রাবেয়া রব্বানি

কিছু আলো, কিছু আঁধারঃ (কক্সবাজার)

কিছু আলো, কিছু আঁধারঃ (কক্সবাজার)
Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

(শুরুতেই বলে নেই আমি ভালো ক্যামারাম্যান নই।সবগুলো ছবি সাধারন লেন্সের ডিজিটাল ক্যামারায় আমিই তুলেছি।এটা ঠিক ফটোগ্রাফি না।ছবি তোলায় ট্রুটি মনে হলে ক্ষমা করবেন।)

কক্সবাজার-

কলাতলী বিচঃ-
দূর পাল্লার ভ্রমনে সারা রাত নির্ঘুম যাওয়ায় পৌঁছেই ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলাম,ঘুম ভাঙ্গল একেবারে সন্ধ্যায়।চোখ মেলে তাকিয়েই দেখলাম সূর্যাস্ত হচ্ছে,হোটেল কর্তৃপক্ষ কে মনে মনে ধন্যবাদ না দিয়ে পারলাম না। লোকেশনটি এমন ভাবে করা হয়েছে যাতে চার তলা থেকে ঘরের ভিতর শুয়ে শুয়েই সূর্যাস্ত দেখা যায়।বারান্দায় দরজার বদলে গ্লাস দেয়া যাতে ভিউ ভালো হয়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখলাম মানুষে মানুষে সৈকতটা ভরে গেছে। সন্ধ্যার মনোরম আলো,আকশের সাথে তাল রেখে সমুদ্রের রঙ ও কিছুটা ছাইরঙা। কোথাও ডিজিটাল ফুল ভলিউমে গান চলছে মনে হচ্ছে যেন আকাশ থেকে ভেসে আসছে। হাল্কা কমলা রোদ,শান্ত সাগর,তার সাথে রুপমের দরদ দিয়ে গাওয়া লাইনগুলো,
“আকাশে তোমায় রাখি/মাটিতে তোমায়/ভিতর-বাহির,কাছে-দুরে/যতনে রাখি তোমায়/তুমি আমার ভীষন খড়ায় মরা নদীর ঢেউ/তুমি ছাড়া পৃথিবীতে নেই আমার আর কেউ রে”।


ছবিগুলো আমার বারান্দা থেকে তোলা।


সুর্যাস্তের কমলা আলো।

সব মিলিয়ে বাকরুদ্ধ একটা অনুভুতি। সৌন্দর্য আর সংগীত একসাথে যে আবেগ তৈরী করতে পারে তা যে মানুষকে নিথর করে দেয় তাই বেশ বুঝতে পারলাম।
উপর থেকে অনেকটা জায়গা একসাথে দেখা যাচ্ছিল,দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছিল মানুষগুলো যেন এই অলৌকিক সুন্দরের কাছে স্তব্দ হয়ে আছে।
গানটা শেষ হয়ে বিজ্ঞাপন শুরু হয়।এবার উৎস খুজতে গিয়ে অবাক হতে হয়েছিল।কলাতলী বিচের প্রবেশ মুখে খুব ছোট দুইতলা ঘরের বাইরে হলো-গ্রাফিক টিভি স্ক্রিনে গানের সাথে ভিডিও ও দেখা যাচ্ছিল। পরে আশেপাশের মানুষদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, এটা ব্যাক্তি মালিকানায় তৈরী,এটাকে বোর্ড ঘর বলা হয় আঞ্চলিক ভাবে।এখানে আঞ্চলিক বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়।
আস্তে আস্তে সূর্য্য ডুবে যায়।মানুষের ভীড় ও কমে যায় তীর থেকে। জানুয়ারী মাসের উপকূলীয় শীত সন্ধ্যা হতেই ঝেঁকে বসতে শুরু করেছিল।


