শাহেদ

হাশরের ভয়াবহতা নিয়ে কিছু কথা শেষ পর্ব ।

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

ইবলীস শয়তানের ভাষণঃ
হাশরের মাঠে মানুষের মাঝে যখন ফয়সালা শেষ হওয়ার পর মুমিনগণ জান্নাতে চলে যাবেন এবং কাফেরেরা জাহান্নামে নিপতিত হবে। শয়তানের অনুসারী জাহান্নামীরা যখন শয়তানকে এই বলে দোষারোপ করবে যে, আমরা তোমার কথায় সাড়া দিয়েছিলাম। দুনিয়াতে তুমি আমাদেরকে গোমরাহ করেছিলে, ইত্যাদি বলে শয়তানকে দোষারোপ করবে। শয়তান তখন নিজেকে সম্পূর্ণ দোষমুক্ত ঘোষণা করে একটি ভাষণ প্রদান করবে। আল্লাহ তাআ’লা কুরআনে শয়তানের সেই ভাষণটি তুলে ধরেছেন। আল্লাহ বলেনঃ
وَقَالَ الشَّيْطَانُ لَمَّا قُضِيَ الْأَمْرُ إِنَّ اللَّهَ وَعَدَكُمْ وَعْدَ الْحَقِّ وَوَعَدْتُكُمْ فَأَخْلَفْتُكُمْ وَمَا كَانَ لِي عَلَيْكُمْ مِنْ سُلْطَانٍ إِلَّا أَنْ دَعَوْتُكُمْ فَاسْتَجَبْتُمْ لِي فَلَا تَلُومُونِي وَلُومُوا أَنْفُسَكُمْ مَا أَنَا بِمُصْرِخِكُمْ وَمَا أَنْتُمْ بِمُصْرِخِيَّ إِنِّي كَفَرْتُ بِمَا أَشْرَكْتُمُونِي مِنْ قَبْلُ إِنَّ الظَّالِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
অর্থঃ “কিয়ামত দিবসে যখন ফয়সালা হয়ে যাবে তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন। আমিও ওয়াদা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার ওয়াদা ছিল মিথ্যা এবং আমি সেই ওয়াদা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর আমার কোন কর্তৃত্ব ছিলনা। শুধুমাত্র আমি তোমাদেরকে ডেকেছিলাম আর তোমরা আমার ডাকে সাড়া দিয়েছিলে। অতএব আজ তোমরা আমাকে দোষারোপ করোনা। নিজেদেরকে দোষারোপ কর। আমি তোমাদেরকে শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারবনা। তোমরাও আমাকে বাঁচাতে পারবেনা। তোমরা ইতিপূর্বে আমাকে আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করেছিলে। আমি তা A¯^xKvi করছি। নিশ্চয়ই জালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক কঠিন শাস্তি। (সূরা ইবরাহীমঃ ২২)
হাশরের মাঠে মানুষের হিসাব এবং আমলনামা প্রদানঃ
হাশরের মাঠে মানুষের মাঝে হিসাব সমাপ্ত হওয়ার পর প্রত্যেককে নিজ নিজ আমলনামা প্রদান করা হবে। যারা ডান হাতে আমলনামা পাবেন তারা অত্যন্ত খুশী হবেন। মানুষকে বিশেষভাবে কয়েকটি বিষয়ের হিসাব দিতে হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ পাঁচটি বিষয়ের উত্তর দেয়া ছাড়া কোন মানুষ হাশরের মাঠে এক পা অগ্রসর হতে পারবে না। তার বয়স সম্পর্কে এবং কিভাবে তা শেষ করেছে। যৌবন সম্পর্কে এবং কিভাবে তা অতিবাহিত করেছে। তার মাল সম্পর্কে, কোথা থেকে সে তা উপার্জন করেছে এবং কোথায় তা ব্যয় করেছে এবং ইল্‌ম অনুযায়ী সে কতটুকু আমল করেছে। আল্লাহ তাআ’লা ডান হাতে আমলনামাপ্রাপ্ত মুমিনদের খুশীর অবস্থা বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمْ اقْرَءُوا كِتَابِيه إِنِّي ظَنَنتُ أَنِّي مُلَاقٍ حِسَابِيَه فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الْأَيَّامِ الْخَالِيَةِ
অর্থঃ “অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে সে বলবেঃ এসো! তোমরাও আমার আমলনামা পড়ে দেখ। আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। অতঃপর সে সুখী জীবন যাপন করবে সুউচ্চ জান্নাতে। তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে। বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে তার প্রতিদান ¯^iƒc তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে। (সূরা আল-হাক্কাহঃ ১৯- ২৪) কাফের এবং মুনাফেকরা বাম হাতে পিছন দিক থেকে তাদের আমলনামা গ্রহণ করবে। তারা বাম হাতে আমলনামা পেয়ে নিজেদের ধ্বংস কামনা করবে। আল্লাহ তাদের অবস্থা উল্লেখ করে বলেনঃ
وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَالَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِي وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِي يَالَيْتَهَا كَانَتْ الْقَاضِيَةَ مَا أَغْنَى عَنِّي مَالِيه هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيه خُذُوهُ فَغُلُّوهُ ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ
অর্থঃ “যার আমলনামা বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে হায় আমায় যদি আমলনামা না দেয়া হতো! আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায় আমার মৃত্যুই যদি শেষ পরিণতি হত! আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসলনা। আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল। ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ একে ধর। অতঃপর গলায় বেড়ি পরিয়ে দাও। অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। অতঃপর তাকে এমন শিকল দিয়ে বাঁধ যার দৈর্ঘ হবে সত্তর গজ। (সূরা আল-হাক্কাহঃ ২৫-৩২)

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


You must be logged in to post a comment Login