নাপাক ঈশ্বর

মুখোশ খুলার দিনটি ক্যালেন্ডারের যেকোন একটি তারিখ

(সতীর্থ এবং ভেজাল বন্ধু কবি রাওয়ান সায়েমাকে) দূর্বা অথবা অন্য কেউ ইচ্ছে করলেই আর ছুঁতে পারবে না আমাকে। ক্যালেন্ডারের যেকোনো একটি তারিখে অনায়াসে ঢুকে যেতে পারি জুন, জুলাই, আগস্ট অথবা ডিসেম্বর ডিসম্বরে হলে ছাই রঙ নিয়ে ঢুকে যাবো জুন-জুলাইয়ের কথা এখনো ভাবিনি জুন-জুলাই তো বর্ষাকাল মিনারেল ওয়াটারের বোতলে বৃষ্টি ভরে পাঙ্গাস মাছের চাষ করা যায় […]

 নাপাক ঈশ্বর

যাদুর চাদর (প্রথাগত কবিতা)

এই শীতে একটি সাদা কালো চাদর ব্যবহার করছি আমি। জানো বোধহয়, সাদা-কালো কোন রঙ নয় তবুও কি নির্লীপ্তভাবে রং-এর খেতাব চড়িয়েছে নিজের নামে! কিছু কিছু কবিতার সাথে আমি একদমই চাদরের মিল খুঁজে পাই না। কবিতার বই থেকে কয়েকটি খটমট কবিতা অনায়াসে শুষে নিয়ে কিশোরীর খিল খিল হাসি হেসে আমাকে জড়িয়ে রাখে, মখমল আলিঙ্গনে বেশুমার উষ্ণতা […]

 নাপাক ঈশ্বর

মাতাল

দুই ঢোঁক পেটে চালান করেই কবিতার বই নিয়ে বসা পরা যায়, সোনালি-রূপালী বর্ণগুলোর পীঠে পাখা লাগিয়ে উড়িয়ে দেয়া যায়, গিলোটীন চাঁদটাকে হ্যাঁচকা টানে নামিয়ে এনে, ফালা ফালা করা যায় প্রিয় কোন মুখ। পরবর্তি দুই ঢোঁক মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেই অনায়াসে নিথর শরীরে ঢেউ তুলে নৃত্যে নৃত্যে আসর জমানো যায়, চ্যাংদোলা দিয়ে বাদুরের সাথে কাটিয়ে দেয়া যায় […]

 নাপাক ঈশ্বর

বিবর্ণ- বিপন্ন বোধ

নির্বাসিত জ্ঞাণের শূন্যতায় হাহাকার ওঠে। রঙহীন স্বপ্নের বুদবুদ উড়ে যায়-দূরে যায়-বিলীন হয়। বোধের জমিনে খড়া- শুকনো ধানের তুষ, শুকনো ঘাসের শরীর। একটি পাতি ইঁদুর উঁকি দেয়, একটি চিল- মাছের চোখ ফেলে উড়ে যায়, একটি বাইসন ক্ষুধা তৃষ্ণায় মরে যায়-পচে যায়-গলে যায়। একটি ধানের চারা পাতা মেলার আগেই ইঁদুর তাকে ছিঁড়ে খায়-গিলে খায়। শূন্যতার হাহাকার ওঠে-অলীক […]

 নাপাক ঈশ্বর

নেঁকড়ে

বছর পাঁচেক আগের কোন এক শীতের নিঃস্ত্বেজ দুপুরে আমার মা আমাকে একজন মুক্তিযোদ্ধার গল্প শুনান। গল্পটি শুনে আমি বেশ রোমাঞ্ছিত হই, চোখ জলে ঝ্বাপছা হয়ে আসে, শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায় সেই মুক্তিযোদ্ধার প্রতি। তারপর অনেকটা সময় কেটে যায়, গল্পটির কথা আর মনে থাকে না। কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখতে পেলাম প্রতিটি সড়কের নামকরণ […]

 নাপাক ঈশ্বর

ক্ষুধা

সরীসৃপের দুলোন গতি ক্রমে ক্রমে এগিয়ে আসে পাশে বসে পঙক্তিগুলো মুখোশ খুলে মুখ খিঁচিয়ে দাত দেখিয়ে হাঁসে কাপালিক রাত মন্ত্র পড়ে অ-আ-আংগ্রিম-অ-আংগ্রিম-ক্রিম হৃদয় পশমী চামড়া জড়ায় আধারে একটি পদ্ম-গোখড়া মরিয়া হয়ে খুঁজে ফিরে কালো ক্ষুধার্ত গহ্বর।