সূর্য্য ডুবে যাওয়ার পর কিছুক্ষণ।

হঠাৎ একটা বড় লাল ফানুস আকাশে ভেসে যেতে দেখা গেলো। ফানুস! আমি ভীষণ আলোড়িত হয়েছিলাম।কারন সেটাই ছিল আমার সচক্ষে দেখা প্রথম ফানুষ।সন্ধ্যার সূর্য্য ডোবা আকাশে লাল ফানুস দেখছিলাম যতক্ষণ দেখা যায়। রাত নয়টার মধ্যে জোয়ার চলে আসে। হোটেলের পনেরশ্ ফুট দুরত্ব পর্যন্ত ঢেউ এগিয়ে আসে। সে কি গর্জন!তার সাথে বড় বড় পাথর দেয়া বাধের উপর কিছু ছেলে হাততালি দিয়ে কোরাস গাইছিল।ঢেউয়ের গর্জনে মাঝে মাঝে তাদের গানের আওয়াজ চাপা পড়ে যাচ্ছিল।
সন্ধ্যার শান্ত সমুদ্র চেহারা পালটে কেমন রুদ্র,মাতাল রুপ নিয়ে নিয়েছিল। প্রবল বেগে আছড়ে পড়া এই শব্দ শুনতে আর দেখতে আবার মানুষের ছোট খাট জটলা রাস্তার দিকে।এক একটা ঢেউ আছড়ে পড়ার শব্দ যেন বুকে বাজছিল। আবিষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম অবাধ্য,দামাল সমুদ্রের আলোড়ন দেখতে দেখতে।
পরদিন সমুদ্রের কাছে গিয়ে মনে হলো আসলে আকাশের প্রতিফলন ছাড়াই এই বিচের পানি বেশ ঘোলা।এটা বহুল ব্যবহৃত বিচ।এখানে মানুষের চাপও খুব বেশি।তবে বেড়াতে আসা সকল শ্রেনীর মানুষগুলোকে দেখতে ভালো লাগছিল।এদের মধ্যে মধ্যবিত্তের চেহারার আনন্দ চোখে পড়ার মত।

পরদিন সকালে জেলেরা মাছ ধরছে।

হোটেলের ঠিক বাইরেই একি রকম দেখতে কিছু রেষ্টুরেন্ট যেগুলো কাঠের তৈরী।কাঠের পায়া দিয়ে এমন ভাবে তৈরী করা যে জোয়ার এলে পানির উপর ভেসে থাকে।উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখতে দেখতে খাওয়া যায়।খাওয়ার জন্য না শুধু বসে থাকতেই মন চাইবে। চার পাচ দিন একটানা গিয়েছিলাম তাই একরকম মায়াও পড়ে গিয়েছিলো। আমি টিভির খবর আর সংবাদপত্র দুটোই পড়ি না বললেই চলে তাই অনেক কিছুই ইদানিং জানিনা,যেমন পরে ঢাকায় এসে হঠাৎ একটা টিভি প্রতিবেদন চোখে পড়ল তাতে জানতে পারলাম ওগুলো অবৈধ স্থাপনা। যে জায়গায় রেস্টুরেন্টগুলো স্থাপিত তা সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে পড়ে কিন্তু ব্যবসায়ীদের এগুলো দেখার বিষয় না তারা জায়গাটা দেখেছে মার্কেট হিসাবে যেখানে সঠিক ভোক্তা পাওয়া যাবে।আমার মনে হয় শুধু বাংলাদেশ না অনেক দেশেই টাকার লোভে সব কিছুরই তেরোটা বাজানো যায় আর সংরক্ষিত এলাকা একটা ব্যাপার!


এগুলো সেই হোটেল।


ভাটার সময় সমূদ্র একটু দূরে চলে যায়।

ওখানে খেতে গিয়ে পরদিন দু,একজন ছেলে কাছে এসে জিজ্ঞেস করল,”আফা গান শুনবেন”।আমি বুঝতে না পেরে বললাম,মানে? ছেলে দুটো সাথে সাথে চমৎকার সুরে গান শুরু করল। যেকোনো গানই এরা গাইতে পারে।দশ বিশ টাকার জন্য গলা ফুলিয়ে এদের কণ্ঠ ভারী করে গাওয়ার চেষ্টা না দেখলে বোঝা যাবে না। ভেবেছিলাম এই এলাকায় এই ছেলে দুটোই বুঝি গান গায় আর ভালোও লেগেছিল বেশ!তাই পরদিন রাতে ওদের খোজ করলাম কিন্তু দেখলাম এখানেও মার্কেট।দুই তিন গ্রুপ চলে এসেছে। কক্সবাজারে এত ক্ষুদেগানরাজ আছে দেখে অবাক হলাম।এ ওকে বলছে, “না তরে না আমারে ডাকছে”।ওদের ঝগড়া থামিতে দিয়ে বললাম, “আচ্ছা সবাই দুটো করে গাও”। কেউ তেমন সন্তুষ্ট হলো না, মনে হলো টাকা ভাগ হবার ভয় ছিল হয়ত।আসলে ক্ষুধার বাজার সবসময়ই প্রতিযোগিতামূলক।
সবার গলাই যে ভালো তা না। কিন্তু রাত দশটায় সবারই ঘুম ঘুম চোখ,গানে অমনোযোগিতা, চেহারায় ময়লা মনে হচ্ছিল দায়ে পড়ে গাইছিল অনেকটা দ্রুত।হয়ত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার তাড়া, হয়ত ক্ষুধার।আমিও গানে অমনোযোগী হয়ে ওদের দেখতে লাগলাম।

