখেন, তারা “সায়েন্স” পত্রিকাটার নাম জানেন। এমেরিকান এসোসিয়েশান ফর দ্যা এডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্স (American Association for Advancement of Science) এই পত্রিকা ছাপায়। বিজ্ঞানের সর্বশেষ অগ্রগতির সব খবর থাকে এখানে।

এই পত্রিকার বরাত দিয়ে এসোসিয়েট প্রেস ( The Associated Press) অক্টোবর ২৮, ২০১১ বিশ্বব্যাপী একটা খবর প্রচার করলো যে, ‘অজগর সাপের হৃদপিণ্ডে হয়তো মানুষের স্বাস্থ্যকর হৃদপিণ্ড সৃষ্টির রহস্য লুকিয়ে আছে’ (Python hearts may hold key to healthy heart growth in humans).  কিন্তু খবরটার গুরুত্ব না বুঝে বেশীর ভাগ পত্রিকা এটা ছাপায় নি, আবার যে সব পত্রিকা ছাপিয়েছে, তাদের বেশির ভাগ পাঠক খবরটায় চোখ বুলিয়ে গেছেন; মনোযোগ দিয়ে হয়তো পড়েন নি।

এমেরিকার কোলারাডো ইউনিভার্সিটির মলেকিউলার বায়োলজির বিশেষজ্ঞ লেসলি লেনওয়ান্ড ও তার দল বের করেছেন, অজগর সাপের হৃদপিণ্ড খাদ্য গ্রহনের সময় ফুলে ওঠে না  (swelling up), বরং সেখানে মাংসপেশী তৈরি করে। তারা তাদের আয়তনের ২০ গুন মাপের জন্তু খাদ্য হিসাবে টেনে নিতে পারে। হরিনের মত বড় প্রাণী খাদ্য হিসাবে নিয়ে নেয়। তবে একবার খাবার পেলে তার এক বছর পর্যন্ত চলতে পারে।  সে সময় তাদের রক্তে ট্রাইগ্লিসারিন ৫০ গুন বেড়ে যায়। কিন্তু এতো ফ্যাট আসার পরেও রক্ত নালী বন্ধ হয়ে যায় না। মানুষের রক্তে  ট্রাইগ্লিসারিন বেড়ে গেলে; হার্ট  এ্যাটাক আর স্ট্রোকের সমূহ সম্ভবনা। এক ধরনের ফ্যাটি এসিডের সংমিশ্রণ, অজগরের স্বাস্থ্যকর হৃদপিণ্ডকে আরও বড় করে দিচ্ছে। পরীক্ষামুলকভাবে ইঁদুরকে এই সংমিশ্রণ ইনজেক্ট করে একই ফলাফল পাওয়া গেছে। ইদুরের হৃদপিণ্ড বড় হয়ে তার কাজের ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই আশাবাদী মানুষের হৃদযন্ত্রের সমস্যার প্রতিকার হয়তো এর থেকেই বেরিয়ে আসবে।

১১

স্বপনের ছবি আঁকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ইদ্রিসের দেয়া পেন্সিল দিয়ে আঁকছে। স্কেচ ফর্মে। যদিওবা এটা তার মাধ্যম না। যেহেতু রঙ পাওয়া যায় নি, তাই যা যাওয়া পাওয়া গেছে; তা নিয়ে কাজ করছে।  হাত ভারী হয়ে আসছে। হাতের পেন্সিলকে মনে হচ্ছে এক মণ ওজনের।

না কোন ভাবেই হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। যতক্ষণ প্রান আছে, ততক্ষণ কাজ চালিয়ে যেতে হবে।  শিল্পী জয়নাল আবেদিনের কথা মনে আসলো। তিনি আঁকছেন প্রতিবাদী গরুর ছবি  যা সব কিছু ভেঙ্গে চূরমার করে দিতে চাচ্ছে। চোখে ভেসে আসলো তার দুর্ভিক্ষ নিয়ে ছবিগুলোর কথা; মনে হয় বলছে, ভাত দে হারামজাদা!!