 নাপাক ঈশ্বর

হুমায়ুন আজাদ স্মরণে

ভয় নেই গোলাপ, তুমি পুষ্পিত হও মেলে ধরো তোমার পাঁপড়ি। আমরা আছি, জেগে আছি তোমায় ঘিরে। ভয় নেই কাক, তুমি আবর্জনা বিনাশ করো একে একে গিলে নাও পচে যাওয়া শরীর। আমরা আছি, চেয়ে আছি তোমার পানে। ভয় নেই বসন্ত, ভয় নেই পলাশ, ভয় নেই শহীদ বেদী। আমরা আছি, এখনো জেগে আছি। পচন ধরা শিশ্নের ভয় […]

 নাপাক ঈশ্বর

তোমার জন্য হে প্রিয়তমা

তোমাকে ভালোবেসে হে প্রিয়তমা রক্ত জবার রক্তিমতা নিয়ে এসেছি স্বপ্নপূরীর মায়াজাল ছিন্ন করে। তোমাকে ভালোবেসে হে প্রিয়তমা ট্রয় নগরী ধ্বংস করেছি, এস্কিলাসের ঘোঁড়ার খুঁড়ে পীষ্ট হয়েছি। তোমার জন্যে হে প্রিয়তমা; সাহারা মরু পাড়ি দিতে গিয়ে শকুনের খাবার হয়েছি, নীল নদের বভুক্ষু পীরানহা টুকরো টুকরো করে খেয়েছে আমার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। তোমার জন্যে হে প্রিয়তমা; কত-শতবার […]

 নাপাক ঈশ্বর

শ্যামা

অলেখিত অবুঝ প্রার্থনা মোর কর তুমি অনুমান। তোমার শ্যামাঙ্গ; শ্রবণ তারার মত। প্রতিনিয়ত নত শ্রদ্ধাধান। হারিয়ে যাওয়ার সমকালীন স্রোতে, বিচলিত-বিহ্বল মন। শ্যামাধানের শ্যামল রূপের সৌন্দর্যের- মত; করেছো হরন। এই সন্ধ্যাকালীন বারিধারায়; ক্ষণকালীন সম্ভাবনায় বুকের বাঁ পাজরের আবেগের কথা বলছি, কান পেতে শুনো। “ভালোবাসি। শ্যামা মেয়ে তোমায়; বড় বেশি ভালোবাসি।”

 নাপাক ঈশ্বর

একটি অপমৃত্যুর অপেক্ষায়

আমার ঘরেই বসত গেড়েছে কিছু হিংস্র গেরিলা। আমার অজান্তেই, সব নীল নকশা আঁকা হয়, খাটের তলায় লুকিয়ে রাখা হয়, বুলেট আর বোমা। পাতি ইদুঁরের মত, তারা আমার খাদ্য করে ক্ষয়। আমার বাড়ির আঙিনাতেই পেতে রাখা হয় মাইন। সারারাত অস্ত্র শাণ দেয়ার, বিশ্রী শব্দ কানে আসে কানে আসে, মাতাল গেরিলার বেসুরা গানের লাইন; মাঝে মাঝে নেঁশায় […]

 নাপাক ঈশ্বর

লৌকিক প্রেম

অব্যক্ত আবেগের দুর্বোধ্য ভাষায় খেলা করে জীবন, বিষাক্ত বাতাসে উড়ে চলে হলুদ পাতা। মৃত মানুষের গন্ধ ভেসে আসে বাতাসে; তারপর পাতায়, পাতা থেকে ডালে, ডাল থেকে গাছে; অতঃপর ঘাসে। মরচে পড়া শেকলের বন্ধন কতকাল আর স্থায়িত্ব পায়, রক্তে যখন আগুন ধরে-পোড়া মাংসের স্বাদ- নিতে শকুন কি কখনো বিলম্ব করে। ঘুণে ধরা সভ্যতার প্রহেলিকাময় সঙ্গমের ব্যর্থ […]

 নাপাক ঈশ্বর

আলো আধারের ঘর বসতি

আজ বাড়িতে একটু উৎসবের আমেজ থাকবে এটাই স্বাভাবিক; হচ্ছেও তাই। মকবুল সাহেবের ছোট ছেলের বিয়ে আজ। বেলা বারোটার দিকে বর যাত্রী নিয়ে বারুবার কথা। ছোট ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষ্যে মকবুল সাহেবের বড় ছেলে ঢাকা থেকে সপরিবারে চলে এসেছে দু’দিন আগেই, তার বড় ছেলে মঞ্জু এয়ারফোর্সে চাকরি করে, মোটা অঙ্কের টাকা পায়, সেই টাকা দিয়েই ছোট ভাইয়ের […]