তৌহিদ উল্লাহ শাকিল

এক সকালে

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

 

//তৌহিদ উল্লাহ শাকিল//

জামিল সাহেব বাসায় একা। তার স্ত্রী মেয়েটাকে নিয়ে বাপের বাড়ি গেছে সেই সাতসকালে । ফিরতে রাত হবে । অফিসে অনেক কাজ । তবু আজ অফিসে গেলেন না তিনি । ভাবেন মাঝে মাঝে শরীর কে রেস্ট দেওয়া প্রয়োজন। তবে এর আগে কোন দিন তিনি অফিস কামাই করেননি । আজ কেন করছেন নিজে ও জানেন না ।

দেশ রসাতলে যাচ্ছে বলে সকলে চেঁচায় তাতে কি কোন সমাধা হয় । হয় না , এতে করে জামাল সাহেবদের মত লোকদের পকেট ভারী হয় । নিত্য নতুন দামী গাড়ী আসে বিদেশ থেকে । সরকারি আমলাদের পকেটে কিছু পুরে দিলে ট্যাক্সের পয়সা অনেক কম লাগে । সরকারি আমলারা আবার এসব করে নির্দ্বিধায় । ভাবেন দেশটা তাদের , যখন যা খুশী ইচ্ছে মত করার অধিকার তাদের আছে। জামাল সাহেবের মত মজুদদার ব্যাবসায়ীরা তাদের ভরসা । তারা আছেন বলেই তো মাসে মাসে বাড়তি কিছু উপহার মিলে। দ্রব্য মুল্যের দাম বৃদ্ধি হলে তার কি আসে যায় । তার কাছে তো টাকার অভাব নেই । আর অভাব হলে জামাল সাহেবরা তো আছেন । তাদের কাছে ভিক্ষুকের মত হাত পেতে নিতে লজ্জা কোথায় ?

আজ অনেক কিছু মনে পড়ে যায় জামাল সাহেবের । বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে আরো এক কাপ কপির জন্য বললেন সদ্য কাজে আসা সুন্দরী মেয়েটাকে। মেয়েটার শরীরের গঠন একেবারে……।গরিব ঘরের মেয়ে না হলে এই মেয়ের জন্য লাইন পড়ে যেত অনায়াসে । এক সময় নিজে অনেক সততার কথা বলে বেড়াতেন কলেজের ক্যাম্পাসে। সেই সততাকে তিনি নিজে গলা টিপে হত্যা করেছেন বহু বছর আগে। জীবনে বেঁচে থাকার জন্য যতটুকুর প্রয়োজন তার সবটুকুই ছিল , কিন্তু কেন যে এমন হয়ে গেলেন তা নিজে ও জানেন না জামাল সাহেব। এর মধ্যে কাজের মেয়ে কপি দিয়ে গেছে , ধুমায়িত কপির ঘ্রানের সাথে অন্য একটা মিষ্টি সুবাসে তার চমক ভাঙ্গে।

কাজের লোক হাবিব বাগানে পানি দিচ্ছে মনের আনন্দে । সেই সাথে গান গাইছে । জামাল সাহেব হাবিব কে ডাকলেন । জামাল সাহেবের ডাক শুনে হাবিব মুহরতে হাজির ।

-শোন হাবি(জামাল সাহেব হাবুব কে এই নামে ডাকে) বাজার থেকে দশ কেজি খাসির মাংস নিয়ে আয়।

-স্যার , গতকাল এনেছি তো ।

-আজ আন, তাজা খেতে মন চাইছে।

-জি, আচ্ছা । বলে হাবি চলে গেল

জামাল সাহেব নিজের রুমে গেলেন । সদ্য আসা কাজের মেয়েকে ডাকদিলেন ।

-এই রহিমা এদিকে আয়।

রহিমা সাহেবের ঘরে আসে । জামাল সাহেব রহিমার অনেক খোঁজ খবর নেন । রহিমার বাসায় অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য পাঁচশত টাকা গুঁজে দেন রহিমার হাতে । নানা কথায় আর আশ্বাসের গল্প চলতে থাকে তখন জামাল সাহেবের ঘরে । বাহির থেকে কিছু শুনা যায় , কিছু যায় না ।

পরিশিষ্ট ঃ হাবিব মাঝ পথ থেকে ফিরে আসে সোজা উপরে উঠে যায়। এমন সময় জামাল সাহেবের দরজা খুলে রহিমাকে কাঁদতে কাঁদতে বেরুতে দেখে হাবি। রহিমার গালে মুখে অনেক গুলো দাগ, পরনের কাপড় ছেঁড়া । এরপর …………………………………।।  

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


10 Responses to এক সকালে

You must be logged in to post a comment Login