হার না-মানা লড়াই
জীবনযুদ্ধের কঠিনতম সময়ে হার না-মেনে বেঁচে থাকাটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন তখন দু’মুঠো ভাতের। অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা অনুকূলে না থাকলে বাধ্য হয়েই প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে নিজের প্রয়োজনকে মেটাতে চায় মানুষ। কেউ ন্যায়ের পথে, কেউবা ভিন্ন প্রক্রিয়ায়। আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমনকি পুরুষালি শৃঙ্খল-বলয় ভেঙে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে একসময় অকূল সাগর পাড়ি দিতে জীবনযুদ্ধে ঝাঁপ দেয় নারীরাও। প্রাণান্ত প্রচেষ্টার সাথে সু-কোমল হাত নিমেষেই হয়ে ওঠে বজ্রকঠিন। বুক বিদীর্ণ করা হাহাকার পাথরচাপা দিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে তখন নারীকেও বলতে শোনা যায়— ‘আমিও মানুষ, আমিও বেঁচে থাকতে চাই, আমারও বাঁচার অধিকার আছে।’ উপরের ছবিটি তারই মূর্ত প্রতীক।
নাম খালেদা। জামালপুর জেলা সদরের টিক্কাপট্টির ২৩ বছরের এ যুবতী পৌর শহরে প্রায় ১ বছর ধরে রিকশা চালিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে ৩ সদস্যের পরিবার। মানসিক বিকারগ্রস্থ বিধবা মা মিনারা বেগম, সে ও তার ২ বছরের সন্তানের মুখে দু’বেলা আহার জুটাতে বেছে নিয়েছে নারীর জন্য কঠিনতম এ পেশা। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার আগেই অন্য নারীর প্রলোভনে তাকে ছেড়ে চলে গেছে স্বামী। তবু তার আক্ষেপ নেই এতটুকুও। একটাই চিন্তা সন্তানটাকে মানুষ করা আর অন্যের করুণা ছাড়া নিজস্ব পরিশ্রম আর স্বাধীনতায় বেঁচে থাকা। সমাজ কী মনে করলো এবং কার কী এলো-গেল এতে তার ভ্রুক্ষেপ নেই মোটেও।
জামালপুর জেলা শহরের রাস্তায় চলতিপথে এই দৃশ্য দেখে চোখটা থমকে যায় আচমকা। তাকে ডাক দিয়ে থামিয়ে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া গেল। হঠাৎই মন থেকে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস বলে উঠলো, হায়রে পুরুষ জাতি… যারা নারীকে ঘরকুনো করতে চায়, শুধুই ভোগের সামগ্রী মনে করে, তারপরেও নারীর উপরই যখন দোষের পাহাড় চাপায়; সেই সমাজপতি, তাদের পা-চাটা নারী নেতৃবৃন্দ এবং ফতোয়াবাজরা এখন কোথায়…? লজ্জা হয় না…
14 Responses to হার না-মানা লড়াই
You must be logged in to post a comment Login
-এভাবেই একজন মানুষের মেরুদণ্ড শক্ত হয়ে উঠতে থাকে। কিন্তু পুরুষ যদি লজ্জিত হয় তাহলে ফের করুণার কথা আসে। নারী করুণা চায় না- এটি অনেক শক্তিশালী একটি শ্লোগান।
সঠিক।
না জুলিয়ান, সে যদি গৃহবধূ হয়ে সাংসারিক কর্মে ব্যাপৃত থাকতো, নিগৃহীত না হতো, তার ন্যায্য সাহায্য-সহযোগিতা পেতো সমাজপতিদের কাছ থেকে তবে তো তাকে পথে বেরুতে হতো না। তাহলে তাকে পথে নামাতে বাধ্য করলো কে? পুরুষ। আবার এই পুরুষরাই নারীকে বাইরে পাঠাতে চায় না, এটা তো মিথ্যা নয়।
হ্যাঁ। এই শ্লোগানকে আবার অবদমিত করে কিছু অবিবেচক পুরুষেরাই।
ধন্যবাদ আপনাকে, পাঠে মন্তব্য করার জন্য।
:-bd
ধন্যবাদ ফর শেয়ার।
হঠাৎই মন থেকে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস বলে উঠলো, হায়রে পুরুষ জাতি… এথন লজ্জা হয় না…
থ্যাঙ্কস ফর রিড।
লজ্জা হয় না … আপনার সাথে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা হলো
করতে পারেন।
যাদের লজ্জা আছে তাদের লজ্জা হয় , যাদের লজ্জাই নেই তাদের আর কী ?
… খবরটা আসলেই লজ্জাজনক , তারপরেও এমন খবর প্রকাশ হোক প্রতিধ্বনিতে । ঠিক এমনটাই … ” লজ্জা হয় না ? ”
হয়তো এতে লজ্জা না পেলেও কিছুটা ভয় পেতে পারে , কী জানি ! হয়তো হ্যাঁ হয়তো না !
ধন্যবাদ শৈবাল।
মনকে নাড়া দেবার মতো একটা খবর, যেখানে পুরুষরাই অলস-অকর্মণ্য, কাজকে ভয় পায়, বেহুদা গেজানি দেয় কিন্তু অপকর্ম করতে বাধে না; সেখানে এই মেয়েটিই ইতিবাচক।
গর্বে বুক ভরে ওঠা সালাম খালেদা।
লাল শুভেচ্ছা বহ্নি। :rose:
শুধু স্যালুট-সালামের মধ্য দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয় আপনাদের কর্তব্য। হায় হায়, চমৎকার, দারুণ লিখেছেন ইত্যাদি বলে বলে আপনারা এখন বড্ড ক্লান্ত। তাই, দায়িত্ববোধের ধারেকাছে ঘেঁষেন না বাড়তি চাপের কারণে নাকি দমিয়েই রাখতে চান কেয়ামত তক?
কল্যাণ হোক।
শান্তির স্নিগ্ধতা পাঠালাম, নিও।
এ দায়বদ্ধতা কার…..
সষ্টার ?
নাকি,
মানুষ নামের জানুয়ারদের ? এই সমাজের ?
দেশের গণতন্ত্র অথবা সংবিধান ?