বহ্নিশিখা

ভেড়ার রাষ্ট্র

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

মোড়ের একপাশে জটলা। বড় একটা টঙয়ে আড্ডা দিচ্ছে মোটে পাঁচজন, তাদের ঘিরে আছে ছেলেছোকরাসহ মধ্যবয়সী উৎসুক কিছু লোক। চলতি পথে এই আড্ডাদৃশ্য দেখতে থেমে পড়ছে কেউ কেউ। ভিড় বাড়ছে ক্রমশ। আড্ডাটার ঠিক ডানপাশে জামতলায় ঘনঘন বিড়ি ফুঁকছে এক পাগল। তার চোখ উদভ্রান্ত, কোনো লোকের কোনো কথার কোনো শব্দ মনে গেঁথে গেলে পাগলটা বারবার তা-ই বলে নতুন কোনো শব্দ পছন্দ না হওয়া পর্যন্ত আর ডানহাত মুষ্ঠি পাকিয়ে দু কদম সামনে গিয়ে শূন্যের দিকে ঘুষি মেরে যেখানে বসেছিল আবার সেখানেই বসে পড়ছে। শক্তি নির্গত হলে একরকমের যেমন শব্দ হয়, পাগলের ঘুষিমারার সাথে সাথেই উচ্চারিত ‘হু’ ধ্বনি যেন তারই জানান দিচ্ছে।
প্রতিদিনই এখানে কমবেশি আড্ডা হয়। নানা কথায় তর্ক-বিতর্ক হয় মধ্যরাত অবধি, যে যতটুকু জানে তাই আকড়ে বসে থাকে এবং মনে করে তারটাই সঠিক। এরকম গো ধরা ভাবকেই বলে ঠেঠামি। ঠেঠামি প্রায় সবাই করে এবং উত্তেজিত ঠেঠারা জগড়া-ফ্যাসাদে জড়িয়ে পড়েও পড়ে না। তারপর ক্লান্তি নিয়ে যে-যার ঘরে ফিরে যায়।
গ্রামের সরগরম মোড় এটাই। চলতি পথে ভিড় দেখে আমিও দাঁড়ালাম। নিত্যদিনের আড্ডা হলেও আজকের পরিবেশটা ভিন্ন। দুটি নতুন মুখ, সিগারেট টানছে আর গ্রামের এই চাষামজুর-অল্পবিদ্যাধারী লোকজনের সাথে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও রাজনীতি নিয়ে কথা বলছে। এই ঘটনাকে আমি উলু বনে মুক্তো ছড়ানো মনে করলেও চাষাভূষারাও কম যায় না। এখন চাষাভূষারাও সংবাদ দেখে। আস্তে আস্তে তাদের বোধগম্য হচ্ছে শুভঙ্করের ফাঁকি নামের চালবাজিটাও। কথাবার্তায় তারই ইঙ্গিত। একজন বৃদ্ধ লোক তার অভিজ্ঞতার কথা বলছে; ব্রিটিশ, ভারত, পাকিস্তান ও এখনকার বাংলাদেশ সম্পর্কে। তার কথা— বিটিশ তনে দেইখে আইতাছি, কত্ত কী যে দেকলাম, হেইদিন আর নাই গো বাবারা, সব্বেতে পরিবত্তন অইতাছে কিন্তুক আমরা যেমুন আছি তেমুনই থাকলাম, কোনো সরকারই আংগরে নাইগ্যা ভাবলো না। কথা ঠিক। শোরগোল উঠে আড্ডায়। নতুন দুই মুখের একজন বললো— আমরাই তো ভোট দিয়া সরকার বানাই; ইলেকশনের সময় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লোকদের বয়কট করে দলের আঁচলে ভিড়ি; কোনো বাছ-বিচার ছাড়াই ভেড়ার পালের মতো যখন যাই একদিকেই যাই; এই সরকার ভালো না, অন্য সরকার আনি; আবার অন্য সরকারও ভালো না তাই