আহমেদ মাহির

অনুগল্প: অপেক্ষা

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

মহিম চৌধুরী এখন কাজিপাড়া পান্থকুঞ্জ এর সামনে দাঁড়িয়ে। বাইশ বছর আগে এখানেই থাকত সুপ্ত। এটা সুপ্তর বাসা ছিল না; সুপ্তর মামার বাসা। হয়ত এখানেই সুপ্তর ঠিকানা পাওয়া যাবে। বাইশ বছর পর দেশে ফিরে এভাবেই স্কুল জীবনের বন্ধু সুপ্তকে খুঁজছে মহিম। হয়ত সুপ্তকে না, সুপ্তকে খোঁজার ছলে অন্য কাউকে কিংবা স্মৃতিকে অথবা বর্তমানকে। কখনো কখনো তো মানুষকে তার বর্তমানও খুঁজতে হয়!

সুপ্তর মামার নামটা ঠিক মনে পড়ছে না। কী যেন…হয়ত সংকর ঘোষ কিংবা সুনীল ঘোষ…কী যেন…বাসার সামনেই একটা চা’র দোকান ছিল। সুপ্তর বাসায় এলেই, সুপ্ত সে দোকানটি থেকে সিগারেট কিনে দিত। কী দিন ছিল! সিগারেট কিনলে বাস ভাড়ায় কমতি পড়ে যেত। মহিম আপন মনে হাসল একটু যেন।

চা’র দোকানটি নেই। সেখানে ঢেউ টিনে ছাওয়া একটি খাওয়ার হোটেল। মহিম হোটেলে ঢুকল। কাউন্টারে তেল চিটচিটে নোংরা একটি কাঠের টেবিল। টেবিলের ওপাশে মাঝ বয়সী এক লোক বসা।

মহিম বিনীতভাবে নমষ্কার দিল। টেবিলের ওপাশে বসা লোকটি হয়ত খানিকটা বিরক্ত হয়েছেন কিংবা মহিমকে সন্দেহের চোখে ভ্রু কুঁচকে দেখছেন। সন্দেহের চোখে দেখার মত কোনো বেশভুষো অবশ্যি মহিমের না। তার পরনে ধুসর বর্ণের পাঞ্জাবি ও হালকা নীল জিন্স ; কাঁধে ক্যামেরার ব্যাগ। আলসেমির কারনে গত দু’দিন শেভ করা হয় নি। গালে তাই খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি। এটি হয়ত সন্দেহের কারণ হতে পারে। এ দেশের মানুষ ইদানিং দাঁড়িওয়ালা কোনো কাউকে কোনো জানা কিংবা অজানা কারনে কেমন যেন সন্দেহের চোখে দেখে।

টেবিলের ওপাশে বসা লোকটি নমষ্কারের উত্তর না দিয়েই বললেন, কি চাই?

মহিমের স্বভাবসুলভ বিনীত ভঙ্গিটি বজায় রইল। ১২৭ নম্বর বাড়িটায় ; মানে ‘পান্থকুঞ্জে’, সংকর কিংবা সুনীল নামে এক ভদ্রলোক থাকতেন। উনারা কি এখনো আছেন?

হোটেল মালিক কিংবা কাউন্টারম্যানের ভ্রুর কুঞ্চন এবারে খানিকটা প্রসারিত হল। আপনে মনে হয় মেলাদিন পরে আসছেন? সুনীল দা’ তো গত শীতে মারা গেলেন। তয়, স্বপ্নীল দা’ থাকেন এখানে। সুনীল দা’র বড় পোলা।

সুপ্তর মামার মৃত্যু সংবাদ মহিমের মনে খুব একটা রেখাপাত করল বলে মনে হল না। মহিম যেন বেশ খানিকটা উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞাসা করল, ভাই, উনাকে এখন বাসায় পাওয়া যাবে?

– আইজ হইল গিয়া শুক্রুবার। স্বপ্নীল দা’র তো বাসাতেই থাকনের কথা। সকালেও তো চা খাইয়া গেল।

নিজের অজানে-ই হয়ত মহিমের মুখে একটুখানি স্বস্তির হাসি ফুটে উঠল।

♣♣

পান্থকুঞ্জের তৃতীয় তলার দুই নং ফ্ল্যাটের দরজায় দাঁড়িয়ে কলিংবেলের সুইচ টিপে মহিম আপন মনে ভাবছিলত, বাইশ বছর আগে শেষবার দেখার পর থেকে বাড়িটির এতটুকু পরিবর্তন হয় নি!