মাথাটা বেশী কাজ করতে চাচ্ছিল না। এটা শুধু ছবি না, এটা অনাগতের কাছে লেখা চিঠিও। এই মুহূর্তে চিন্তা করতে পারছে, চিঠিটা যার জন্যে তৈরি করা হচ্ছে, সে কখনও পাবে কি-না। অনেক কষ্টে হিসাব করলো, আজকে  অক্টোবার ২১, ১৯৭১; আজকে দশ মাস দশ দিন হচ্ছে। এমন হতে পারে আজকেই তার সন্তান পৃথিবীতে আসছে। আবার মনে হচ্ছে, তার পক্ষে আজকের দিনটা হয়তো পার করা সম্ভব হবে না।

হঠাৎ মনে হল, দূর থেকে ইদ্রিস বলছে, চাচা, আপনি মাটির মধ্যে পড়ে আছেন, আপনার কপাল তো জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। স্বপন গোঙ্গানির শব্দে বলল, যদি জয় কিংবা মুক্তি আসে, বলো ওইটা শুধু ছবিটা না ওইটা ওর চিঠি। ও না আসা পর্যন্ত যেন কেও ওইটা না ধরে। সেই পর্যন্ত অজগরগুলো ওইটা আগলিয়ে রাখবে। ওরা আমাকে কথা দিয়েছে।

ইদ্রিস বুঝল না, ছবি কি করে চিঠি হতে পারে।

তখন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।

১২

কবিরাজ  বিকালের মধ্যে  পাক সেনা নিয়ে আনোয়ারা খালার বাসায় হাজির। স্বপনের রক্তের দাগ বৃষ্টিতে মুছে গেছে। আর ঘরের মধ্যে যে দাগ লেগেছিল তা খালা মুছে ফেলেছে। হানাদাররা উর্দু ভাষায় কি কি সব বলল। খালা কিছুই বুঝল না। কবিরাজের ছেলে নুরুদ্দিন এসে বাবাকে কানে কানে কি যেন বলল।

তার পরে সবাই ছুটে গেল জংলা বাড়ির দিকে। অদ্ভুত দৃশ্য। সেটা কল্পনায় কেও ভাবতে পারবে না। হানাদাররা জংলা জায়গাটায় চারিদিক দিয়ে ঘিরে গুলি চালাতে লাগলো।  বড় বড় অনেকগুলো অজগর এসে চড়াও হল পাকদের উপরে। ছোট খাট কবিরাজকে এক আজগর আস্ত গিলে নিল। বাংলার মাটিতে রাজাকার, বিশ্বাসঘাতকদের কোন জায়গা হতে পারে না। হতে পারে না।

তিন জন উর্দি পড়া সৈনিক লুটিয়ে পড়ল বাংলার মাটিতে। অবশ্য বীর পাক্কুরা গুলি করে পাঁচটা বাংলার অজগর মেরে পতাকা উড়াতে চাইলো। এক সেনা হঠাৎ চিৎকার করে বলল, লাগতা ওর ভি আরা হে। পরের মুহূর্তে ব্যাটারা এমন ভয় পেল, যে এক দৌড়ে চলে গেল নদীর ঘাটে। সেখানে যে বাজার ছিল, সেখানকার সব দোকান পুড়িয়ে দিল।

পরের দিন কবিরাজের ছেলে  আবার গেল ক্যাম্পে। আবার খবর দিল,  স্বপন আসলেও ওই জংলা বাড়িতে, সে নিজের চোখে ইদ্রিসকে খাবার নিয়ে ওখানে যেতে দেখেছে। এক পাক্কু ক্যাপ্টেন বলল, তুম ভি মুক্তি হো। ফের হাম লোককো সাপসে মারানো কে লিয়ে আয়া। কথাটা শেষ করতে না করতেই এক ঝলক গুলি চালাল নুরুদ্দিনের বুকে, শালা গাদ্দার………ঘুঘু দেখা, ফাঁদ নেই দেখা।

১৩

পুরো শ্যামপুর গ্রাম ভেঙ্গে পড়ল ডঃ মুক্তি আর তার সহকারি শ্বেতাঙ্গ সারাহ জোন্সকে দেখতে। চারিদিকে রটে গেল, এমেরিকা থেকে দুই মেম এসেছে। একজন বাঙ্গালির মত দেখতে, আরেকজন লাল চামড়ার। তারা আবার জংলা বাড়িতে ঢুকবে। মৃদু গুঞ্জন চলতে লাগলো, ওদের হয়তো আর নিজের দেশে ফিরে যাওয়া হবে না। দু জন হয়তো আজগরের সাপের পেটে চলে যাবে।