আগেরটাতেই ফিরে যাই; শালা, আমাদের কপাল; দুই নেত্রীর পিছনে পিছনে হাত কচলাই; অন্য দলগুলোও কুত্তার মতো, হাড় চিবাতে চিবাতেই আরেক সরকারের সকাল হয়ে যায়। নতুন মুখের অন্যজন বললো— সব দোষই আমাদের, ভালো লোক রাজনীতিতে আসে না, আমরা নতুনধারা তৈরিও করতে পারছি না, জেনেশুনে খারাপ নেতাকেই ভোট দিচ্ছি, অন্য কোনো উপায়ও নেই; আসলে আরেকটা বিপ্লব দরকার। বৃদ্ধ লোকটি আবার বললো— ও বাবা, জয় আর তারেকের নাম হুনছি, এই নাম তো হুনি নাই, এই বিপ্লব কেঠা? নতুন মুখ দুটি হাসে, মুচকি মুচকি হাসে তারাও এই ‘বিপ্লব’ কথার মানে বুঝেছে যারা। গ্রামের একজন বললো— বিপ্লব হইলো সবকিছুর পরিবর্তন। বৃদ্ধ বললো— পরিবত্তন তো ম্যালা দেকলাম, আংগরে পরিবত্তন কই? হেই বাবাই বালা কইছে, ভেড়ার মুতন যহন যাই একমুখই যাই, বাছন-বিচের করি নে। হঠাৎ পাগলটা চিৎকার করে বলতে থাকলো— ভেড়া, ভেড়া, ভেড়া।
আমার মাথায় চট করেই পুরনো এক গল্প খেলে যায়। মুচকি হাসি আমিও। আড্ডার এই জটলাকে পিছনে রেখে বাড়ির দিকে পা বাড়াই। মনে হতে থাকে গল্পটি।
রাজা উজিরকে বললেন— বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থা সন্তোষজনক মনে করি আমি, আপনার কী ধারণা?
— জ্বি জাহাপনা, আপনার কথাই একশত ভাগ ঠিক।
— কিন্তু প্রজাদের মধ্যে বিদ্রোহ দানা বাধছে, দূতেরা মাঝেমধ্যেই খবর নিয়ে আসছে, আপনি কী জানেন?
— ও নিয়ে ভাববেন না মহারাজ, সব ঠিক হয়ে যাবে। ভেড়ার পালদের দিক পরিবর্তন করা তেমন কষ্টসাধ্য কোনো কাজ নয়।
— এ কি বললেন উজিরে আজম, ভেড়ার পাল! আমার রাষ্ট্রের প্রজারা কি তাহলে ভেড়া?
— ভেড়ার মতোই, আলামপনা।
সুযোগ পেয়ে প্রধান সেনাপতি বললেন— প্রজারা যদি ভেড়া হয় তাহলে রাষ্ট্রটা হলো ভেড়ার রাষ্ট্র। বিজ্ঞ উজিরে আজম এ কথা বলে রাজা-রাষ্ট্র দুটোকেই কটাক্ষ ও ছোট করেছেন যা মহান রাজার সুবিন্যস্ত রাষ্ট্রব্যবস্থার বিপরীত। এই কথা ধৃষ্টতার সমান, মহারাজ।
রাজা উজিরের উপর মহাবিরক্ত হলেন এবং ভেড়ার রাষ্ট্র কাকে বলে তা বর্ণনার জন্য নির্দেশ দিলেন। উজির বললেন— আমি প্রজাদের ভেড়া বলেছি, আলামপনা। ভেড়ার রাষ্ট্র বলি নি।
— আর কোনো কথা নয়, একই হলো, প্রজারা ভেড়া হলে রাষ্ট্রটা হবে ভেড়ার রাষ্ট্র, এতে ভুল কোথায়? আপনার প্রমাণ করে দেখাতে হবে যে, প্রজারা ভেড়া আর এটি ভেড়ার রাষ্ট্র। কতদিন সময় চান, বলুন উজির। প্রমাণে ব্যর্থ হলে আপনার একমাত্র পুত্রসহ স্বস্ত্রীক গর্দান দেওয়া হবে।