দরজা খুলল সাত-আট বছর বয়সী একটি মেয়ে। অবশ্যি দরজা খুলল বললে ভুল হবে। বরং বলা চলে, দরজা সামান্য ফাঁকা করে উঁকি দিল। মেয়েটি বেশ মিষ্টি কন্ঠে বলল , জ্বি, বলুন?

মহিম অকারনেই যেন অস্বস্তি বোধ করল; মনের ভেতরে সযতনে গোপন করে রাখা কোন কথা বের হয়ে আসার গোছের অস্বস্তি। স্বপ্নীল ঘোষ আছেন?

মেয়েটি প্রশ্নের উত্তর দিল না। আপনার পরিচয়?

মহিম একটু হেসে বলল, আমি মহিম চৌধুরী। সুপ্তর বন্ধু।

দরজার ফাঁকা একটু প্রসারিত হল। বড় কাকাবাবুর বন্ধু?

মহিমের হাসিও প্রসারিত হল। সুপ্ত কাকাবাবুর।

একটু অপেক্ষা করুন, বলেই মেয়েটি দরজা ভেজিয়ে দিল।

এতদিন পর দেশে ফিরে একটি পরিবর্তন মহিমের চোখে বেশ কড়া ভাবে লেগেছে। বাঙালি, জাতি হিসেবে আরও সন্দেহপ্রবন হয়েছে। কমেছে মানুষে মানুষে বিশ্বস্ততা। এখন কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। আশ্চর্য!

দরজা যিনি খুললেন তার বয়স ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ এর মাঝামাঝিই হবে।

– আপনি সুপ্তদা’র বন্ধু ?

– হু। স্কুল জীবনের।

– আসুন। ভেতরে আসুন।

বেশ গোছানো হয়েছে বাসাটি। সম্ভবত স্বপ্নীলের গিন্নিটি বেশ গোছানো রুচির। ড্রইংরুমের সবেতেই একটি পরিষ্কার গোছনো রুচির ছাপ লেগে আছে। মহিম বেশ মনযোগ দিয়ে ড্রইংরুম দেখছিল। স্বপ্নীল বললেন, এ বাসার ঠিকানা কি করে পেলেন?

– সুপ্ত ভার্সিটিতে পড়ার সময়ের প্রথম দিকে এখনেই থাকত। তখন বেশ আসতাম এখানে।

– আপনাকে আগে কখনো দেখিনি।

– আপনি তখন সম্ভবত দার্জিলিং-এ পড়তেন।

– হ্যা, তা পড়তাম। কি ব্যাপার বলুন তো?

মহিম স্বপ্নীলের ভেতরের চাপা উত্তেজনা বেশ উপভোগ করছিল। মহিম মৃদু হেসে বলল, আমার সাথে দীর্ঘদিন সুপ্ত’র কোন যোগাযোগ নেই। ওর কোন ঠিকানা কি আপনার কাছে আছে?

– সুপ্ত দা’ তো এখন চিটাগাং থাকেন। কি যেন একটা কোম্পানীর এম.ডি.।

মহিম তার চেহারায় হতাশার কোন রাখঢাক করল না। কোন যোগাযোগের নম্বর?

– হ্যাঁ, হ্যাঁ, তা আছে।

মহিমকে বসতে বলে স্বপ্নীল ঘোষ ভেতরের ঘরে চলে গেলেন।

মহিম বেশ চঞ্চল বোধ করছে। কোনো অদৃশ্য তাড়া নিজের ভেতরে বোধ করছে বেশ কিছুদিন থেকে। হুট করে এত বছর পর দেশে আসাটা সে জন্যেই। হৃদয়ের দাসত্ব করে মহিম একটা জীবনের প্রায় পুরোটাই পার করে দিয়েছে। মহিমের মত কিছু মানুষের জন্মই হয় হৃদয়ের দাসত্ব করার জন্যে। হৃদয়ের দাসত্বে তারা নিঃস্ব হয়; তবু তাদের দাসত্ব- আমৃত্যু দাসত্ব!

কাকু একটু জলখাবার খেয়ে নিন। স্বপ্নীলের মেয়েটির কথায় মহিম ঘোরের ভেতর থেকে বাস্তবে ফিরে এল। আম্মি বাসায় নেই তো, খুব একটা আয়োজনও সে কারণে নেই।

মহিম ছোট বাচ্চা মেয়েটির ব্যবহারে অভিভূত হল। সে হালকা শব্দে হাসল। কি নাম তোমার, মা?

– অরুন্ধুতি ঘোষ অর্চনা। আম্মির নামের সাথে মিলিয়ে রাখা নাম। আমার আম্মির নাম সূচনা।

– কোন ক্লাসে পড় তুমি, অর্চনা?

