কাজী হাসান

যদি তাই হয়……..

যদি তাই হয়……..
Decrease Font Size Increase Font Size Text Size Print This Page

মেগাস্টার শাহ রাজ আর নাই।

অল্প দিনেই বিশাল উত্থান। ছবিতে শাহ রাজ থাকলেই বক্স অফিস হিট। তার থেকে শিডিউল পাওয়া মানে এক বছর আগে টাকা দিয়ে বসে থাকা। তবে তার একটিং করা ছবি মুক্তি পাওয়ার  পর লগ্নি করা সব টাকা পাঁচ-সাত গুন হয়ে ফিরে আসে। প্রযোজকদের হাসি তখন দেখে কে? বত্রিশ খানা দাঁতের প্রদর্শনী চলতে থাকে।  পত্র পত্রিকায় প্রায় তার বলিউড, হলিউডে অভিনয় করা নিয়ে আলোচনা হয়।

শাহ রাজের শুটিং চলছিল, রহমান প্লাজার বাইশ তালার ছাদে। রোমান্টিক দৃশ্য। পূর্ণিমা রাত। আকাশে চাঁদ। মোটামুটি সহজ অভিনয় বলা যায়। গানের সাথে সাথে নায়িকা নিয়ে হালকা ধরনের নাচ। মাত্র শুটিং আরম্ভ হয়েছে। একটানে ঘণ্টা ছয়েক কাজ করার প্ল্যান। সে হিসেবে সবাই রেডি হয়ে এসেছে। আর শাহ রাজ থেকে দিন ক্ষণ নিয়ে রাখা হয়েছে সেই কবে!

পরিচালক সাহেব একশ্যান বলার পরে ক্যামেরা রোল করছে। হঠাৎ শাহ রাজ চিৎকার করে বলল, স্টপ –বন্ধ কর। তার কথা অমান্য করবে এমন ক্ষমতা সেটে কারোর নাই। মুহূর্তের মধ্যে সব বন্ধ হয়ে গেল। উপস্থিত সবাই ভাবল, বেচারা নিশ্চয়ই ভাল ফিল করছে না। খুব হয়ত ক্লান্ত। এত কাজ কি মানুষের শরীরে সহ্য হয়? দিন নাই, রাত নাই, শুক্রবার নাই—শুধু শুটিং আর শুটিং। এই ভাবে বেশি দিন তো কারোর পক্ষেই কাজ করা সম্ভব না।

শাহ রাজ উপস্থিত সবার সাথে সাথে এক এক করে হাত মিলাল। মহিলাদের মিষ্টি করে বলল, পরে দেখা হবে। নায়িকা চন্দনা তার অনেক দিনের বন্ধু। সে জানতে চাইল, তোমার কি শরীর খারাপ? শাহ রাজ প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে বলল, তোমার সাথেও পরে দেখা হবে, তখন কথা হবে।

মেগাস্টার শাহ রাজ এগিয়ে চলল ছাদের রেলিঙ্গের দিকে। সবাই বুঝার চেষ্টা করতে লাগল, শাহ রাজ কি করার চেষ্টা করছে। মনে হচ্ছিল সে হয়ত রেলিঙ্গের ধারে দাঁড়িয়ে থাকবে কিছুক্ষণ। শাহ রাজ যেয়ে রেলিঙের উপরে দাঁড়াল। হাই অফিসিয়ালরা যেমন প্লেনের দরজা দিয়ে ঢোকার আগে, শেষ মুহূর্তে ঘুরে সবার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ায়, অনেকটা তেমন করে শাহ রাজ হাত নাড়াল। তার পরে অনেকটা হাঁটার ভঙ্গিতেই, আরেক কদম দিল রেলিঙ্গের ওই পারে—শুন্যে।