প্রধান সেনাপতির কূট চালে উজির পড়লেন মহা বিপদে। কী করা যায় ভেবে উপায়ন্তর না দেখে তিনমাসের সময় চাইলেন উজির। সময় মঞ্জুর করা হলো। ভেড়ার রাষ্ট্র কিভাবে প্রমাণ করবেন এই ভেবে ভেবে উজির কাহিল। নাওয়া-খাওয়া-ঘুম-টুম হারাম। একমাত্র পুত্রটির দিকে তাকিয়ে আরও ভীত হয়ে যান। সদ্য কৈশোর পেরুনো টগবগে দুরন্ত যুবক উজিরপুত্র। মায়াকাড়া গড়ন। বেশভূষায় রাজকীয় ছাপ এবং বুদ্ধিসুদ্ধি আশানুরূপ থাকলে কি হবে, রাষ্ট্রনীতিতে মন নেই, রণকৌশলেও কাঁচা। এমন পুত্রকে নিয়ে যুদ্ধ বা বিদ্রোহ কোনোটাই হবে না, এই চিন্তায় উজির আরও পর্যুদস্ত। এদিকে দ্রুত পার হচ্ছে সময়। একদিন পুত্রকে ডেকে উজির বললেন— বাবা, রাজাকে যা বলেছি তার প্রমাণ দিতে পারছি না। হাতেও বেশি আর সময় নেই। গর্দান হলে আমাদের হবে, তুমি কোথাও পালিয়ে যাও। জোরটোর করে উজিরপুত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো।

উজিরপুত্র যায় কোথায়। এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করতে লাগলো। দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। লোকের নজর এড়াতে বেশভূষায় সাধারণ ভাব আনা হলেও চেহারা-স্বভাবে যে কেউ আন্দাজ করতে পারবে যে, এ ছেলে কোনো সম্ভ্রান্ত ঘরের। এক কুলু তেলবেঁচার পাশাপাশি উজিরপুত্রকে নজরে রাখছে আর ভাবছে ব্যাপারখানা কী? পথে বটগাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছে দুজনেই। বটগাছের ছায়ায় আসার পর মাথা থেকে মাথাল নামায় কুলু আর তক্ষুণি হাতে রাখা ছাতাটি ফোটায় উজিরপুত্র। অবাক হয় কুলু। এই ছায়ায় ছাতা ফোটানোর কী প্রয়োজন, সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে উজিরপুত্রকে জিজ্ঞেস করে কুলু; বাজান, কোন গেরামে থাহেন, কোনহানে যাইবেন? উজিরপুত্র কথার উত্তর দেবে না করেও শেষমেষ বলেই ফেললো ঘটনাটি। মায়াভরা মুখটি দেখে দরদ হলো কুলুর। লুকিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিলো কুলু। সামনে পথ ভাঙা। হাঁটু পানি। কুলু পা থেকে স্যান্ডেল খুললো, উজিরপুত্র খুললো না। উঠানের দেউরি বেড়া পার হয়ে বাড়িতে প্রবেশ করবে, এমন সময় চিৎকার মেরে উঠলো উজিরপুত্র। কুলু তো হতবাক। দেখদেখি, কী কাণ্ড। বাড়ির লোকজন জড়ো হয়ে গেছে। উজিরপুত্রকে থাকার ঘরটা দেখিয়ে দিয়ে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতে গেল কুলু। এরমধ্যেই বেড়া সামান্য ফাঁক করে উজিরপুত্রকে দেখছে কুলুর কন্যা। কী সুন্দর যুবক। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যায় কুলুকন্যা। খাবারের সময় যাত্রাপথের কাণ্ডকারখানা নিয়ে কথা উঠলো। উজিরপুত্র বললো— বটগাছের ছায়ায় আমি ছাতা ফুটিয়েছি যাতে পাখির বিষ্ঠা পড়ে পোশাক নষ্ট না হয়। কুলু বললো— পানিতেও তো জুতা খুললেন না?
— পানির নীচে কী আছে তা তো জানি না, তাই যাতে পঁচা শামুকে পা না কাটে জুতা খুলি নি সেজন্যই।
— আর বাড়িতে ঢোকার সময়…
— আপনার তো দেখি বুদ্ধিসুদ্ধি নেই, অপরিচিত একজন লোককে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন, গলা খাঁকাড়ি দিয়ে সবাইকে সামাল করলেন না, তাই…

