গল্প : বিচ্ছিন্ন ঘটনা
গুরুতর অসুস্থ্য রাষ্ট্রপতি, জনগণের উদ্বেগ
দৈনিক প্রথম সূর্য
নগর প্রতিনিধি
গতকাল ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর অয়েল এন্ড লুব্রিকেন্ট মার্চেন্টদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্ভোধণ ঘোষণাকালে আকষ্মিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পরেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব খলিলুর রহমান। জানা যায় বেলা ১১টায় শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান-এর উদ্ভোধণী ভাষণ দেওয়াকালে রাষ্ট্রপতি হঠাৎ-ই অসুস্থ্যতা বোধ করেন। তাঁকে তৎক্ষণাৎ কেন্দ্রিয় সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়াছেন তিনি এখন আশংকার বাইরে রয়েছেন।
সরকার প্রধাণ, প্রধাণমন্ত্রী মাদামসিনা এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তিনি সর্বদাই জনাব খলিলুর রহমানকে শুধু দলের নয় বরং পুরো দেশের জন্য নিরপেক্ষতার এক নির্ভিক প্রতীক বলে মনে করেন। বিগত সময়ের বিভিন্ন দুঃশাসনে দলীয় এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে জনাব খলিলুর রহমানের যে আত্মাহুতি তা দেশ এবং জনতা কখনোই ভোলে নি এবং ভুলবে না। তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
ওদিকে রাষ্ট্রপতির আসু সুস্থ্যতার জন্য ঢাকা বায়তুল মোকার্রাম মসজিদ প্রাঙ্গণে আজ বাদ আসর আয়োজন করা হয়েছে এক বিশেষ মিলাদ মাহফিল-এর। বায়তুল মুকার্রাম-এর খতীব আমিন সাদেকী-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ মিলাদে অংশ নেবেন সরকারী মন্ত্রী পরিষদ, আইনজীবী, আমলা এবং দেশের সর্বসাধারণ জনগণ।
দেশের জন্য আবারো সম্মান, মাদামসিনা ভূষিত হলেন ইন্টারন্যাশনাল আয়রন লেডি সম্মাননায়
দৈনিক কণ্ঠস্বর
ন্যু ইয়র্ক প্রতিনিধি
বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের নির্বাচিত প্রধাণমন্ত্রী মাদামসিনা দেশের জন্য নিয়ে আসলেন আরেকটি বিরল রত্ন। ভূষিত হলেন ইন্টারন্যাশনাল আয়রন লেডি সম্মাননায়। জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ‘লেডি অফ টু-ডে’ দ্বারা প্রদাণকৃত এ পুরষ্কার গ্রহীতাদের মাঝে মাদামসিনা-ই প্রথম বাংলাদেশি। পুরষ্কার পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন বাংলাদেশি প্রধাণমন্ত্রী। তিনি বিশ্ব ভাতৃত্বের আহবান জানিয়ে প্রতিটি মানুষকে মিতব্যায়িতার পথে চলতে অনুরোধ করেন। গ্যাস, পানি এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির অপচয় ও ডাম্পিং রুখে পৃথিবীর প্রতিটি রাষ্ট্রের একের অন্যের প্রতি সৌহার্দ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হাত বাড়িয়ে দিতে আহবার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘The world is one, why do not we share and care’. তাঁর এ মন্তব্যে পুরো অডিটোরিয়াম ফেঁটে পরে মুহুর্মুহু করতালিতে।
কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশা করছেন এ পুরষ্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৈশ্বিক দরবারে আরো উজ্জ্বল হবে। এ অনুষ্ঠানে মাদামসিনা-এর সাথে বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধি দলে ছিলেন ভূমি মন্ত্রী সিপিএম মৃধা, কূটনৈতিক মাগরুব খোরশেদ, বিশিষ্ট কবি মহাদেব রাহা এবং ৫১ সদস্যের একটি দল।
ট্র্যাফিক জ্যামে রোগীর মৃত্যু
দৈনিক দৈনন্দিন জীবন
নিউজ ডেস্ক