– ক্লাস থ্রি ; ভিকারুননিসা নূন স্কুল।

মহিম তার ক্যামেরার ব্যাগ থেকে ইংল্যান্ড থেকে আনা টিম্বলারওয়ান চকলেট বের করে অর্চনার দিকে বাড়িয়ে দিল। নাও এটা।

– না। আম্মি অপরিচিত লোকের দেওয়া কিছু নিতে মানা করেছে। সরি!

মহিম হাসল। আমি তো অপরিচিত না। আমি মহিম চৌধুরী। বলে মহিম হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়াল। অর্চনাও হেসে হাত মেলাল। টিম্বারওয়ানও নিল। সম্ভবত মহিমের কথাবার্তা অর্চনার ভাল লেগেছে। শিশুরা বড়দের খুব সহজে পছন্দ করে, এমনটা খুব কম দেখা যায়। তবে মহিমকে খুব সহজেই শিশুরা পছন্দ করে। কেন করে, কে জানে।

ভেতরের ঘর থেকে বসার ঘরে স্বপ্নীল এলেন একটি চিরকুট হাতে। চিরকুটে সুপ্তর ঠিকানা; যোগাযোগের নম্বর। মহিম চিরকুট পকেটে স্বপ্নীল ঘোষের দরজায় দাঁড়িয়ে বলল, অসময়ে এসে আপনাকে বিরক্ত করলাম।

– না, না, এটা কোন ব্যাপার না।

মহিম তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এল। বের হল বেগম রোকেয়া স্মরনীতে। আগের বেবি-ট্যাক্সি এর সংস্কারিত রূপ সি.এন.জি.। ভাড়াও একই রকমের সংস্কারিত; প্রায় তিন গুণ সংস্কারিত। মহিম হোটেল সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে সংস্কারিত ভাড়ায় সি.এন.জি. ঠিক করল।

♥♥♥

সন্ধ্যার বেশ খানিক পর; প্রায় সাড়ে সাতটা বাজে। ধানমন্ডি লেকের পাড়ে রবীন্দ্র সরবরে বেশ মানুষের কোলাহল। কোন এক কোণে কোথাও একদল যুবক গীটারকে সঙ্গী করে বেশ সমস্বরে গান ধরেছে।

মহিম যেখানে বসেছে, সেখানে তেমন আলো আসছে না; তাই বেশ অন্ধকার। মহিম সোডিয়াম আলোয় অদ্ভূত আলোকিত মানুষগুলোকে দেখছে। এভাবেই দেখত মহিম আর সুপ্ত। সেই পরিচিত দেখা। কিছুই বদলে যায় নি। অন্তত ওপর থেক; খানিকটা ভেতর থেকেও।

মহিম প্যান্ট-পকেট থেকে সেলফোন আর পাঞ্জাবীর পকেট থেকে স্বপ্নী্ল ঘোষের বাসা থেকে আনা চিরকুটটি বের করল। মহিম সেলফোনের আলো ফেলল চিরকুটের উপর। নম্বরগুলো খুব করে মিলিয়ে সেলফোনের বাটনে চাপল।

– সুপ্ত দাস বলছি। কে বলছিলেন?

সুপ্তর ওপাশে প্রচন্ড কোলাহল। মহিম প্রয়োজনের চেয়ে একটু জোরেই বলল, মহিম। আমি মহিম।

সুপ্ত এক মুহুর্ত স্তব্ধ রইল যেন। এরপর সুপ্ত আগের চেয়ে খানিকটা ক্ষীণ স্বরে বলল, কে?

– আমি মহিম। মহিম চৌধুরী।

সুপ্ত আবারও এক মুহুর্ত স্তব্ধ রইল। এরপর সেলফোনের ওপাশের কোলাহলকে ছাপিয়ে কন্ঠস্বর উঠল সুপ্তর, মহিম ! দেশে এলি কবে? কেমন আছিস?

– আজ তো রবিবার; তবে এসেছি আজ পাঁচ দিন। তোর কি খবর? কেমন আছিস?

সুপ্ত ঠিক সেই আগের মত প্রকান্ড স্বরে হাসল। সুপ্ত দাস সব সময় ভাল থাকে। একটু হোল্ড কর।

সম্ভবত সেলফোনের ওপাশে সুপ্তর সাথে কেউ কথা বলছে। মহিম অপেক্ষা করছে।

– মহিম, আমাকে এখনই একটা মিটিং-এ বসতে হবে। তুই চিটাগাং কবে আসছিস বল।

– আমি, মঙ্গলবার মানে পরশু চলে যাচ্ছি।

সুপ্ত মনে হয় খানিকটা দমে গেল। আচ্ছা, রাতে কথা হবে।

– সুপ্ত, তুই কি স্বপ্নি’র ঠিকানা জানিস্?

