যেদিন
যেদিন ছেড়ে আসবার কথা ছিল তোমাকে
সেদিন কার্জন হলের সামনে বসে বলেছিলাম কিছু কথা
কি বলেছিলাম- কিছুই মনে পড়ছেনা
বলেছিলাম কি কিছু!
মনে পড়ে? ‘যেদিন’ আমাদের মাঝে দ্বিধা ছিল না ।
এরপর হেটে হেটে সেগুনবাগিচার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
বাংলার ইতিহাসের অনেক অনেক স্মৃতি দেখছিলাম দুজনে।
তুমি ছিলে আনমনে।
ইতস্তত করছিলে তখন থেকেই
এরপর…
এরপরেই তুমি স্মৃতি হয়ে গেলে।
তারপর তোমাকে যেদিন থেকেই খুজেছি
আগের সব স্মৃতিকে আগলে রেখেই খুজেছি।
ঈশা খাঁ বাস আজও ছেড়ে যায় সায়েদাবাদ থেকে
তুমিও যাও হয়ত কিশোরগঞ্জে।
কেউ কি এভাবে আর বিদায় জানায় তোমাকে?
তুমি মনে হয় কেদেছিলে
কিছু দুবো’ধ্য ভাষা বলতে চেয়েছিলে।
বেয়াড়া টাটা কোম্পানির বাসের ইঞ্জিনের শব্দ পড়ই প্রকট
শব্দের ভিড়ে শব্দ তাই চাপা পড়ে যায়-
তোমার অফুরান শক্তি যেমন চাপা পড়ে বর্ণ আর ধর্ম বৈষম্যের ভীড়ে।
তেমনি করে চাপা পড়ে
অনন্ত কাল!
তাই হয়তো
চোখের জল দিয়েই তখন কিছু কথা ঝরিয়েছিলে।
সামনা সামনি সেদিন ছিলো শেষ দেখা-শেষ কথা
সেদিন হয়েছিল কি দেখা- তোমার অবিরাম চেয়ে থাকা!
এমনি করে করে থমকে গিয়েছিল সময় কিছুকাল
অজস্র সময়-হারায়ে যায়
তোমার মতন
আমার মতন।
যেদিন বলেছিলে, ‘কবি, তুমি বাঁশি বাজালে বেশ হতো’-
কালের পরিক্রমায় এখন বাঁশি বাজে
অথচ কবির কবিতায় লাইন আর বাড়েনা।
এসবের জায়গার বরঞ্চ ঘন ঘন কার্বনডাইঅক্সাইড গ্যাস নিগ’ত হয়।
যেদিন তোমার হাত ধরেছিলাম
রিক্সায়- সবার অগোচরে।
ভুলতে পারোনি সেইসব স্মৃতি আমার মতন করে।
তাই বিদায় লগ্নে ঈশা খাঁ বাসের জানলা থেকে হাত বের করেছিলে
সে হাত আর ধরা হয়নি।
অপেক্ষা ছিলো আবারো ধরবো হাত
আবারো ‘যেদিন’ আসবে বলে।
আমি জানি, তুমিও জানো
‘সেইদিন’ আর আসেনাই
সেইদিন আর কখনোই আসে না।
9 Responses to যেদিন
You must be logged in to post a comment Login