গতকাল ঢাকায় ট্র্যাফিক জ্যামে আঁটকে থাকা অবস্থায় এ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু ঘটে আব্দুর রহীম (৫০) নামক এক ব্যক্তির। প্রধাণমন্ত্রী যুক্তরাজ্য সফরের জন্য বিমানবন্দর যাওয়ার এবং রাষ্ট্রপতিকে কেন্দ্রিয় সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময় রাস্তা বন্ধ থাকলে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ এক যানযট। প্রায় স্থবির যানবাহনের সমুদ্রে এগুনো এ্যাম্বুলেন্স জনাব রহমানকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ্যাম্বুলেন্সকে কেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার হতে দেওয়া হলো না সে প্রশ্নে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট কোন উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান। আইজিপির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জনাব রহীম-এর মৃত্যুতে আমি শোকাহত। কিন্তু আমি মনে করি না যে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনার সাথে পুলিশকে সংযুক্ত করা যুক্তিযুক্ত। দেশের বিশেষ বা জরুরী সময়ে অনেকক্ষেত্রেই বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে। তার সকল দায় পুলিশের নয়’।
পুরষ্কার প্রদাণের ন্যায় পুরষ্কার প্রাপ্তি-ও যখন ব্যবসায়
দৈনিক নয়া প্রজন্ম
মাহি আলমগীর
দেশের উন্নতির জন্য ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশনের কোন বিকল্প নেই। অনেকেই আশা করেন অদূর ভবিষ্যতে আমাদের সোনার বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাড়াবে। ইতোপূর্বে বিভিন্ন সম্মাননা প্রাপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশিরা দেশের মান-মর্যাদা বৈশ্বিক মানদণ্ডে সমুচ্চিত করেছেন। আর বর্তমানে তার-ই এক অশ্লীল প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়েছেন মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী। বছরের ষষ্ঠ সম্মাননা নিতে তিনি সম্প্রতি ৫৪ (!) জনের দল নিয়ে পৌছেন যুক্তরাজ্যে। যতদূর জানা যায় ন্যু ইয়ার্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকার একটি সংগঠন ‘লেডি অফ টু-ডে’ আয়োজন করে এ অনুষ্ঠানের। স্থানীয় পর্যায়ের দু’একটি পত্রিকার বরাতে যতটুকু জানা যায়, এ অনুষ্ঠানের মূল ফান্ডিং করেছেন ন্যু ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি এবং জ্যাকসন হাইটস ‘বাংলাদেশ অলটারনেটিভ লীগ’ এর প্র্রেসিডেন্ট জনাব কাসেম আবু বকর। প্রায় ২৫কোটি টাকার এ সফর বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের অবস্থানকে করছে প্রশ্নবিদ্ধ। আবার বিরোধী শিবিরেও চলছে এ নিয়ো জোড় আলোচনা। সুশীল সমাজের ধারণা মহামান্য রাষ্ট্রপতির এহেন নাজুক শারিরীক অবস্থায় মাদামসিনার বিদেশ গমন তাদের গৃহ যুদ্ধের-ই বহির্প্রকাশ।
প্রধাণমন্ত্রীর পুরষ্কার প্রাপ্তি নয় বরং এখন জনগণ দেখতে চায় তাদের ব্যক্তিগত জীবনে প্রাপ্তি। মাদামসিনার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার নির্মোহ চেষ্টা জনগণকে কি আদৌ ভোলাচ্ছে…
জীবন…
পত্রিকার নাম জানা যায়নি, হয়তো পত্রিকায় ছাঁপা হবার যোগ্যতা অর্জণ করে নি
বছর ১৫-এর একটি ছেলে। ছেলেটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন জুতোয় বিচ্ছিন্ন ভাবে বিচ্ছিন্ন মানুষের টেবিলে পেনশন ফাইল নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ঘুষ দিয়ে থাকে। সে ঘরে ফেরে, পত্রিকার পাতা উল্টায়। কারো পুরষ্কার প্রাপ্তির আনন্দ বা তিরষ্কার, অথবা সুস্থ্যতা-অসুস্থ্যতার রিপোর্ট তাকে হাসায় না কাঁদায় জাগায় না এক ফোঁটা অনুকম্পা। বরং বিচ্ছিন্ন করে পত্রিকার প্রতিটি সংবাদ হতে। সে বেঁচে থাকে বিচ্ছিন্ন এ্যাক দ্বীপের মতোন। আর হ্যা বলা হয় নি ছেলেটির বাবার নাম কিন্তু আব্দুর রহীম (৫০)। ভদ্রলোক পত্রিকার সপ্তম পাতার অষ্টম কলামের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
5 Responses to গল্প : বিচ্ছিন্ন ঘটনা
You must be logged in to post a comment Login