প্রশ্নটি করার সময় মহিমের কন্ঠস্বর কি একটু জড়িয়ে গেল? সুপ্ত নিরুত্তর রইল। নিরবতা ভাঙল মহিমই। জানিস্ তুই?

– ওর বাসার ঠিকানা জানি না। তবে ও গুলশান কলেজের ইংরেজী বিভাগের হেড।

আচ্ছা রাতে কথা হবে। মহিমের কন্ঠস্বর ভীষণ ক্ষীণ শোনাল। তা আদৌ সুপ্ত’র কানে পৌঁছল কি না, কে জানে!

♦♦
♦♦

সোমবার; মধ্যাহ্ন। মহিম বসে আছে গুলশান কলেজের গার্জিয়ান’স্ ওয়েটিং রুমে। মহিমের পরনে গেরুয়া বর্ণের পাঞ্জাবী। কাঁধে ক্যানভাসের কালো ব্যাগ। আধুনিক বাংলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপ্যায়নের ব্যবসা আগের থেকে উন্নততর হয়েছে। শিক্ষার মান কতটা উন্নত হয়েছে, তা অবশ্যি মহিমের জানা নেই। ইতোমধ্যে মহিমকে চা দেওয়া হয়েছে। কলেজ দপ্তরির সাথে তখন কথা হল মহিমের।

– ভাই, স্বপ্নিতার ক্লাস কখন শেষ হবে?

– ম্যাডামের আজ পরপর দুইটা ক্লাস। বারটায় ক্লাস শেষ।

– ভাই, ধন্যবাদ।

– আপনে কি অত সময় বসবেন?

– আমার কোন তাড়া নেই।

– আচ্ছা, তবে আপনে পেপার পড়েন।

মহিম মৃদু হেসে পেপার হাতে নিল। দপ্তরি চলে গেল। মহিম পেপার হাতে বিশ মিনিট মত পার করল। এখনো বারটা বাজতে পঁচিশ মিনিট মত বাকি আছে।

মহিমের বাইশ বছর আগে দেশে ফেলে যাওয়া অস্থিরতা-চঞ্চলতা ঠিক আগের মত করেই আজ ফিরে এসেছে। মহিম কোন খবরই একনাগারে পড়তে পারছে না। দু’চার লাইন পড়বার পরই ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। আর ঘড়িটা যেন সে কারণেই ঘুরতে চাইছে না।

বারটা বেজেছে। ইলেট্রিক বেলের কান ঝালাপালা করা শব্দটিও থেমেছে মিনিট পাঁচেক আগে। মহিম সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। এখনো কেন আসছে না?

মহিম যখন তার ব্যাগটিকে কাঁধ পরিবর্তন করছিল, তখন দপ্তরি ওয়েটিং রুমে ঢুকল। ম্যাডাম আপনারে ডেকেছে।

মহিম বিড়বিড় করে বলল, সে আমারে ডেকেছে দুঃসহ আলোর পথে/ পথের প্রাণে- ত্রিকাল-ত্রিসত্যি-ত্রিভুবন/ আর আঘাতে আঘাতে জর্জরিত মন/ মিলে যায় হারানোর শপথে/…

স্যার কিছু বললেন? দপ্তরির কথায় চমকে উঠে মহিমের ঘোর ভেঙে গেল।

মহিম বিব্রত বোধ করল। না, না। কিছু বলিনি।

আসেন আমার সাথে। দপ্তরি মহিমের দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকাল।

ইংরেজী বিভাগ কলেজ বিল্ডিং-এর দোতলায়। মহিম ইংরেজী বিভাগে ঢুকেই সামনের কক্ষের দরজার ওপরে নেমপ্লেট দেখতে পেল-

SWAPNITA BISWAS
Head of Dept. of English

দরজার সামনে এসে দপ্তরি বলল, স্যার, আপনে ভিতরে যান।

মহিম দপ্তরির কথাগুলো শুনল কি না, কে জানে। তবে একটা অদ্ভূত, অপরিচিত অথচ নিজ কন্ঠে বলল, আসতে পারি?