চমৎকার বুদ্ধিমান ছেলে, কুলুও মনে মনে তার কন্যার জন্য এই পাত্রকেই মনোনীত করে। উজিরপুত্র এই ভেদ কিছুই জানে না। কুলু তেল বেঁচতে চলে গেলে কুলুকন্যা আসে সঙ্গ দিতে। উজিরপুত্র তার পিতামাতার জন্য চিন্তায় অস্থির। রঙ্গ তার ভালো লাগে না। তাছাড়া কুলুকন্যার চেহারাও আহামরি সুন্দর নয়। তবে বেশ বুদ্ধিমতি। সারাক্ষণ চিন্তামগ্ন উজিরপুত্রকে দেখে বৃত্তান্ত জানতে চায় কুলুকন্যা। বলে না উজিরপুত্র। কুলুকন্যাও নাছোড়বান্দা। অবশেষে সমস্ত ঘটনা খুলে বললে কুলুকন্যা বললো— ও এই ব্যাপার! এটা তো খুবই সহজ কাজ। উজিরপুত্র বিস্মিত। বলে কী মেয়েটা; হাতিঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল। সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েও উজিরপুত্র জানতে চায়, বলো দেখি কিভাবে সম্ভব?
— আগে আমাকে বিয়ে করতে হবে।
উজিরপুত্র এই কথায় যেন আকাশ থেকে পড়লো। কার সাথে কী, পান্তা ভাতে ঘি। আকাশকুসুম কল্পনা। হাজারো ধিক্কার মনে উদয় হলেও বেশিকিছু বললো না উজিরপুত্র, শুধু এটুকু বললো— গোবরে পদ্মফুল হয় না। আত্মসম্মানে আঘাত লাগলো কুলুকন্যার। তবু মায়াভরা চেহারার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তার একটাই কথা, আমাকে বিয়ে করলেই সব সমস্যার সমাধান করে দেবো। শুরু হলো আরেক ঝামেলা। এখান থেকেও পালানোর সিদ্ধান্ত নিলো উজিরপুত্র। টের পেয়ে গেল কুলুকন্যা। বাড়ি থেকে পালানোর একটাই পথ। পথের বাঁকে গোবরকান্দি। রাতে পদ্মফুল জোগাড় করে গোবরকান্দিতে পুতে রাখলো কুলুকন্যা। পালানোর ভাব না দেখিয়ে সকালে পালানোর পথে গোবরকান্দিতে পদ্মফুল দেখে চিন্তায় ঢেউ খেলে গেল উজিরপুত্রের। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, পিতামাতা অরক্ষিত, তাদের বাঁচানো ছেলে হিসেবে কর্তব্য মনে করে ফিরে যায় কুলুকন্যার কাছে।
— আমি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি। এখন বলো কিভাবে প্রমাণ করবে যে, এটা ভেড়ার রাষ্ট্র।
— এটা বলার নয়, কাজে প্রমাণ দেখাতে হবে। আমাকে রাজপ্রাসাদে নিয়ে চলুন।