কিছুক্ষণের মধ্যে ধপ করে শব্দ হল। ছাদের সেটের মানুষরা অবশ্য কিছু শুনতে পেল না।

ইতিমধ্যে মেগাস্টার শাহ রাজ অন্য পাড়ে চলে গেছে।

সারা দেশে আলোচনার ঝড় বইতে লাগল। এইটা কি করে সম্ভব। খ্যাতির চুড়া থেকে একটা মানুষ কি ভাবে এ রকম একটা কাজ করতে পারে। সবার সামনে বিদায় নিয়ে হাসি মুখে  আত্মহত্যা করতে পারে। টেলিভিশনের টক শ গুলোতে  বিভিন্ন ধরনের তথ্য আর থিওরি দেয়া চলতে লাগল। সাথে পত্র পত্রিকা, রেডিও তো আছেই। বেশির ভাগ মানুষ মানতেই চায় না, যে শাহ রাজ এ রকম একটা কাজ করতে পারে। তাদের মতে, তাকে ষড়যন্ত্র করে ছাঁদ থেকে ফেলে দিয়ে বানোয়াট গল্প বানান হচ্ছে।  আরেক দলের মত, এত তাড়াতাড়ি এত বেশি খ্যাতি পেলে এ রকম হওয়ার সম্ভবনা থেকেই যায়। ষাটের দশকে এমেরিকায় এরকম ঘটনা হয়েছিল। মেরিলিন মনরো অনেকটা এভাবেই নিজের জীবন নিয়ে ছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিজে এসে রহমান প্লাজার ছাঁদ দেখে গেল। সাংবাদিকদের জানাল, আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে শাহ রাজের মৃত্যুর আসল কারন জনগণকে জানান হবে। না হলে প্রয়োজনে তার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি ঘটন করা হবে। কিন্তু জনগণ কোন ভরসা পেল না। এরা আসলে কিছুই বের করতে পারবে না। হয়ত তাকে মারার ব্যাপারে হোমরা চোমরারা জড়িত আছে। এর আগেও বাংলাদেশে শত শত তদন্ত কমিটি হয়েছে। তাদের তদন্তে থেকে কি বের হয়ে এসেছে, সেটা জানার জন্যে হয়ত বড় ধরনের গবেষণার দরকার হতে পারে।

খলিল শেখ বিছানায়  এপাশ ওপাশ  করে চলেছে। সারা রাত ঘুম হয় নি। প্রচণ্ড একটা টেনশান কাজ করেছে। কয়েকবার উঠে বাথরুম যেতে হয়েছে। বমি বমি ভাব কাজ করছে। মাইক্রো বায়োলজির ছাত্র খলিল ভাল করেই জানে নার্ভের উপরে অস্বাভাবিক চাপ পড়লে এরকম হওয়াটা একেবারে স্বাভাবিক। কিন্তু কেন এত চাপ?

পিএইচডি শেষ না করেই খলিল শেখ এমেরিকা থেকে ফিরে আসল। সবাই খুব অবাক হয়েছিল। তার মত ব্রিলিয়েন্ট ছাত্র পিএইচডি শেষ না করে চলে আসবে সেটা কেও ভাবতেই পারে নি। তাদের ধারনা ছিল এমেরিকা খলিল শেখকে লুফে নিবে। ভাল বেতন দিয়ে কোন গবেষণার  দায়িত্বে বসিয়ে দিবে। সে যে বিরাট কিছু করার ক্ষমতা রাখে সে ব্যাপারে কারোর কোন দ্বিমত ছিল না।

খলিল তার ফিরে আসার কারণ এখন পর্যন্ত কাওকে বলে নি।  খুব একটা দরকার ছাড়া সে কারোর সাথে তেমন কোন কথা বলে না। বাবার  দেওয়া একটা এপার্টমেন্টে একেবারে একা থাকে। দুটো রুমকেই ল্যাবরেটরি বানিয়ে ফেলেছে। আসাবাবপত্র বলতে একটা বিছানা। সেখানেই সে ঘুমায়।

হকার পত্রিকা ফেলে যায় সকাল আটটার দিকে। খলিল শেখের খবরটার জন্যে এতক্ষণ অপেক্ষা করা সম্ভব না। আগেই খবর নিয়ে রেখেছে, চৌ রাস্তার মোড় থেকে হকারদের পত্রিকা  বিতরণ করা হয়। সেখানে পত্রিকা চলে আসে ভোর পাঁচটায়। তার আগেই খলিল সেখানে যেয়ে পৌছাল। প্রত্যেকটা পত্রিকা একটা করে কিনল।