আমাদের ক্ষুদে (ক্ষুধার) গানরাজ।

ছেলেটি গাইছিল ভালোবাসো কিনা বাসো বন্ধু টেরাই কর আমারে………………

হিমছড়ি

হিমছড়ি গেলাম জিপে করে।ওখানে হোটেলগুলোর সামনেই জিপ ভাড়া পাওয়া যায়।কলাতলী থেকে হিমছড়ি যেতে খুব সুন্দর পথ পড়ে।লাল মাটির পাহাড় তাতে হাল্কা সবুজ,কখনো গাড় সবুজ ছোট ছোট গাছ,অপর পাশে নীল সমুদ্র,সৈকতের সাদাটে বালি, মাঝে মাঝে পানের বরজ গাড় খয়ের রঙ্গের, আকাশ খুব নীল।মনে হয় অঙ্গগুলো প্রাকৃতিক না যেন আরোপ করা হয়েছে।কোন শিল্পী ইচ্ছেমত রঙ দিয়ে এঁকেছে।অদ্ভুত সব রঙ এর কারুকাজ।
হিমছড়িতে মানুষ খুব আয়োজন করে যায় তবে হতাশ হবার মতই ঝর্নাধারা।খুব ছোট ধারার একটা ঝর্না তবে দর্শনীয় স্থান হিসাবে প্রচলিত হওয়ায় এই অপূর্ণতা ধামাচাপা দিতেই কিংবা ব্যাবসায়ীকে পুজি হিসাবে কিছু জিনিস কৃত্রিম স্পট তৈরী করা একে ঘিরে।পাশের পাহাড়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে মোটেল আর রেষ্টুরেন্ট শুনলাম আছে তবে যাওয়া হয় নি।
ঝর্না টিতে অযত্নের ছাপ স্পষ্ট হলেও একে ঘিরে ব্যাবসায়িক যত্নের কোন অপূর্ণতা নেই। বরং ওটা সাড়ে ষোলো আনা।তবে মানুষের আনন্দ দেখে ভালো লাগল।দেখলাম শীতের সময়ও কিছু তরুন এই ঝর্নার পানিতে গোসল করছে।


অযত্নের ছাপ স্পষ্ট।

আনন্দিত তরুনদল।

ঝর্নাটি

ইনানী-
ইনানী সৈকতটা অনেকটাই প্রাকৃতিক।অনেক বড় বেলাভূমি পানি ভীষন স্বচ্ছ আর নীল।আশেপাশে বসতি নাই।একেবারে সঠিক উপকূলীয় আবহাওয়া এখানে।এখানের পানিতে নামলে উঠতে ইচ্ছা করবে না।কলাতলী আর লাবনী বিচ এ পানি ঘোলা অনেকটা বালি আর ময়লা ভাব আছে।কিন্তু এখানে পানি বেশ নির্মল।


