শৈলী বাহক

কিছু কটু কথা এবং একটি বিনীত ঘোষনা!!

Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

বিশ্বজগতে প্রকৃত সাহিত্যের ভূমিকা এবং তার অবদান অনস্বীকার্য। মননশীল সাহিত্য এবং শিল্প তার নিজস্ব ধারাকেই পুজি করে সময়কে অতিক্রম করতে পারে, নিজেকে সামাজিক দায়িত্ব পালনেও আগ্রহী করে তোলে। কিন্তু সেই সাহিত্য মানেই কখনই শুধু “কবিতা” না। সাহিত্যের বিস্তরণ নানামুখী। সাহিত্যে মননশীল উপন্যাসের মধ্যে ধারাবাহিক উপন্যাস, মধ্যম উপন্যাস, কালোত্তীর্ণ উপন্যাস, গল্পের মধ্যে ছোটগল্প, বড়গল্প, অনুগল্প, ভালবাসার গল্প, রম্যের মধ্যে কৌতুক, গদ্যকার্টুন, রম্যগল্প, এছাড়াও ভ্রমণকাহিনী, অনুবাদ-রচনা, সাহিত্য-সমালোচনা, সাক্ষাৎকার বিশ্লেষণ, প্রথিতযশ কবি-সাহিত্যিক বায়োগ্রাফী, ছবিশৈলী, কথাশৈলী, চিঠি-লেখন, নাট্যরুপ, স্মৃতিরোমন্থন, স্যাটায়ার সহ নানামুখী বিভাগ অথবা বিষয় আছে। এছাড়াও শিল্পের পরিধির আরো বিশাল বিচরন। চিত্রকলা, ফটোগ্রাফী. বিনোদন, থিয়েটার চিত্ররূপ ছাড়াও আরো ক্রমাগত অনেক নতুন নতুন বিয়ষ “শিল্পের” মধ্যে জায়গা করে নিচ্ছে। কিন্তু দু:খের সাথে বলতে হয়, শৈলীতে ঢুকলে মনে হয় শুধু শিল্প এবং সাহিত্যের সকল নির্যাস শুধু “কবিতাতেই” আটকে আছে। প্রকৃতঅর্থে সকল নব্য-সাহিত্য রচনাকারীদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য শৈলীর জন্ম। যা অন্য বেশিরভাগ ব্লগ প্লাটফরমই ব্লগারের অগোচরে নিরুৎসাহিত করে।

১. কিন্তু আমরা চাই সাহিত্যের সকল বিষয় নিয়ে উৎসাহমূলক আলোচনা, রচনা, সকল শিল্প নিয়ে তুমুল বিতর্ক। মনকে নাড়া দেয় এমন রচনা, আবেগী সৃজন। শৈলারসৃষ্ট আবেগী কোন উপন্যাস বা আবেগী কোন রম্যসাহিত্য চোখে পড়ে খুব কম। মনে ভিজিয়ে তুলে এমন গল্প, ভ্রমণকাহিনীও শৈলীতে কম পড়ে। সায়েন্স ফিকশনও সাহিত্যের মধ্যে এক অনন্য অবস্থান করে নিয়েছে। সেরকম কিছুও কেই রচনা করছেন না, এমন সাহিত্য সহজেই পাঠক মনকে ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবাতে পারে, মনকে দ্রবীভূত করতে পারে।