পাশের রেস্টুরেন্টে যেয়ে, এক কাপ চা নিয়ে বসে, এক এক করে পত্রিকাগুলোর উপরে চোখ বুলাতে লাগল। কিন্তু এগারটা পত্রিকা দেখা হয়ে গেল; খবরটা এখনো চোখে পড়ল না। ভাবতে লাগল, এত বড় ঘটনা, পত্রিকাগুলোর মিস করে কি করে। এমন হতে পারে, খবরটা  পত্রিকা অফিসে  দেরি করে এসেছে। এর মধ্যে পত্রিকা ছাপান শেষ।

হঠাৎ পাশের টেবিল থেকে মনে হল দু জন  খুব উত্তেজিত হয়ে কথা বলছে।

একজন বলছে, এইটা কি করে সম্ভব। শাহ রাজ আত্মহত্যা করেছে। আমি কালকেই তার একটা ছবি দেখেছি। আহারে……। এদের দুজনেরই চোখ, কোনায় রাখা একটা টেলিভিশনের দিকে। সেখানে ব্রেকিং নিউজ দেয়া হচ্ছেঃ মেগাস্টার শাহ রাজ আর নাই।

খলিল শেখ টিভির দিকে মিনিট খানেক তাকিয়ে, হাত মুঠি করে বেশ জোড়েই বলল, ই- য়ে- স।

রেস্টুরেন্টের অন্য মানুষরা তার দিকে তাকাল। একজন মন্তব্য করে বসলো, ব্যাটার মাথা মনে হয় খারাপ হয়ে গেছে। খোঁচা খোঁচা দাড়ি আর উসকো খুসকো চুলের খলিল শেখ চা রেখে দিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসল।

ম্যানেজার বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল। চায়ের দাম আর চাইল না। পাগল মানুষ যদি ভাংচুর করে; ক্ষতির পরিমান তা হলে অনেক বেশি বেড়ে যাবে। যাই হোক, এক কাপ চায়ের উপর দিয়ে গেল।

পর পর সাত দিন সাত জন বিখ্যাত মানুষ তাদের নিজের জীবন নিজে নিয়ে ফেলল। এর মধ্যে সেরা ক্রিকেট খেলোয়াড় থেকে আরম্ভ করে চ্যানেল এইচ ওয়ানের মাওলানা সাহেব পর্যন্ত আছেন। কোন হতাশা নাই, কোন দুঃখ নাই—একেবারে হাসি মুখে তারা  সবার থেকে বিদায় নিয়ে ওই পাড়ে যাত্রা করেছে।

দেশের মানুষের মধ্যে ত্রাস পড়ে গেল। এইটা কি হচ্ছে, এইটা কি করে সম্ভব। কেও মানতে রাজী না, এতগুলো মানুষ এত খ্যাতির মধ্যে থেকে আত্মহত্যা করতে পারে। নিশ্চয়ই দেশের বিরুদ্ধে এটা বড় ধরনের  ষড়যন্ত্র চলছে। ১৯৭১ সালে রাজাকাররা পাক বাহিনী দিয়ে বুদ্ধিজিবীদের হত্যা করেছিল। বাংলাদেশেকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া, এইটা অন্য কিছু হতে পারে না।

রাজনৈতিক নেতারা  বিভিন্ন মতামত দিতে লাগল। কিন্তু মনের দিক থেকে তারা একেবারে

দুর্বল হয়ে পড়ল। কে জানে সিরিয়ালে আবার তার নিজের নামও আছে কি-না। একেবারে উচ্চ পর্যায়ে এ নিয়ে বৈঠক হল। দেশের ডিবি, র‍্যাবকে তিন দিন সময় বেঁধে দেওয়া হল। তারা যদি এই রহস্য উদঘাটন করতে না পারে, তা হলে এফবিআই, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে নিয়ে আসতে যাতে একেবারে দেরি না করা হয়।

এমেরিকার শিকাগো থেকে ঢাকা, অনেকটা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। এক জায়গায় যখন সকাল আটটা, অন্য জায়গায় তখন রাত আটটা। সেই শিকাগোর, ইউনিভার্সিটির অফ ইলিনয়ের এক প্রফেসর, ডঃ ফিলিপ হার্ডবল। দেশ বিদেশে প্রচুর নাম ডাক। মাইক্রো বায়োলজির অনেক বিষয়ে তার বেশ কিছু মৌলিক অবদান আছে। অনেকের ধারনা খুব শিঘ্রি নোবেল প্রাইজ তার ঘরে আসবে।