ভেতর থেকে উত্তর এল, ইয়েস, কাম ইন।

ঠিক যেন কোন গ্রীষ্মে মাতাল হাওয়া দুই দশক পেছন থেকে উড়ে এসে স্পর্শ করল মহিমকে।

মহিম ভেতরে প্রবেশ করল। নিরবে কেটে গেল গুটিকয়েক মুহুর্ত। শুধুই অপলক চেয়ে থাকা। এরই মাঝে বিস্মৃতির প্রান্তর ডিঙিয়ে বিস্মৃত স্মৃতির খানিক অংশ খুঁজে ফেরা।

সেই একই স্বপ্নিতা! আজও নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে। চোখের তারায় সেই একই উজ্জ্বলতা; সহস্র জগতের রহস্য হাতছানি দিচ্ছে। আজও চুলগুলো কপালের ওপর সমুদ্রের ঢেউয়ের মত আছরে পড়ছে, ওকে অযথাই বিব্রত করার প্রয়াসে। শুধু সে চুলে আজ কিছু সাদা ছোপ পড়েছে। চশমার ফ্রেম আয়তনে কিছুটা বেড়েছে; কাঁচও পুরু হয়েছে বেশ। ব্যাস এটুকুই।

– কেমন আছ, স্বপ্নিতা? আমি কোন খবর না দিয়ে এসে কি তোমায় বিব্রত করলাম?

স্বপ্নিতা নিরুত্তর রইল।

– চিনতে পারছ আমায়?

– মহিম! এতদিন পর?

মহিম ক্ষীণ হাসল। বসতে পারি, ম্যাডাম?

এবারে স্বপ্নিতা হাসল। সেই অপূর্ব হাসিটি! হ্যাঁ, ঠিক সেই হাসিটিই! তুমি তো দেখছি এতটুকু বদলাওনি!

– তুমিও না, স্বপ্নিতা।

স্বপ্নিতার হাসিটি ম্লান হয়ে গেল।

– এখন কি ব্যস্ত থাকবে? নাকি ফ্রি আছ?

– আজ আমার আর কোন ক্লাস নেই। কেন?

– তবে তোমার সাথে লাঞ্চ করার ইচ্ছে ছিল। যদি তোমার কিংবা তোমার কর্তাবাবুটির কোন অমত না থাকে।

– অরিন্দম তেমন মনের না। একটু বোসো। আমি প্রিন্সিপাল স্যারকে বলে আসছি।

স্বপ্নিতা কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল; এমন সময় মহিম চেয়ারে বসেই পিছু ফিরে বলল, অরিন্দম বিশ্বাস?

স্বপ্নিতার ভ্রু-সন্ধিতে ভাঁজ পড়ল। হু ।

মহিম হেসে বলল, বেশ হয়েছে তো! তোমার পদবী বদলাতে হল না।

স্বপ্নিতা হেসে কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেল। মহিমের চশমার পেছনের ঘন কালো দু’ চোখে কি কিছু বিষাদের মেঘ দেখা গেল? কিন্তু এমন তো হবার নয়; কিংবা এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবু এমন হল কেন?

♠♠
♠♠♠

মহিম ও স্বপ্নিতা রেস্টুরেন্ট ক্যালেফোর্নিয়ার কোণে দু’ চেয়ারের একটি টেবিলে বসে খাবারের অপেক্ষা করছে। স্বপ্নিতা কি কিছুটা অস্বস্তি কিংবা বিব্রত বোধ করছে? মহিমের সাথে এভাবে রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দেওয়াটা তো নতুন কিছু না, হোক সে যতদিন আগের কথা। এ অস্বস্তি বোধ কিংবা বিব্রত বোধটা কি অস্বাভাবিক না! কে জানে, হয়ত এটাই স্বাভাবিক।

স্বপ্নিতা পেপার ন্যাপকিনে নাকের ঘাম মুছল।

মহিম হাসল। এখনো নাক ঘামে আগের মত?

– আগের মত না; আগের থেকে অনেক বেশি ঘামে।

মহিম – স্বপ্নিতা উভয়ই খানিকক্ষণ নিরব রইল। নিরবতা ভাঙল স্বপ্নিতা। দেশে কবে এলে?

– ৩১ জানুয়ারি।

– ক’দিন থাকছ?

– আগামীকাল বিকালে ফ্লাইট।

– এত বছর পর মাত্র পাঁচ দিনের জন্য!

– আসলে বিশেষ একটা কাজে এসেছি।

– ও! শিউলি কেমন আছে?

– ভালই বোধহয়। ও রামপুরায়, ওর জামাইর সাথে আছে।

– তোমার মা – বাবা?

মহিম একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল। মৃদু হসল। সে হাসিতে কি খানিকটা বিষন্নতারও ছোঁয়া ছিল? মহিম সরাসরি স্বপ্নিতার চোখে তাকাল। আমার মা – বাবা?

স্বপ্নিতা মাথা নিচু করে হাতের রেখাগুলোয় চোখ দিল। মহিম বলে চলল, মা অনেকদিন আগেই চলে গেছেন। বাবা পিরোজপুরে থাকেন।

– তোমাদের পিরোজপুরের বাড়ি না বিক্রি করে দিয়েছিলে?