২. বিশ্বের বেশিরভাগ প্রথিতযশা শিল্পী সাহিত্যিকদেরই ছিল সাহিত্যঅঙ্গনে নানামুখী বিচরন। কেউ কেউ সমাজ-সংশ্লিষ্ট কার্যকলাপেও সময় দিতেন প্রচুর। সাহিত্য সমাজসেবার বাইরে তো কিছু নয়। সেখানেও শৈলীর বর্তমান নব্য-কবিদের নীরব ভুমিকা প্রশান্তি নিয়ে আসে না।আর কবিতাও যদি ধরি, বেশিরভাগ কবিতাই কালের অতলে হারিয়ে যেতে পারে এমন কবিতাই নিয়মিত জমা পড়ছে, যাতে শৈলাররা নিজেরাই আগ্রহ পান না, পাঠককে আগ্রহী করবে কি! আমরা শিল্প আর সাহিত্যকে পুজি করেছি কারন প্রকৃত আর মননশীল শিল্প সাহিত্য রচনা কখনও কালের অতলে হারিয়ে যায় না। মননশীল সাহিত্য, বৈশ্বিক সাহিত্য-আকাশে বিচরণ করবে সবসময়। আমরা মনে করছি বেশিরভাগ শৈলারদের নিয়মিত কবিতা রচনা গুনগতমান রক্ষা করে চলে না, পাঠককে ভাবিয়ে তুলে না। শৈলী কার্যনিবার্হী কমিটি এমন গুনগতমানহীন সৃজন এবং একচোখা সাহিত্যকে নিরুৎসাহিত করে। শিল্প সাহিত্য মানেই শুধু “কবিতা” মনে করাকেও প্রবলভাবে অনুৎসাহিত করে। বলতে দ্বিধা নেই, শৈলীতে অনেক ভালো মানের কবিতাও জমা পড়ে, তার মধ্যে শৈলার রাজন্য রুহানি, শৈবাল, চারুমান্না, শামান সাত্ত্বিক ছাড়াও আরো অনেকেই আছেন। তাদের রচনাকে শৈলী সাধুবাদ জানায় এবং সবসময় উৎসাহিত করে।

৩. কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ শুধুই কবিতা লিখেননি। আবার কবিতা লিখেই জনপ্রিয়দের মধ্যে কবি শামসুর রহমান, এবং নির্মলেন্দু গুনও নানমুখী সমাজসেবা মুলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত, পাশাপাশি সমাজসেবামুলক, দেশাত্মবোধক সাহিত্য রচনাও। তাদেরকে অনুকরন নয়, কিন্তু অনুসরন করাটা আপনার ভাল সিদ্ধান্তের একটি হতে পারে।

৪. শৈলীতে যারা সাহিত্য বৈচিত্র্য নিয়ে আসছেন তাদেরকে সবসময় শৈলী শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবে। সাহিত্যে বৈচিত্র নিয়ে যারা আসেন তাদের মধ্যে শৈলার রাবেয়া, তৌহিদ উল্লাহ ছাড়াও অনেক নতুন ব্লগারও এ কাতারে আছেন, উদাহরণস্বরুপ “কাজী হাসান”। সদ্য শৈলার “কাজী হাসান” সাহেবের লেখনী বৈচিত্র্য শৈলী কমিটিকে সন্তুষ্ট করে। এই নবীন শৈলার বিজয়ের মাসে সমসাময়িক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা লেখনী শৈলীকে সমকালীন পুর্ণতা দিতে সহায়তা করছেন।এতে বৈচিত্র্যের জন ্য পাঠকরা শৈলীতে ফিরে আসতে অনুপ্রেরণা  পান।

৫. শৈলী সম্মানসহকারে শৈলারদেরকে সাহিত্যের অন্যান্য মাধ্যমেকেই সম্মান জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছে।শুধু একটি বিষয়কে পুজি করলে সৃজন পঠনে একঘেয়েমিত্ব আসবে এটা সকল নব্য-ব্লগারদেরকে নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

৬. পাশাপাশি আরেকটি বিষয় লক্ষ্যনীয়, কিছু নব্য ব্লগারদের দেখা যাচ্ছে, তারা শুধু নিজেদের কবিতাই পড়তে আসেন, মন্তব্য খুজতে থাকেন! অন্য কারো সৃজনের প্রতি তাদের কোন আকর্ষন থাকে না। তাহলে নির্মলেন্দু গুনের একটি কথাই কি ঠিক?? “কবিরা আজকাল নিজের কবিতা ছাড়া অন্য কারো কবিতা পড়েন না”!! শৈলীতে সামাজিক ভুমিকা (অর্থাৎ যারা নিয়মিত অন্যের সৃজনেও মন্তব্য করেন) যারা পালন তাদেরকে সবসময় শৈলী শ্রদ্ধা সহকারে স্বীকৃতি দিবে, তাদের মধ্যে, তৌহিদ উল্লাহ শাকিলরাজন্য রুহানি, শৈবাল কায়েস, রাবেয়া রব্বানি, কাজী হাসান, মামুন ম. আজিজ, সকাল রয়, চারুমান্নান অন্যতম। তাদেরকে সাধুবাদ জানায় শৈলী। নবীনদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য “সামাজিক শৈলার” নামে একটি নতুন উইজেটও প্রদর্শন করে চলেছে শৈলী।

