বিশ্বাস !
শৈলীতে চোখ রাখা দীর্ঘদিন পরে । কখনো নিয়মিত চোখ রাখতাম , যখন কলমের সাথে সখ্যতা ছিল । পরের সময়টা শুধুই বিচ্ছেদের । বিচ্ছেদ কলমের সাথে, শৈলীর সাথে, আরও কতকিছুর সাথে, কত কারো সাথে । আজ আসা নিছকই কিছু ছবি দেখাবার জন্যে ।
বিনয়ের সাথে জানিয়ে নিচ্ছি, আমি ছবি তুলতে জানি না । আমি গল্প করতে জানি । কিছু গল্প বলতেও জানি । ছবি তার অনুসঙ্গ মাত্র ।
শাঁখারী বাজার । ক্যামেরাকে কাঁধের বোঝা করার পর থেকেই জায়গাটা আমার ভীশন পছন্দের হয়ে উঠেছে । এখানের মানুষের মাঝে আমি ভিন্ন কিছু দেখেছি, যা অন্য কোথাও দেখিনি । গত ২৭ অক্টোবর কালী পূজা ছিল । সে উপলক্ষেই পরীক্ষা শেষ করে সন্ধ্যায় শাঁখারী বাজার । দেখলাম ! দেখলাম কি করে মানুষ আর তার বিশ্বাস মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় ।
মানুষেরও অধিক যে তার বিশ্বাস, তার সামনেই যে যুগের পর যুগ মানুষ মাথা নত করে আছে, আরও যুগের পর যুগ যে তার সামনেই মানুষ মাথা নত করে থাকবে, তার সাথেই যে একাত্মতা ঘোষনা করবে জন্ম থেকে জন্মান্তরে – তাই দেখলাম সেদিন শাঁখারী বাজারে । দেখলাম, কি করে মানুষ তার বিশ্বাসের বন্দনা করে । কতটা তন্ময় চিত্তে সে বন্দনা আদায় করে নেয় বিশ্বাস । আলোআঁধারি চারধার । তবু বিশ্বাস স্বমহিমায় উজ্জ্বল!
প্রকৃত বিশ্বাসের সামনে দাঁড়িয়েই তো আবিষ্কার করা যায় নিজের ক্ষুদ্রতাকে । কত ক্ষুদ্র এ স্বত্তা ! বাস্তবেই মানুষ তার বিশ্বাসের সামনে হারিয়ে ফেলে নিজেকে । এ স্বত্তা যেন এ ভুবনের নয়; কোনো অন্য ভুবনে এ স্বত্তা । মানুষের বিশ্বাস মুহুর্তেই তাকে যেন নিয়ে যায় অন্য কোনো জগতে । সেখানে ঘৃনা নেই, ক্রোধ নেই, নেই কোনো আঘাত; শুধুই ভালোবাসাময় সে জগত । আপন বিশ্বাসে ভালোবাসা!
কত আপন করে পেতে চায় মানুষ তার বিশ্বাসকে । বিশ্বাসের একমুহুর্তের বিচ্ছেদের অর্থ যেন মৃত্যু ! বিশ্বাসের পদতলে মানুষ ঠেকায় মাথা । আবার মানুষ তার বিশ্বাসকে বুকের মধ্যিখানে রাখবার মতন করেই গড়ে নেয় যতনে ।
মানুষ বেঁচে থাকে বিশ্বাসে । আমৃত্যু বুকে আগলে রাখে মানুষ তার বিশ্বাস । এই বেঁচে থাকা অন্তহীন বেঁচে থাকা । মানুষের দেহ ধুলায় লুটায় ; লুটায় না তার বিশ্বাস কোনোদিন । যুক্তি, অবিশ্বাস আর সন্দেহের বেড়াজালে আবদ্ধ মানুষ হয়ে সেদিন শাঁখারী বাজারে অনুভব করেছি, এই একটুকরো বিশ্বাসই কতটা দামী হতে পারে ।
16 Responses to বিশ্বাস !
You must be logged in to post a comment Login