তার অনেক দিনের অভ্যাস, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইন্টারনেটে দেশ বিদেশের খবর দেখে নেয়া। হঠাৎ একটা খবর দেখে তার চোখ বড় হয়ে গেল। খবরটা বাংলাদেশের।  সাত দিনে সাত জন বিখ্যাত মানুষের মৃত্যু নিয়ে বড় একটা প্রতিবেদন; কেও বলছে আত্মহত্যা,  কেও বলছে ঠাণ্ডামাথার সব মার্ডার। আবার অনেকের বদ্ধমুল ধারনা এটা বড় কোন ষড়যন্ত্রের কারণ, এর পেছনে বাইরের কোন শক্তির হাত আছে।

ডঃ হার্ডবল চিৎকার করে বউ মেরীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলল। বলল, আমি এখনই বাংলাদেশে রওয়ানা দিচ্ছি। মেরী বুঝল, নিশ্চয়ই বড় কোন সমস্যা হয়েছে। মেরী জানে ডঃ কে প্রশ্ন করে কোন লাভ নাই। সময় হলে নিজের থেকেই সব বলবে। শুধু বলল, তুমি টিকিট ছাড়া যাবে কি করে? এত রাতে তুমি টিকিটই পাবে কি করে? উত্তরে ডঃ বলল, তুমি ভেবো না। এয়ারপোর্টে যেয়েই আমি সব ব্যাবস্থা করব।

বছর দুয়েক আগের কথা। ডঃ ফিলিপ হার্ডবল তার গবেষণা সহকারী হিসাবে একজন খুঁজছিল। কঠিন একটা বিষয়; টক্সলপ্লাসমা গণ্ডি (Toxoplasma gondii) নামে একটা প্যারাসাইট নিয়ে কাজ হচ্ছিল। এর মধ্যে ডেনমার্কের এক গবেষণায় এক আশ্চর্য তথ্য বের হয়ে এসেছে।

৪৫,০০০ মহিলাদের উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এই প্যারাসাইটে আক্রান্তদের নিজের ক্ষতি করা কিংবা আত্মহত্যা পর্যন্ত করার সম্ভবনা অনেক বেশী।  মানুষের মধ্যে এই প্যারাসাইট কম সিদ্ধ হওয়া মাংস, না ধোয়া শাক সব্জি থেকে আসে। অনেকের আবার আক্রান্ত বিড়ালের মল পরিষ্কার করতে যেয়ে নিজে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। টক্সলপ্লাসমা গণ্ডি প্যারাসাইটের বাস হল মস্তিস্কের মধ্যে। অনেকের বিশেষজ্ঞের ধারনা, মানুষের আচরন আর আবেগ নিয়ন্ত্রনে এর ভুমিকা তৈরি হতে পারে। এর শিকার সব চেয়ে বেশী হল, মাত্র বাচ্চা হয়েছে এ ধরণের মহিলারা।

ডঃ হার্ডবল সিলেক্ট করল ডক্টরাল স্টুডেন্ট বাংলাদেশের খলিল শেখকে। মাইক্রো    বায়োলজি, নিউরোলজি থেকে আরম্ভ করে বিজ্ঞানের প্রতিটা বিষয়ে তার জ্ঞান দেখে ডঃ হার্ডবল একেবারে অবাক হয়ে গেল। মনে মনে বলল, এ রকমই একজন খুঁজছিলাম।

অল্প সময়ের মধ্যে গবেষণা অনেক দূর এগিয়ে গেল। ডঃ হার্ডবলের নেতৃত্বে গোটা দশেক মানুষ কাজ করলেও, মুল দায়িত্ব চলে আসল খলিলের হাতে। এর মধ্যে ডঃ’ কে আরেক কাজে, ভিসিটিং প্রফেসর হিসেবে মাস তিনেকের জন্যে দেশের বাইরে যেতে হল। তখন খলিল শেখকে প্রজেক্টের সাময়িক কর্ণধার করে দেয়া হল।