৭. আজকের শৈলীর প্রথম পাতা দেখলেই পরিস্থিতি অনুধাবন করা যাবে। প্রথম পাতায় ১৫টি সৃজন তার মধ্যে ১১ টি কবিতা”।  যা আদতে লেখকদের জন্যও লজ্জাকর! কবিতাকে আমরা নিরুৎসাহিত করার কোন কথাই নেই। কিন্তু তা হতে হবে প্রকৃতঅর্থেই কবিতা এবং পরিমিত।

৮. এ পরিস্থিতি উত্তোরণে শৈলী নিয়ন্ত্রিত ভুমিকায় যাওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে। প্রয়োজনে প্রখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের বৈচিত্রময় সাহিত্য রচনা নিয়ে হাজির হবে নিয়মিত শৈলী কর্তৃপক্ষ। তাতেও শৈলী গুনগতমানে “জিরো টলারেন্স” পালন করবে শৈলী।

৯. আসছে একুশে বইমেলোয় আমরা “শৈলী সংকলন” বের করার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে আমরা “নন্দিতা প্রকাশনী” র কাছে চুক্তিবদ্ধও। কিন্তু কবিতা ছাড়া অন্যান্য বিষযভিত্তিক রচনার লজ্জাজনক ঘাটতি আমাদেরকে নিরুৎসাহিত করছে। কারন সাহিত্য বিষয়ক ব্লগ সংকলনে সাহিত্যের সকল উল্লেখযোগ্য বিষয় থাকাটাই বাঞ্চনীয় বলে মনে করে শৈলী কর্তৃপক্ষ।

পরিশেষে, সকল শৈলারদের উদ্দেশ্যে অনুরোধ বিনীত জানাচ্ছি, শৈলীকে আপনার সৃজনশীলতা দিয়ে নিয়মিত বৈচিত্রময় করে তুলুন। পাঠককে নাড়া দেয় এমেন সাহিত্য রচনা করুন। কালের অতলে যাতে হারিয়ে না যায় এমন শিল্প নিয়ে ভাবুন। নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসুন। সেবামূলক কিছু করার ভুমিকা নিয়ে ভাবুন। এতে শৈলী কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা থাকবে। শীতে মানুষ কাপড় পাচ্ছে না, দুবেলা দুমুটো থেতে পারছে না, তাদের কথা ভাবার সময় এসেছে, তাদের নিয়ে সাহিত্য রচনা করুন। তাতেই হবে সময়কে ছাড়িয়ে যাওয়া, প্রকৃত সাহিত্য রচনা, পাশাপাশি সামাজিকতার দায়িত্ববোধ পালন। আর এর পরিবর্তন না হলে শৈলী শিঘ্রী মডারেশনের আওতায় চলে আসছে। অসামাজিক আচরনে উদ্বুদ্ধ (অর্থাৎ অন্যের সৃজনে আগ্রহ নাই) লেখকদেরকে নিয়ন্ত্রিত রাখা হতে পারে এখন থেকে। শৈলী সীমিত সংখ্যক শৈলার নিয়ে ই চলবে। তবু আমরা মননশীলতা, সৃজনশীলতা ব্যাপারে কোনরকম ছাড় দেব না। এবং সাহিত্যের সকল শাখা নিয়ে এগুব।


– শৈলী বাহক!

“আড্ডা হোক শুদ্ধতায়, শিল্প আর সাহিত্যে”

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


17 Responses to কিছু কটু কথা এবং একটি বিনীত ঘোষনা!!

You must be logged in to post a comment Login