অসীম শক্তির খোঁজে
কোনো বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকেই শক্তি বলে। শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই। শক্তি কেবল এক রুপ থেকে অন্যরুপে পরিবর্তিত হতে পারে। শক্তি কখনও নিস্ক্রিয় থাকতে পারে না। একটা পাটকাঠিকে বল প্রয়োগের মাধ্যমে ভাঙলে এর থেকে মুক্ত বা উৎপন্ন শক্তি নিস্ক্রয় থাকতে না পেরে শব্দের সৃষ্টি করে। শক্তি আছে বলেই মহাবিশ্ব গতিশীল। স্যার আইজ্যাক নিউটন এই ভেবে দারুণ হতাশায় ভুগেছেন যে মহাবিশ্বের কোন জায়গায় যদি মধ্যাকর্ষন শক্তি অকেজো হয়ে পড়ে তাহলে সমগ্র মহাবিশ্বে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি হবে। পরিনামে মানবজাতিসহ ধ্বংস হবে তামাম মহাশ্বিটাই। বিজ্ঞানী অ্যাস্টন’র মতে যদি একটি মোটরের দানা পরিমান কঠিন বস্তুর অন্তর্নিহিত শক্তিকে মুক্ত করা যায় তাহলে সে-শক্তি দিয়ে একটি মালবাহী ট্রেন নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন শহর পর্যন্ত অনায়াসে চালানো সম্বব। কঠিন বস্তুর অন্তর্নিহিত এই শক্তি মুক্ত করা সম্বব হলে তা মানুয়ের আওতার বাইরেও চলে যেতে পারে। আর যদি আবিস্কারের পর এই শক্তিকে মানুষ নিয়ন্ত্রন করতে না পারে তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যায় মানুষ হবে কল্পনার দেবতা শক্তির বাস্তর রুপ। আলোকে তরঙ্গ ও কণা উভয় ভাবেই পাওয়া যায়। একমাত্র আলোর ক্ষেত্রেই এক সাথে তরঙ্গ তত্ত্ব ও কনাতত্ত্ব উভয়ই সঠিক। কারণ-আলো তরঙ্গ আকারেও চলে আবার কণা আকারেও একে পাওয়া যায়। আর আলোক কণাকে বলা হয় ফোটন। সাম্প্রতিক সময়ে একদল বিজ্ঞনী এই ফোটনকেই দেখছেন অসাধারন শক্তির সম্ভবনার রুপে। বর্তমানে যে ইলেকট্রনিক যন্ত্র গুলো ইলেকট্রনের প্রবাহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সে যস্ত্রগুলোকেই যদি ফোটনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করানো সম্ভব হয় তাহলে এগুলো বর্তমানের চেয়ে শ শ গুন বেশি দ্রুত কাজ করবে। সেই সাথে কম্পিউটার জগতেও আসবে বিশাল পরিবর্তন। ইলেকট্রনিক্স চিপগুলোর প্রসেসিং ক্ষমতাও কল্পনাতীত বেডে যাবে। সুপার কন্ডাক্টর সম্পূর্ণ রোধহীন এক ধরনের পরিবাহী।আজ পর্যন্ত যা পৃথিবীর বুকে খোঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। আরএ অসম্ভবকেই সম্ভব করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে গবেষনায় নেমেছেন ভারতের একদল গবেষক। কোনো প্রকার সুপার কন্ডাক্টর পদার্থ আবিষ্কার করতে পারলেই রাতারাতি ইলেকট্রনিক্স জগতে আসবে আরও বিশাল ধরনের পরিবর্তন। আর্কিমিডস বলেছিলেন,আমাকে পৃথিবীর বাইরে দাড়ানোর মতো জায়গা করে দাও, আমি সমগ্র পৃথিবীটাকে নাড়িয়ে দেবো। ৬৬ কোটি টন ওজনের এই পৃথিবীটাকে একাই নাড়িয়ে দেবার মতো এমন দুঃসাহসিকতা ও বিশাল শক্তি তিটি কিভাবে পেয়েছিলেন? আসলে এই শক্তিটা তার বাহুতে ছিল না, ছিল তারই আবিস্কৃত সাধারন একটা সরল যন্ত্রের মধ্যে। সঠিক ও সুবিধাজনক স্থানে এই সরল যন্ত্র বসিয়ে বল প্রয়োগ করতে পারলে এর চেয়ে হয়তো দুঃসাধ্য কিছু করা সম্ভব। আলবার্ট আইস্টাইনের শক্তি সর্ম্পকিত বিখ্যাত সূত্রের বাস্তবিক শক্তি সর্ম্পকে আইস্টাইন নিজেও উদ্বিগ্ন ছিলেন। কারন সজাগ পৃথিবীকে মুহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দিতে এর চেয়ে উত্তম আর কিছু হতে পারে না। পৃথিবীর বুকে এখন যে পরিমান পারমানবিক বোমা মজুত করা হয়েছে একসাথে তার এক তৃতীয়াংশও যদি বিস্ফোরিত হয় তাহলে নিশ্চিত পৃথিবী মহাবিশ্বের বুকে ধূলিকানা হয়ে ভেসে বেড়াবে। মহাজাগতিক পথে মানুষ এখনও একা। আর পৃথিবী ও মহাবিশ্বের মাঝে সমস্ত শক্তিই মানুষের কল্যানের জন্য নিহিত রয়েছে। কিন্তু মানুষ আসলেই কী একে শুধুমাত্র কল্যাণের পথে ব্যবহার করবে(?)।
2 Responses to অসীম শক্তির খোঁজে
You must be logged in to post a comment Login