খলিল শেখ,  ডঃ হার্ডবল দেশে ফিরে আসার পরের দিনই, কাজের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলতে এসে হাজির হল। খলিল ব্যাখ্যা করতে লাগল, সে আবিষ্কার করে ফেলেছে এই প্যারাসাইট আসলেও মানুষ আচরন নিয়ন্ত্রন করতে পারে—-ভাল, খারাপ সব কিছুই। এটা দিয়ে  মানুষকে সহজে সুইসাইডাল করে তোলা করা যায়। এর মধ্যে ল্যাবে সে কৃত্রিম টক্সলপ্লাসমা গণ্ডি প্যারাসাইট বানিয়েছে। সাথে এনটি ডিপ্রেসেন্ট  দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছে, মানুষ হাসতে হাসতে কি ভাবে নিজেকে মেরে ফেলতে পারে।

খলিল গলার স্বরটা একেবারে নীচু করে চারিদিকটা দেখে নিয়ে বলল, ডঃ এর মধ্যে ব্যাপারটা আমি মানুষের উপর চালিয়েছি। পুরোপুরি যে কোন মানুষকে কন্ট্রোল করা সম্ভব। একেবারে হাসতে হাসতে ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছে। খলিল গর্বিত মুখে বলতে লাগল, শুধু হাই ডোজ কৃত্রিম টক্সলপ্লাসমা গণ্ডির এক আউন্স খাবারের সাথে শরীরে ঢুকিয়ে দিলেই হল। এক গাল হেসে বলল, better than anthrax.

ডঃ হার্ডবল বিশ্বাস করতে পারল না, এইটা কি সে শুনছে। মনে হচ্ছে সে এক ভবিষ্যৎ ইউনে বোম্বারের চেহারা দেখছে। হার্ভার্ডের শিক্ষিত কাগসনস্কির মত কি এও একের পর এক মানুষ খুন করে চলবে?  একে যে কোন ভাবেই একে এই বিপদ জনক কাজ থেকে

সরাতে হবে। কিন্তু মাথায় আসল না; পুলিশ ডেকে খলিলকে ধরিয়ে দেয়া উচিত, না কি আর কিছু প্রমান জোগাড় করে তার পরে পুলিশকে জানা উচিৎ।  এই অবস্থায় কোর্টে কিছু প্রমান করাটা অনেকটা অসম্ভব।

ডঃ, খলিলকে বিদায় করে, প্রজেক্ট থেকে খলিলকে অব্যাহতি দিল। কম্পিউটারের সব  ধরনের এক্সেস বন্ধ করে দিল। ল্যাবে ঢুকা নিষিদ্ধ করে সবাই জানিয়ে দেয়া হল, টক্সলপ্লাসমা গণ্ডি প্রজেক্টের ব্যাপারে কেও যেন কোন তথ্য খলিলকে না দেয়।

পরের দিন লোক মুখে ডঃ হার্ডবল শুনল, খলিল শেখ বাংলাদেশে ফিরে গেছে। ডঃ অনেকটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলল। যাই হোক আপদ তো দূর হল। একবার মনে হল

খলিল বাংলাদেশে যেয়ে একই কাজ করা, আরম্ভ করবে না তো। আবার মনে হল, বাংলাদেশে এ রকম ল্যাব সে পাবে কোথায়? ২০ মিলিওন ডলার খরচ করে এই ল্যাব বানান হয়েছে। আর গবেষণার সব বর্ণনাই পাবে কোথায়? তাকে এ সব থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কিন্তু ডঃ হার্ডবলের সংশয় একেবারে গেল না।

খলিল শেখ যদি অল্প খরচে এই কাজের জন্যে ল্যাব বানিয়ে ফেলে।

তা ছাড়া ওর তো এমনিতেই ফটোজেনিক মেমোরি। একবার যা দেখে তা সে কখনো ভুলে না।

ডঃ বেশীক্ষণ ভাবতে পারে না। সে যে কেন এই দানবকে কাজে নিয়েছিল।

এই দানব বাংলাদেশে কৃত্রিম টক্সলপ্লাসমা গণ্ডি বানিয়ে যদি মানুষের উপর ব্যাবহার আরম্ভ করে, তা হলে প্রলয়ঙ্করি একটা ঘটনা ঘটে যাবে।

০৮/১২/২০১২

www.lekhalekhi.net

শৈলী.কম- মাতৃভাষা বাংলায় একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুবিধা প্রদানকারী প্ল‍্যাটফর্ম এবং ম্যাগাজিন। এখানে ব্লগারদের প্রকাশিত লেখা, মন্তব‍্য, ছবি, অডিও, ভিডিও বা যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। ধন্যবাদ।


You must be logged in to post a comment Login