– শিউলির বিয়ের আগে আগে, বাবা ছোট একটা বাড়ি করেছিলেন আবার।

ও। নিরর্থকভাবে স্বপ্নিতা কাশল। দেখা করেছ বাবা আর শিউলির সাথে?

– নাহ্! আমি এসেছি, তা ওরা কেউ জানে না।

– একা এসেছ? নাকি গিন্নিকেও সাথে করে এনেছ?

মহিম এবারে বিকট শব্দে হেসে উঠল। রেস্টুরেন্টের খদ্দেররা উঁকি-ঝুঁকি মেরে মহিমকে দেখতে লাগল। স্বপ্নিতাও অপ্রস্তুত হয়ে গেল। খানিকটা মহিম নিজেও। মহিম দ্রুত নিজেকে সামলে নিল। লজ্জিত চোখে বলল, সরি!

– এমন হাসির কোন প্রশ্ন করলাম কি?

– না, আসলে বিয়ে থা-ই তো করলাম না। আর তুমি আমার গিন্নির খবর চাইছ!

বিয়ে করনি? এটাও কি কোনো পাগলামো? স্বপ্নিতার কপালে স্পষ্ট বিরক্তির রেখা।

মহিমের হাসি এবারে কিছুটা ম্লান দেখাল। না। কেবলই প্রতীজ্ঞা আঁকড়ে থাকা।

– প্রতীজ্ঞার মানুষটিকে হারানোর পর প্রতীজ্ঞা রক্ষার কোন প্রয়োজন আছে কি?

-স্বপ্নি, মানুষ কোন প্রতীজ্ঞার অর্ধেকটাই অন্য কারো কাছে করে; বাকিটা করে তার নিজের কাছে। কখনো কখনো সম্পূর্ণ প্রতীজ্ঞাই তার নিজের থাকে। মানুষ তার জীবনে যত না অন্যের কাছে প্রতীজ্ঞা ভাঙে, তারচে’ বেশি ভাঙে নিজের কাছে।

স্বপ্নিতা কিছু বলতে যাচ্ছিল; ওয়েটার ট্রে-তে কেক নিয়ে আসায় বলা হল না। ট্রে-তে কেক, দু’টি গ্লাস, এক বোতল মিনারেল ওয়াটার, ছোট্ট একটি মোম আর একটা কাঠের হাতলওয়ালা ছুরি। কেকের উপর লেখা – “শুভ জন্মদিন স্বপ্নিতা”। ওয়েটার কেকের পাশে মোমটিকে জ্বালিয়ে দিল। গ্লাসে বোতল থেকে পানি ঢেলে দিল। মহিমের দিকে ফিরে বলল, স্যার, আর কিছু?

– না। আপাতত না।

ওয়েটার চলে গেলে মহিম স্বপ্নিতার চোখে চোখ রেখে বলল, স্বপ্নিতা, শুভ জন্মদিন!

স্বপ্নিতা নিরব রইল। স্বপ্নিতার চোখে জল টলমল করছে। মহিম এই প্রথম স্বপ্নিতার চোখে জল দেখল। মহিম, স্বপ্নিতার চোখ থেকে তার চোখ সরিয়ে নিল। মহিমের চোখেও কি একটু জ্বালা করছে? তবে বয়সের সাথে সাথে বুঝি মনেও শ্যাওলা জমতে শুরু করেছে? বড় অল্পেই জল গড়ায়! মহিম কোন রকমে নিজেকে সামলে নিল। কেকটা কাটবে তো না-কি?

স্বপ্নিতাও সামলে নিল নিজেকে। তুমি কি কেক দিয়েই লাঞ্চ করাবে?

– না, লাঞ্চের অর্ডার দেওয়া আছে।

– সব ব্যবস্থা কি আগেই করে রেখেছিলে?

মহিম হাসল শুধু। স্বপ্নিতা কেক কাটতে কাটতে বলল, তুমি এতটুকুও বদলে যাওনি। মহিম নিরুত্তর রইল। স্বপ্নিতা এক টুকরো কেক পুরে দিল। নিজেও এক টুকরো মুখে পুরল। এমনি সময় স্বপ্নিতার সেলফোন বেজে উঠল।

– মামনি, বাসায় ফিরেছ?

– আমি লাঞ্চ করছি। তুমি খেয়ে নাও। বুয়াকে বল, খাবার গরম দিয়ে দেবে।

– আমি চারটার মধ্যেই চলে আসব।

– আচ্ছা, মামনি। রাখছি।

স্বপ্নিতা সেলফোন হাতব্যাগে রেখে দিল। মহিম মৃদু হেসে বলল, তোমার মেয়ে?

– হু।

– কি নাম?

– সুপ্রভা।

– কোন ক্লাসে পড়ছে?

– ক্লাস নাইনে।

– ক’ ছেলে মেয়ে?

