ভালোবাসা একপলক
শেষ বিকাল। সোনারোদে পৃথিবী মায়াবী। পার্কের ভিতর দিয়ে যেতে যেতে পথের পাশ থেকে এক টুকরা কাগজ কুড়িয়ে নিলো যুবক। কেউ ঝালমুড়ি খেয়ে ফেলে গেছে। শিউলি ফুলে সাদা হয়ে আছে পথের পাশে ফুটপাথ। সে মাড়িয়ে যেতে পারছে না। শৈশবের দিন মাখামাখি হয়ে আছে শিউলির সাথে। স্মৃতির ভিতর যত্নে রাখা। তার ওপর পা ফেলা যায় না। তাকে পাশ কাটানো ও যায় না। এমনই তার টান!
সে কুড়ানো কাগজে কুড়ানো শিউলি গুলি যত্নে তুলে নিলো। হঠাৎ কী হলো কে জানে, মৌসুম নয় তবু হাওয়ার ঝাপটা লেগে কিছু ফুল পড়ে গেলো! আবার তা তুলে নিতে হাত বাড়াতেই যুবক অবাক হলো- সবুজ ঘাসের বুকে পড়ে আছে ফুলগুলি! ওহ! কারো ওড়না! সভয়ে সে সরে এলো। আরক্ত মুখে তরুণী চকিতে ফুলসহ ওড়নাটা তুলে নিয়ে গায়ে জড়ালো। যুবকের চেনা শিশুবেলা নকশা হয়ে ফুটে রইলো অচেনা সবুজ ক্যানভাসে। যতদূর চোখ যায় অপলক চেয়ে থাকে দৃষ্টি তার। পথচারী মৃদু হাসে – ‘যুবক বয়স! ‘
ওড়না থেকে খসে তরুণীর হাতে এসে পড়ে দুটো ফুল। পিছু ফিরে ফুটপাথে তাকাতেই চোখে পড়ে যুবকের আকুল দু’চোখ! এক মূহুর্ত তার ভুল হয়, বহুদেখা লোভ ভেবে। যুবকের হাতের কাগজে রাখা বাকী ফুল দেখে ভুল ভাংগে। তরুণী ফিরে যায় , হাত থেকে ফুল দুটো ঢেলে দেয় যুবকের হাতে, কাগজের বুকে।
জানে পৃথিবীতে জীবনেরই মত -ভালোবাসা এক পলকই। তাও তো কর্মফলে অমরত্ব পায়! শিউলির সাদা আর কমলায় বিকাল মিলায়। দুটি প্রাণ নিরবে জানান দেয় ভালোবাসা আছে। তারপর, ফিরে যায়। সেই পথে যেখানে যে যেতে চেয়েছিলো।
কে জানে! হয়তো প্রতিবেশীই হবে তারা। একই পাড়া, একই পথ, একই সব – শুধু পরিচয় হয় নি কখনো! ভাগ্যক্রমে আবার কখনো দেখা হলে, জানাজানি ও হয়ে যাবে হয়তো… শিউলির স্মৃতিসূত্রে..
You must be logged in to post a comment Login