ইনানী বিচ এ অনেকটা হেটে যেতে হয় মাঝে এই সেতুটা পড়ে।

ইনানী বিচের স্বচ্ছ পানি আর বেলাভূমি।

লাবনী বিচ
সমুদ্রে এটা আমার প্রথম ভ্রমন নয়।সৌভাগ্যজনক ভাবে এই পর্যন্ত তিন বার আসা হয়ে ছিল এই স্বপ্ন নগরে। আমি প্রথম বার যখন আসি তা প্রায় দশ বছর আগে,সে বার লাবনী বিচ এ ছিলাম। তখন এতটা বুঝতে চাওয়ার বয়স ছিল না।তবে মনে পড়ে,লাবনী বিচটা একটু শুনশান হয়ে যেত ভর দুপুর আর সন্ধ্যার পর। ফাকা রাস্তা গুলোতে রিকশাই ছিল একমাত্র বাহন যা অসুবিধা সাপেক্ষেই নেয়া হতো,আর চোখেও পড়ত হাতে গোনা।তখন রাস্তায় হেটে আমার মনে হয়েছিল এত সুন্দর হয় এত নিরিবিলি কোন রাস্তা হয়!মানুষের কোন তাড়া নেই রিকশাওয়ালাদের মাঝেও সহানুভূতি আর গল্প বলার প্রবণতা দেখেছিলাম।
তখন আমরা যারা একসাথে এসেছিলাম সমবয়সী বোন,ভাগ্নী তাদের অনেকেই এখন দেশের বাইরে।এই বিচ এর স্মৃতিগুলো খুব সুন্দর ছিল তাই এখানে আসলেই নস্টালজিক হয়ে পড়ি।কিন্তু সন্ধ্যার দিকে এসে পুরোদমে হতাশ হতে হলো,
মানুষের ফুচকা বিলাস দর্শনীয় কোন স্থান ছাড়েনি জানতাম কিন্তু তা যে সমুদ্রকে ও কব্জা করে ফেলবে জানতাম না।যতদূর চোখ যায় সারী সারী ফুচকার দোকান। এই বিচেও দেখলাম বোর্ড ঘর।তাতে ফারুকীর নাটক চলছে,অনেক মানুষ জড়ো হয়ে নাটক দেখছে।
সন্ধ্যার দিকে এই সৈকতে মানুষ না থাকলেও বিচ লাগোয়া মার্কেটগুলোতে মানুষ উপচে পড়ছে।মার্কেটের সাথের খাবারের দোকানগুলোতে সী-ফুড নেই বরং ফুসকা আর কাবাব জনপ্রিয় মনে হলো।কাপড়ের দোকানগুলোতে এখানকার ঐতিহ্যবাহি কাপড়ের চেয়ে ঢাকাইয়া কাপড় বেশি চোখে পড়ল।শুধু শোপিস গুলোতে ওখানকার ছাপ।
আর ঝিনুকের দোকানের সংখ্যা হাতে গুনে শেষ করা যাবে না।কিন্তু এখানে খরিদ্দার নেই বললেই চলে।তবু সারি সারি দোকানে স্বল্প জীবী মানুষ ঠিক ঠায় বসে আছে।


লাইট না থাকার কারনে ভালো আসেনি ছবিটা।ফুসকার দোকানের সারি।

মাঝখানে যেবার এসেছিলাম প্রায় তিন-চার বছর আগে,সেবার এত কিছু খেয়াল করতে পারিনি সময় কম ছিল।কিংবা পরিবর্তনের গতি একটু কম ছিল তাই চোখ সওয়া ছিল কিছুটা তবে এইবার গতিটা মনে হলো চাকার পায়ে ভর করেছিল তাই বেশ চোখে লাগল।
এবার রাস্তাগুলো তেমন আলাদা করতে পারলাম না।সবখানে মানুষ, ভ্রাম্যমান মনোহারী দোকান।প্রচুর নতুন দোকান।সবখানেই মানুষের বাড়তি চাপ।ব্যবসায় টা কক্সবাজারকে একেবারে কব্জা করে ফেলেছে।এখানে কর্মসংস্থানের একটা উৎকৃষ্ট বাজার হয়ে গেছে। সবচেয়ে খারাপ লেগেছে দেখতে সেটা হলো অসংখ্য বিল্ডিং এর কঙ্কাল তৈরী হচ্ছে।কলাতলী থেকে লাবনী যেখানেই চোখ যাবে শুধু আন্ডার কন্সট্রাকশন হোটেল যার বেশির ভাগই অবৈধ।অসুন্দরের ছবি তুলতে ইচ্ছে হয় নি তাই তুলিনি।এত বড় বড় ব্যাবসায়ীদের মধ্যে গান গাওয়া ছেলেরা, ঝিনুকের মালা হাতে নিয়ে বেচা ছোট ছোট মেয়েরা আর ছোট খাট দোকানে বসে থাকা খরিদ্দারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা মানুষগুলোকে উদাস দেখা যায়।

এত বৈ্রীতা দেখেও আসার দিন খুব কষ্ট হলো।সমুদ্রকে ফেলে আসতে আমার ধারনা সবারই কষ্ট হয়।সমুদ্রের সামনে দাঁড়ানোর আনন্দ আর ফেলে আসার কষ্ট একি মাত্রার। মনে মনে বললাম ,“ আবার দেখা হবে সমূদ্র”।


উপর থেকে কক্সবাজার শহর।কুয়াশার কারনে স্পষ্ট না।


বাথরুমের পানি ভর্তি বালতি নয়ে খেলার অনুমতি পায় না যে হঠাৎ সমূদ্রের সামনে পড়ে সে যে উচ্ছাসিত হয়ে ছিল সেই ছবিটাই খুজে পেলাম না।এখানে পানিতে নিমগ্ন আমার মেয়ে।

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


46 Responses to কিছু আলো, কিছু আঁধারঃ (কক্সবাজার)

You must be logged in to post a comment Login