স্বপ্নিতা হাসল। ক’ ছেলে মেয়ে মানে? একটিই মেয়ে।

ওয়েটার লাঞ্চ দিয়ে গেল। মহিম – স্বপ্নিতা ধীরে খাচ্ছিল। স্বপ্নিতা বলল, কবিতা লেখা ছাড়া আর কি করছ ও দেশে?

দু’টো পত্রিকার জন্য ফটোগ্রাফি করছি। সাংবাদিক গোছের কিছু বলতে পার। মহিম পেপার ন্যাপকিনে ঠোঁট মুছল। জান, তন্ময়ী দিদি আত্মহত্যা করেছেন?

– তোমার পিসাতো বোন?

– হু।

– কেন?

– ওর বিয়েটা একটু জোর করেই দিয়েছিলেন পিসি। আর স্বামীর সাথেও বনছিল না ঠিক।

মহিম একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বেশ অস্পষ্টভাবে বলল, খামোখা।

– খামোখা মানে?

– স্বপ্নি, মানুষ মরে গিয়ে কিছু প্রমাণ করতে পারে না। এই যে দিদি মারা গেলেন, কি এসে গেল তাতে? ওর জামাই আবার বিয়ে করল। আমার স্কুল জীবনের বন্ধু সুখেন আত্মহত্যা করল, ওর পরিবারের অশান্তির জন্য। ওর মারা যাবার পরও ওর বাড়ি গিয়েছি বার কয়েক; সেখানে অশান্তি আরও বেড়েছে। শান্তনু দা’ আত্মহত্যা করলেন, ওর স্ত্রীর উশৃংখলতা সইতে না পেরে। কি হল তাতে? আজ ওর স্ত্রী লাস ভেগাসের কোন একটা ক্যাবারের ড্যান্সার!

মহিম কথাগুলো একশ্বাসে বলে হাপাতে লাগল। নাহ্! এতটা উত্তেজিত হওয়া উচিত হয়নি। ছোটো-খাটো একটা স্ট্রোকের পর ডাক্তার উত্তেজিত হতে একেবারে বারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু সে বারণ প্রায়ই মেনে চলা হয় না।

স্বপ্নিতা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল মহিমের দিকে। আমাদের সম্পর্ক চলাকালেই কিন্তু তুমি কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলে।

মহিম মৃদু হাসল। তখন অনেক কিছুই বুঝতাম না – জানতাম না, স্বপ্নি। আজ আমি জানি, আমি বেঁচে আছি বলেই, বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করতে পারি, আমি তোমায় ভালবাসি! মরে গেলে আমার নিজের কাছেও আমার ভালবাসার অনেকটা অংশ অজানা থেকে যেত।

– অনেক বুঝতে শিখেছ।

– বুড়ো হয়েছি না?

মহিম – স্বপ্নিতা উভয়ই বেশ করে হাসছিল। তখন কি কোন বহু বৎসরের পুরোনো পরিচিত স্মৃতি-গন্ধময় হাওয়া ওদের ছুঁয়ে গেল?

♣♣♣
♣♣♣

লাঞ্চ শেষ করে মহিম-স্বপ্নিতা রেস্টুরেন্টের বাইরে এসে দাঁড়াল। ধীরে ফুটপাত বেয়ে যাচ্ছিল ওরা। মহিম স্বপ্নিতার দিকে তাকিয়ে নীরবতা ভাঙল। সি.এন.জি. করে দেব?

– না, আমি বাসে যাব।

– আমি তোমাকে বাস স্টপেজ পর্যন্ত এগিয়ে দিতে পারি?

– ইয়োরোপিয়ানদের সাথে থেকে থেকে পুরো ফরম্যাল হয়ে গিয়েছ দেখছি। এসো।

– যতটুকু পেরেছি স্বাস্থ্য নিতে চেষ্টা করেছি; ব্যধি থেকে বরাবর দূরেই থেকেছি।

আবারও ওরা নীরবে হাঁটছিল। মহিমই পুনরায় নীরবতা ভাঙল। স্বপ্নি, তোমার কি মনে আছে, তোমার কাছে আমি একদিন প্রতীজ্ঞা করেছিলাম – তোমায় আমি এমন কোন উপহার দেব, যা পৃথিবীর কেউ তোমায় দিতে পারবে না?

স্বপ্নিতা হাসল। আমার কোন একটা জন্মদিনের চিঠিতে প্রতীজ্ঞাটা করেছিলে। সে জন্মদিনে তোমার অবস্থা ছিল, তোমার ভাষায় – ফকিরা কন্ডিশান।

– তোমার স্মৃতিশক্তি এতটা মারাত্মক; জানতাম না তো!