গ্রামের বেশ বয়স্ক এক জন এসে জানতে চাইলো, আপনার নাম কি মুক্তি? মুক্তি খুব অবাক হল। এই গ্রাম দেশে অশিক্ষিত এক মানুষ তার নাম  কি করে জানতে পারে? মুক্তি বলল, আপনি জানলেন কি করে? উত্তরে ইদ্রিস বলল, আমি জানতাম আপনি আসবেন। আপনার একটা জিনিষ আছে ওই জংলা বাড়িতে।

১৪

ইদ্রিস দেখিয়ে দিল কোন দিক দিয়ে জংলা বাড়িতে যেতে হবে। বলল, আপনাকে একাই  যেতে হবে। চাচা যে দিন মারা গেল, সে দিন আমি আর দাদী মিলে, তার শরীরটা নিয়ে, কপোতাক্ষ নদীতে একটা বড় পাথর বেঁধে ঢুবিয়ে দেই। আমাদের দু জনের পক্ষে ওই বৃষ্টির মধ্যে মাটি খুঁড়ে কবর দেয়া সম্ভব ছিল না। আর কারোর সাহস ছিল না আমাদেরকে  সাহায্য করতে আসার।

ইদ্রিস বলল, আপনার বাবা মারা যাবার পরে ওই জংলায় যেতে চেষ্টা করেছিলাম। ভেবেছিলাম, আপনার জিনিষটা আমার কাছে নিয়ে এসে রাখবো। কিন্তু, অজগররা আমাকে জংলায় পর্যন্ত ডুকতে দেয় নি।

১৫

মুক্তি একাই চলল জংলা বাড়ির দিকে। চারিদিকে থরে থরে সব অজগর। তাকে ভিতরে যাবার জায়গা করে দিচ্ছে। শেষে বাড়িটার মধ্যে ডুকলো। ইদ্রিসের কথা মত প্রথম বাম দিকের কামরায় গেল। সেখানেই তার বাবা জাহিদুল হাসান স্বপন জীবনের শেষ কয়েকটা দিন কাটিয়েছিল।

অদ্ভুত। চল্লিশ বছর আগে বাবা, ইদ্রিস আর তার দাদী মিলে ঘরটা যেভাবে পরিস্কার করেছিল, ঘরটার  ঠিক সে রকমই আছে। ঘরের এক কোনায় একটা বড় কাগজে পেন্সিল স্কেচ। বড় একটা বিশ্ব মানচিত্রের গ্লোবের উপরে দুটো বলিষ্ঠ হাতে বাংলাদেশের পতাকা। পতাকার ঠিক মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র—লাল রঙের। বুঝল, লালা  রঙটা বাবার শরীরের রক্তের।  ঠিক মাথায় আসলো না, কি করে অরক্ষিত একটা পেন্সিল স্কেচ এত বছর পরেও ভাল থাকতে পারে। বাবার রক্ত তো এতদিনে শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে যাবার কথা।  তাও এখন কেমন করে জ্বল জ্বল করছে?

ছবিটার কোনার দিকে ইংলিশে লেখা, জাহিদুল হাসান, অক্টোবর ২১, ১৯৭১।

এ তো মুক্তির জন্মদিন। মুখের কেমন একটা হাসি বের হয়ে আসলো। মেয়ের জন্মদিন আর বাবার মৃত্যুদিন—–একই দিনে। এইটাও কি সম্ভব? বিধাতার এইটা কেমন খেলা?

দু’চোখে কখন অশ্রু ছাপিয়ে উঠলো অজান্তে । ঝাপসা চোখে চারিদিকে তাকিয়ে দেখল, সব গুলো জঙ্গলের অজগর মাথা তুলে তার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের হৃদপিণ্ড নিশ্চয়ই অনেক অনেক বড় হয়ে আছে।

আজগরেরাও কি কাঁদছে? তাদের দায়িত্ব কি শেষ হল?

হঠাৎ আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামল।

একেবারে ঝুম বৃষ্টি।

নভেম্বর ১২, ২০১১

www.lekhalekhi.net

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


10 Responses to স্বাধীনতার গল্প: ঝুম বৃষ্টি

You must be logged in to post a comment Login