দ্য ফার্স্ট কিস
এক মেয়ে আর এক ছেলের সাথে কঠিন সম্পর্ক ছিল। ১৪ বছর আগে তাদের কিভাবে যেন বিচ্ছেদ হয়ে যায়। একটা যুক্তিযুক্ত কারণ ছিল। পারিবারিক, সামাজিক.. আজ তার স্মরণের কিছু প্রয়োজন নাই।
১৪ বছর পরে মেয়েটার ক্লাসমেটদের মধ্যে একজনের সাথে এই ছেলেটা ওই মেয়েটার কিছু মিল পেয়ে যায়। ঠিক কোথায় এই মিল তা ছেলেটাই ভালোভাবে জানে না। বন্ধুদের আড্ডায় তাদের পরিচয় হয়েছিল। কোনো বন্ধুর মাধ্যমে। তাদের চলাফেরা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন সার্কেলে। না পেশা, না নেশা – তাদের কিছুই এক ছিল না। তবু একটা শক্ত সম্পর্ক হল। একে অন্যের অনুভুতিগুলি তারা প্রায় একইভাবে অনুভব করতে পারত। তাদের মধ্যে একটা কমন প্রয়োজন বোধ জানান দিল। বন্ধুরা তা বুঝল। কিন্তু এবার ও ছেলেটার সম্পর্কটা সেই পরিবার, সমাজ আর রীতি নীতির প্যাঁচে পড়ে গেল।
সম্পর্কের অল্প দিনের মধ্যেই মেয়েটি ছেলেটির শহরে আসে। এখানে সে নিজের পরিবারের সাথে মনে মনে নি:সংগ অবস্থায় থাকে। জীবনে যে যার মত যাপন করে যেতে যেতেও লোকে কখনো অপ্রত্যাশিত ভাবে মুখোমুখি হয়ে যায়।
একদিন হঠাৎ দেখা হয়ে যায় তাদের। রেল স্টেশনে মেয়েটিকে ঢাকার ট্রেনে তুলে দেয়ার জন্য ছেলেটি তার সাথে আসে। তুর্ণা নিশিথায় রাত সাড়ে এগারোটার ট্রেনে। বিদায়ের বেলায় ছেলেটির বুক পুড়ে যায়, স্মৃতিরা উড়ে আর বিষন্ন গোধুলিবেলায় অনুভূতিগুলো হারিয়ে যায় কোনো এক নিরন্নলোকে। এমন সময়গুলোতে মন যতটা মুখর, মুখে যদি তার কিছুমাত্র প্রকাশ করা যেত! আগের উদ্দাম সময়ে মেয়েটির শুধু হাত ধরে থাকতে ভালোবাসত ছেলেটি। মেয়েটির কত ইচ্ছে ছিল ছেলেটি ওকে একটু আদর করুক… ওর ঠোটে একটা দীর্ঘ চুম্বন করুক। আজ বিদায় বেলায় মেয়েটির মনে সেই ইচ্ছে এলেও সে প্রকাশ করে না। কিন্তু কিভাবে যেন ছেলেটি বুঝে যায়। রাতের রহস্যলোকে ভরা রেল স্টেশনে অনেক মানুষের ভীড়ে এক জোড়া মধ্যবয়ষ্ক নরনারী ট্রেন ছেড়ে দেয়ার সময়ে সবার অলক্ষ্যে একে অন্যের খুব কাছে আসে… কল্পনায় ওদের একের ঠোট অন্যের সাথে মিশে যায়। বিদায় বেলায় একটা দীর্ঘ চুম্বন বিদায়ী শুভেচ্ছা হয়ে থাকে । এই ট্রেন কত বাঁকে কতবার বেঁকে আরেক অন্য স্টেশনে নিয়ে নামাবে এর যাত্রীকে। সে যদি এই স্টেশনে ফিরেও আসে সেদিন এই মানুষটা এই স্টেশন থাকবে?
হয়তো এ জীবনে এই মূহুর্ত আর আসবে না। চলে যাওয়া সময় কি কখনো ফিরেছে?
You must be logged in to post a comment Login