বউসহ পুত্রকে দেখে উজির হতভম্ব। গর্দানের বেশি সময় আর হাতে নেই। এরমধ্যে পুত্র বিয়ে করে ফিরে এসেছে, উজিরের বিচলিত হবারই কথা। কুলুকন্যা উজির-পরিবারকে আশ্বাস দিলো, চিন্তার কোনো কারণ নেই বলেও জানালো। মূলকথা গোপন রাখলো শুধু। কুলুকন্যার কথা মতো উজির রাজাকে কুর্নিশ করে বললেন-মহারাজ, ভেড়ার রাষ্ট্র প্রমাণ করার আয়োজন করতে আজ্ঞা হয়।
— কি করতে হবে?
— বড় একটা ময়দানে চারপাশ ঘেরা একটা প্যান্ডেল তৈরি করতে হবে। বড় বড় ধান রাখার গোলা বসাতে হবে তার ভিতর। রাষ্ট্রে ঘোষণা করে দিন, মৃত মানুষকে দেখা ও কথা বলা যাবে এমন একটা যন্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে। টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করুন।

যেই কথা সেই কাজ। লোকে লোকারণ্য। সবাই টিকিট কেটে মৃত মানুষ দেখা ও কথা বলার জন্য হুড়োহুড়ি করছে। ধান রাখার গোলাগুলো ভরে যাচ্ছে মুদ্রায়। এক দরোজা দিয়ে লোকজন ঢুকছে, অপর দরোজা দিয়ে হাসিমুখে বের হয়ে আসছে সবাই। মাইকে কুলুকন্যা শুধু বারবার একটি কথাই বলে যাচ্ছে— যারা জারজ সন্তান তারা মৃত মানুষের দর্শন পাবেন না। বের হয়ে আসা লোকজনকে বলছে লোকজন, কেমন দেখলা? লোকজন বলছে— খুব ভালো দেখলাম। পিতাকে দেখলাম, মাতাকে দেখলাম, কত কথা বললাম, ইত্যাদি।

রাষ্ট্রের সবার দেখা প্রায় শেষ। বাকি আছে শুধু উজির আর রাজা। উজির রাজাকে বললেন— এখন আপনি দেখে আসুন আলামপনা। রাজা আগে উজিরকে দেখে আসার জন্য বললেন। উজির ভিতরে গেলে কুলুকন্যা মূলকথা বলে তাকে বের করে দেন। এখন রাজার পালা। রাজা ভিতরে গেলেন, যন্ত্রে চোখ রাখলেন, কিছুই দেখতে পেলেন না। আবার চেষ্টা করলেন, আসলেই কিছু দেখতে পেলেন না। রাগে ফেটে পড়বেন, এমন সময় মাইকে বলা কথা কর্ণপাত হলো। হাসিমুখে বের হয়ে এলেন রাজা। উজির জিজ্ঞেস করলেন— কি দেখলেন?
— রাজাধিরাজ মহাপূজনীয় পিতার সাথে কথা বললাম।
— আরে, আমিও তো রাজাধিরাজ আপনার পিতার সাথেই কথা বললাম।
— আপনাকে তিনি কি বললেন?
— এটা যে ভেড়ার রাষ্ট্র তা বোঝালেন এবং ভেড়াদের মানুষ বানাবার তাগিদ দিলেন। মুচকি হেসে বললেন উজিরে আলম।
রাজা পড়লেন মহা ভাবনায়, তিনি কিছুই দেখেন নি। তাহলে কি তিনি জারজ…। নইলে উজির দেখলো, সেনাপতি দেখলো, রাষ্ট্রের সমস্ত মানুষ দেখলো, আমি দেখলাম না কেন? এ ভাবনার যখন কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না রাজা, তখন তার কানে কানে কুলুকন্যা বললো— আসলে কেউই কিছু দেখে নি, শুধু জারজ হবার ভয়ে সত্য কথা বলে নি কেউ। রাজা হো হো করে হাসলেন।

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


15 Responses to ভেড়ার রাষ্ট্র

You must be logged in to post a comment Login