স্বপ্নিতা, মহিমের দিকে তাকিয়ে বলল, আমার বাস স্টপেজ এসে গেছে।

– তুমি এখানে দাঁড়াও, আমি টিকেট কেটে আনছি। কোন বাসের এবং কোথায় – এটুকু বল।

স্বপ্নিতা মহিমের বলার ধরন দেখে হেসে ফেলল। তরঙ্গ প্লাস্; খামারবাড়ি।

মহিম টিকেট কেটে এনে স্বপ্নিতার হাতে দিল। এরপর মহিম তার কাঁধের ব্যাগ খুলে উপহারের মোড়কবিহীন একটি বইও দিল। বইয়ের নাম ‘স্বপ্নিতা’। বইয়ের নামের নিচে লেখা – মহিম চৌধুরী।

মহিম হাসল। নাও, তোমার। তোমার জন্মদিনের উপহার।

স্বপ্নিতা হার্ডবোর্ড-বাঁধাই কভার উল্টে উৎসর্গের পাতায় চলে এল। উৎসর্গের পাতায়ও একটি কবিতা। কবিতাটির নিচে লেখা – ‘তোমায় দিলাম।…’

আজও বৃদ্ধ-জীর্ন-নড়বড়ে
অস্থি-চর্মসার হৃদয়ে
বেঁচে আছে তোমার প্রতি ভালবাসা!
ঠিক যেমন ছিল,
যখন হৃদয়ে ছিল স্বপ্নের প্লাবন;
গোপন ব্যথার অশ্রুতে নামত শ্রাবণ!

কত বসন্তের ফুল শুকিয়ে ঝরে গেল,
হৃদয়ের শত’ স্বপ্ন কেমন
মরা নদীর মত শুকিয়ে গেল;
আটচল্লিশ বছরের বৃদ্ধ হৃদয়
যেন অস্পৃশ্য হয়ে গেল;
কোন ব্যথাই আজ এর নাগাল পায় না!
অকস্মাৎ তোমার রূপান্তর স্মৃতিতে!

স্বপ্নিতার চোখ থেকে গাল বেয়ে অশ্রুকণাগুলো নীরবে নিচে নামছে। সে নিজেকে সামলে নেওয়ার কোন রকম চেষ্টা করল বলে মনে হল না। ঝাপসা চোখে স্বপ্নিতা পড়ে যেতে লাগল –

ইদনিং প্রায়ই পৃথিবীর কোলাহল
স্তব্ধ হয়ে যায়;
নিত্যদিনকার দূরদর্শন সংবাদের মতই
কে যেন একঘে’ শীতল কন্ঠে পাঠ করে
এক ক্ষুদ্র কম্পনের সমাপ্তির বার্তা!
তবু আজও, এ ভাঙা-জীর্ণ হৃদয়ে
বেঁচে আছে সেই চালতা ফুলের সুবাস;
বেঁচে আছ’ তুমি, স্বপ্নিতা!…

স্বপ্নিতা নীরবে বইটি বন্ধ করে হাত ব্যাগে রাখল। পেপার ন্যাপকিনে মুখ মুছল। বাস এসে গেছে। হেলপার চেঁচিয়ে যাত্রী ডাকছে। স্বপ্নিতা, মহিমের দিকে না তাকিয়েই বলল, যাচ্ছি।

মহিম পেঁছন থেকে স্বপ্নিতাকে ডাকল, স্বপ্নি! মহিমের কন্ঠে কি ব্যাকুলতা ছিল, নাকি অজ্ঞাত রহস্যময় কোন ব্যাথা ছিল – কে জানে। স্বপ্নিতা পিছু ফিরল। মহিম বেশ করে একটু হাসার চেষ্টা করল, যার বহিঃপ্রকাশ খুব সামান্যই হল। স্বপ্নিতা মহিমের ব্যর্থ হাসিটুকু ফিরিয়ে না দিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে বাসে উঠল। বাস ছেড়ে দিল। মহিম দাঁড়িয়ে রইল বাস স্টপেজে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সে, রাস্তার বাঁকে প্রায় হারিয়ে যাওয়া বাসটির দিকে।

সন্ধ্যা হয়ে গেছে। চারপাশে বিষণ্ণ আঁধার নামছে। অফিস ফেরত মানুষগুলোর ভীষণ তাড়া। মহিম এখনো বাস স্টপেজে দাঁড়িয়ে আছে। কেন দাঁড়িয়ে আছে – কে জানে। তার কোন অপেক্ষা নেই – প্রত্যাশা নেই – তাড়া নেই। তবু সে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::

©আহমেদ মাহির

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


9 Responses to অনুগল্প: অপেক্ষা

You must be logged in to post a comment Login