পদ্য

 হরিপদ কেরানী

বিশ্বস্ত স্বর্ণকার

আমার হাতে রাখিস যদি ভালোবেসে তোর হাত জীবনে গড়া কাঁকন দিব বাজাবি দিনরাত।

 আহমেদ মাহির

আকুতি !

এক মহাকাল পেরিয়ে মরিচিকা স্বপ্নমালারা অবিরত তুলির স্পর্শে আঁকে কোনো অন্য ভুবনের শব্দমালা ; আলোকবর্ষের পথ পেরিয়ে সে অশ্রুধারার পথ শুকিয়ে যায় কোনো খরস্রোতার মতই ; শতাব্দীর ওই মহিমা কী অবলীলায় হারিয়ে যায় ! এ ক্ষনিকের চপলতা , সদা গোপনে লুকোনো এ ভালোবাসা , ব্যাকুল হৃদয়ের তুচ্ছ শব্দমালাও হারিয়ে যাবে , জানি ; তবু যে […]

 আহমেদ মাহির

মাঝরাত্তিরের অনুকাব্য :: ৭

১।। বিষাদের সুর ওই পুঞ্জিত মেঘমালায় মিলে গিয়ে শুভ্র-ধুসর বিষাদ-বর্ণ ছড়ায় ; কবেকার জমে থাকা মন-কোনে ব্যথা , গোধুলি-বিষাদে স্মৃতি যেন আজ রূপকথা ! আঁধার নামে – বড় নীরবে ; অস্ত যায় রবি সন্ধ্যাতারার স্পর্শে হারায় আঁধারের কবি ! ২।। বিদ্যুতের তারে মারা পড়ে শালিক আর কাক ; সৌখিনের সখ মেটাতে বিষ্ময়কাতর দৃষ্টি নিয়ে আপন […]

 মেঘবালিকা

বনলতা সেন-জীবনানন্দ দাশ

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে, সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধুসর জগতে সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে; আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন, আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন। চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; […]

 শৈবাল

কবিতা : প্রভাত প্রত্যয়ী

পুরনো রাস্তায় , খুব পুরাতন আমি হেঁটে যেতে যেতে দেখলাম শহরটা , বাড়িগুলো ; বেড়ে ওঠা অসংযমী ঊর্ধ্বগামী অনেকটা স্পেসশাটল সদৃশ একেকটা এখুনি শুরু করবে কাউন্টডাউন , কিংবা কাঁধে কাঁধে বাঁধে বৈষম্যের ব্যারিকেড আর হবে না পাচার সাম্যবাদীর উনুন । বলতে বলতে সন্ধে নামে অচিরে এই শহরে বিকেল গড়িয়ে চলে ক্ষিপ্র খড়িস শরীর ধরে , […]

 আহমেদ মাহির

বচসা !

অলিতে-গলিতে বর্বর বচসায় মেতেছে সবে , অযথাই কোলাহল আর অর্থহীন উন্মাদনা সেসব বর্বরতার পালে লাগায় পুঁতি-গন্ধময় হাওয়া । কবিদের হাতে কলম নেই , বড় অসহায় দৃষ্টি আজ তাদের ; প্রেমিকের হাতের গোলাপ শুকিয়ে শীতের পাতার মতই ঝরে পড়ে ; কৃষকের লাঙ্গলের ফলা চুরমার ; ভেঙ্গে যাওয়া দেবী-প্রতিমার চোখে হতাশা আড়ালে রয় না আর । অলিতে-গলিতে […]

 হরিপদ কেরানী

নষ্টালজিয়া

শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথী চৈত্রের দুপুরের ধুলোউড়া পথ অনেক মানুষ আজ পথে। সবার হাতেই হরেক সওদা শরীরে ক্লান্তি, চোখে-মুখে আনন্দ। আমার বাম পকেটে লাল মুরালি ডান পকেটে কদমা বাম হাতে শক্ত করে ধরা বাবার তর্জণী ডান হাতে টমটমের রশি। দুপুর রোদ গায়ে মেখে টমটম বাজিয়ে সিন্দুরমতির মেলা থেকে বাড়ী ফিরছি – মনে মনে!

 মেঘবালিকা

কবিতা: বিরহ বসন্ত

মনের মাঝে কিসের বেদনা জাগে সেই বেদনার রোদন যেন বসন্ত বাতায়নে।। হৃদয়বনে কখন তুমি এলে বাজলো বাঁশি-হাসলো আকাশ লাগলো দোলা বনে।। অনেক দিনের অনেক শূন্যতা শেষে তুমি এলে অবশেষে। সকল ব্যথার হলো যে অবসান হৃদয়নন্দনবনে বাজলো কিসের তান। অঙ্গে অঙ্গে কি বাঁশি বাজে বিরহ-বেদন গেলো যে ঘুচে উদাসী হাওয়া চঞ্চল আজ কিসের শিহরনে।।

 আহমেদ মাহির

সন্ধান !

জানি, একদিন কিছুই থাকবে না, না আমি, না তুমি ; না আমাদের দুঃসময় । সন্ধ্যেবেলায় ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরার মতই আমরা , আমাদের আনুসঙ্গিকতা ফিরে যাবে ঠিকানাহীন কোনো অজানায় । জানি, এমনই হয় । কিন্তু আমাদের স্পর্শহীন উষ্ণ আবেগ আর ওই বুকের মধ্যিখানে গুমরে কাঁদা ব্যাথাটা ? আমি খুঁজেই পাই না, এর সমাপ্তি কোথায় ! […]

 আহমেদ মাহির

কত বদল এই আমাতে !

তুমি নেই – মনে হয় যেন কত শতাব্দী কেটে গেল , কত বদল এই আমাতে ; এমনিতেই তো এই বদল হতো – হয়ত এমন করে হতো না – হয়ত এভাবে হতো না । এখনও প্রায়শই স্টেশানে বসে থাকি ; আগেও যেমনি বিকেল-সন্ধ্যা-রাত্রি অবধি থাকতাম । এখনও যথা নিয়মে ট্রেন আসে , আবার স্টেশান ছেড়ে চলেও […]

 আহমেদ মাহির

আজ বছর পঁচিশ পরে

পঁচিশ বছর ধরে বদলে ফেলেছি নিজেকে আপন স্বত্তা থেকে তোমার চাওয়াতে । বেলা অবধি অলস গড়াগড়ি বিছানাতে ; ছেড়েছি ! তাও ছেড়েছি । মহবুত বাহুর প্রচন্ড শ্রমিক আজ রোদ-সহনিয়া এ দেহ ! বলেছিলে , “ভালবাসতে অর্থ লাগে ; ভালবাসাকে আগলে রাখতে লাগে তার প্রাচুর্য !” আজ বছর পঁচিশ পরে , অর্থ আমার দ্বারে নিরর্থক লুটোপুটি […]

 নীল নক্ষত্র

স্বাগতম, হে সুদূরের পথিক

আমার এ চিঠি লিখে রেখে যাই তোমাদের জন্য অনন্ত শতাব্দীর প্রান্তে দাঁড়িয়ে, পথিক- এ চিঠি পড়ে যদি পার আমায় করো ধন্য। এ যুগের গান লিখে রেখে যাই পাখীর কূজনে উত্তর ফাল্গুনে, জানি তুমি সেদিন জানবে না আমায়, রাখবে না মনে। হেমন্তে বসন্তে জানিনা সেদিন বইবে কি দখিনা বাতাস গাইবে কিনা কোকিল, পাপিয়া ফুটবে কিনা কুমুদ […]