শিকড় ছিড়ে যাবার পুর্বকাল
শৈশবের দিনগুলো বড় অদ্ভুত ছিল
ভাঙাচোরা নড়বড়ে ঘরটিতে
বেশ শক্ত খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল
ভালোবাসা সম্পর্কের বন্ধনে ।
ভালোবাসা ছিল দাদীমা’র হাতে
কাঁঠাল পাতা দিয়ে আঁকা পানের খিলির প্রতিবিম্বে
কিংবা তোষকের নিচে লুকোনো
গলিতপ্রায় ফানটা লজেন্সের মোড়কে ।
ভালোবাসা ছিল রোজ সকালে পুকুরপারে
দাদীমা’র দুধ-শাদা চুলে
সোনালী রোদের ঝিকিমিকি খেলায় !
শৈশবে ভালোবাসারা ঘুরে বেরাত দল বেঁধে
কাঠের বেড়ার ফাঁক গলে এঘর থেকে ওঘরে ।
ভালোবাসা ছিল ছোটচাচার
কাঁচা চুলের বন থেকে পাকা চুল শিকারে ;
ছোটচাচীর হাতে গড়া ভাতের নলায় –
উনুনঘরে , লাকরির চুলোর ধোঁয়ার মাঝে
মায়ের অসীম ব্যস্ততায় ভালোবাসা ছিল !
চাচাতো ভাইবোনেদের সাথে গাজীদের বাগানে
ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে ভালোবাসার দেখা মিলে যেত হরহামেশা ।
তেতুল-চালতার ভর্তার বুননে বুননে
আর সন্ধ্যাবেলায় বিজলিবাতি নিভে গেলে
হারিকেনের মিটিমিটি আলোয় পড়া ফাঁকি দিয়ে
লুকোচুরি খেলায় লুকিয়ে ছিল ভালোবাসা !
সাধগুলো বড় স্বল্প ছিল ; স্বপ্নগুলো ছিল লাগামছাড়া
এর আড়ালেই ভালোবাসা ছিল শেকড়ের বন্ধনে ।
আজ ভালোবাসাগুলো শুধু বেজে যায়
শেকড় ছিড়ে যাবার ব্যথার স্পন্দনে !
©আহমেদ মাহির
৩০/১২/১০
14 Responses to শিকড় ছিড়ে যাবার পুর্বকাল
You must be logged in to post a comment Login