অশ্বথ গাছটি আজো দাঁড়িয়ে ঠায়।
//তৌহিদ উল্লাহ শাকিল//
গ্রামের পাশে অশ্বথ গাছটি আজ দাঁড়িয়ে ঠায়
ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। ফি বছর গলায় দড়ি দিয়ে
মরে কত দিশেহারা যুবক যুবতি কিংবা গাঁয়ের
নির্যাতিত কোন বধু।রাত বিরাতে এখানে ছিনতাই হয়
হাতে নিয়ে ছোরা কিংবা পিস্তল। বুকে কাপন উঠে এই
পথ পেরুনোর সময়। এই বুঝি কেউ এল মানুষরূপী হায়না কিংবা অশরীরী অন্য কিছু ।
বহু বছর পূর্বের কথা , দেশ তখন পরাধীন । পাকিস্তানী
মিলিটারি প্রতিদিন টহল দেয় এই পথে। সাথে রাজাকার আর আলবদর
গ্রামের প্রতিটি ঘরে আতংকের বিভীষিকা । এই বুঝি এল পাক হায়না
যুবতি মেয়েকে লুকিয়ে রাখে চালের মটকির ভেতর। যুবাছেলে যে কয়জন ছিল
পালিয়েছে সেই গাছের তলা দিয়ে। অশ্বথ গাছটি আজো দাঁড়িয়ে ঠায়।
মুক্তির নেশায় বিভোর তখন গ্রাম বাংলা কিংবা শহর
রাতে কিংবা দিনে চলে গেরিলাদের মুক্তির অপারেশন।
রাহাত, সফিক ধরা পড়ে যায় পাকসেনাদের হাতে । রাজাকার সামসু
দাঁত কেলিয়ে হাসে আর বলে পাকিস্তান জিন্দাবাদ, মুখে দাড়ি,মাথায়
কায়দে আজমি টুপি।
ছমিরন, রাহেলা আর কত মেয়ে বধূ তখন অসহ্য যন্ত্রনায়
কাতরাচ্ছে স্কুল ঘরে হায়নাদের ক্যাম্পে। উলঙ্গ শরীরে একের সাথে এক
আছে মিশে । উহ! কি বীভৎস সেই দৃশ্য ভাবা যায়। একের পর এক
নরপিশাচ কুড়ে কূড়ে খায় মা বোনের ইজ্জত। রাজাকার সামসু তখন
পান চিবোয় নিয়ে উল্লাস। যুদ্ধ শেষ সবাই বিজয় মিছিলে ব্যাস্ত
সেই অশ্বথ গাছে ঝুলছে তখন বেশ কিছু মেয়ের মৃতদেহ।
আজ সেই রাজাকারের গলায় পড়াতে ফাঁসি , কত কথা হয়।
মানবতা লঙ্গিত হয় অনেকে বলে , সেদিন কোঠায় ছিল মানবতা
কোথায় ছিল মনুষ্যত্ব । আজ তাদের জন্য কিসের এত চিৎকার ।
ঝুলিয়ে দাও তাদের সেই অশ্বথ গাছের ডালে কিংবা
জেলখানার ফাঁসির মঞ্ছে। অশ্বথ গাছটি আজো দাঁড়িয়ে ঠায়।
10 Responses to অশ্বথ গাছটি আজো দাঁড়িয়ে ঠায়।
You must be logged in to post a comment Login