নিয়তির কোপানলে মৃত আজ বিশুদ্ধ কবিতা
হয়তো প্রকৃতি বিরূপ, নয়তো নিয়তির কোপানলে আজ
আমরা বিষণ্ণ কোনো ক্রান্তিকালে সরে গেছি। যে ভূমিতে আমাদের কোনো নিশ্চয়তা নেই
ঘর থেকে বের হলে পুনরায় ফিরে আসা যাবে পিতা-মাতা, স্ত্রী বা সন্তানের কাছে;
বিগত সময়গুলোর মতো। যেখানে জানে না নারী তার স্বামী, ভাই, পিতা কিংবা প্রেমিক
ও-বেলা ফিরবে কিনা সুস্থ আর নিরাপদ;
অথবা খবর কাগজে ছাপানো কোনো সন্ত্রাসীর লাশ হয়ে
আগামী কালের সংবাদ হবে কিনা অপরাধের পাতায়।
বুটের কর্কশ সোলে মাটি কাঁপিয়ে যখন রাস্তায় অথবা উন্মুক্ত জনপদে ওরা হেঁটে চলে, দাপিয়ে
বেড়ায় কাউকে রুখে দিতে ক্ষমতার ঘেরাটোপে; সেই দুর্বিনীত স্থবির সময়ে
বনের পাখিরা গান ভুলে খোঁজে নতুন আড়াল;
ছেড়ে দিয়ে শাবকের মায়া, প্রাণ ভয়ে উড়ে বসে ভিন্ন ডালে।
মহল্লার গলি কিংবা ডাস্টবিনের আড়ালে, ফুটপাতে, দোকানের ধূসর ছায়ায়
এমনকি অজ কোনো পাড়াগাঁয়ে শিশিরার্দ্র ক্ষেতের সীমায় বয়সী কুকুর
নির্বোধ চোখে দেখে তাদের পোশাক, হাতে ধরা মারণাস্ত্র;
ভুলে গিয়ে এঁটো-কাঁটা সন্ধান; ক্ষুধার যন্ত্রণা; যৌনতা।
এভাবেই ওরা ভালোবাসে নিজেদের করতে জাহির। মানুষ হয়েও
হিংস্র হায়েনা যেন ঘোর কোনো জঙ্গলের। রক্তের নেশায়
ক্রমাগত মাড়িয়ে চলে উন্নাসিক পাদচারণায়
কিশোর কিশোরীর হৃদয়-আরকে বেড়ে ওঠা সাধের বাগান;
যেন ভিন কোনো গ্রহে নির্বাসিত আজ
অতি চেনা, পরিচিত আমাদের দিনগুলো; লুণ্ঠিত কৌশলে যাবতীয় সাধ আর স্বপ্ন।
ওদের হাতে যদি তুলে দাও সদ্যজাত কোনো শিশু; কান্না রত; ক্ষুধা ক্লিষ্ট কাঁথায় জড়ানো;
নিদারুণ আতঙ্কের মুখে সে বিস্মৃত হবে চিৎকার, ক্ষুৎ-পিপাসা।
যদি তুলে দাও ওদের মুঠোতে ভালোবেসে রাশি রাশি জুঁই ফুলের পাপড়ি
তাহলে দেখবে, নিমেষে সেগুলো হায়,
হয়ে গেছে খসখসে রশুনের খোসা; গো-মূর্খের প্রবল প্রতাপে লহমায় মৃত যেন বিশুদ্ধ কবিতা;
অথবা দুরন্ত কোনো বদরাগী বালকের হাতে কুটিকুটি সদ্য কেনা ধারাপাত; আদর্শ লিপি।
১১.৫. ২০১১
20 Responses to নিয়তির কোপানলে মৃত আজ বিশুদ্ধ কবিতা
You must be logged in to post a comment Login