বিবর্ণ পাতা থেকে :: ৫
অমিয়া, বহুকাল পর তোর কাছে লিখতে বসা । লেখার ফুরসত অনেক ; ইচ্ছেও কিছু কম নেই – আলস্যই ফুরসতটুকুকে কেড়ে নেয় । বেশ কাটছে পাহারের ওপরের দিন-রাত্রি । আরামকেদারা আর বিছানা করে করে বেশ পার হয়ে যাচ্ছে । কখনো সখনো আলস্য কাটাতে বইয়ের দ্বারস্ত হতে হয় , তবে তা এমন কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখে না […]
মাঝরাত্তিরের অনুকাব্য :: ৫
১।। হায় ! কোথায় আজ সে অহংকার ? কোথায় সে প্রাণদীপ্ত পদচিহ্ন তোমার ? নিমেষে নিঃশেষ ভালোবাসার উষ্ণ প্রশ্বাস ; আজ কেবলই তুমি নর্দমার কোনের বেওয়ারিশ লাশ ! ২।। গনগনে সুর্যে সেজেছে দুপুর – চৌরঙ্গির মোড়ে কাকেদের মেলা ; অলস গড়াচ্ছে সময় – বিষন্ন কাটুক আজ ছুটির দুপুরবেলা ! ৩।। ভ্রমররে , তুই আর আমার […]
সন্ধান !
জানি, একদিন কিছুই থাকবে না, না আমি, না তুমি ; না আমাদের দুঃসময় । সন্ধ্যেবেলায় ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরার মতই আমরা , আমাদের আনুসঙ্গিকতা ফিরে যাবে ঠিকানাহীন কোনো অজানায় । জানি, এমনই হয় । কিন্তু আমাদের স্পর্শহীন উষ্ণ আবেগ আর ওই বুকের মধ্যিখানে গুমরে কাঁদা ব্যাথাটা ? আমি খুঁজেই পাই না, এর সমাপ্তি কোথায় ! […]
কত বদল এই আমাতে !
তুমি নেই – মনে হয় যেন কত শতাব্দী কেটে গেল , কত বদল এই আমাতে ; এমনিতেই তো এই বদল হতো – হয়ত এমন করে হতো না – হয়ত এভাবে হতো না । এখনও প্রায়শই স্টেশানে বসে থাকি ; আগেও যেমনি বিকেল-সন্ধ্যা-রাত্রি অবধি থাকতাম । এখনও যথা নিয়মে ট্রেন আসে , আবার স্টেশান ছেড়ে চলেও […]
আজ বছর পঁচিশ পরে
পঁচিশ বছর ধরে বদলে ফেলেছি নিজেকে আপন স্বত্তা থেকে তোমার চাওয়াতে । বেলা অবধি অলস গড়াগড়ি বিছানাতে ; ছেড়েছি ! তাও ছেড়েছি । মহবুত বাহুর প্রচন্ড শ্রমিক আজ রোদ-সহনিয়া এ দেহ ! বলেছিলে , “ভালবাসতে অর্থ লাগে ; ভালবাসাকে আগলে রাখতে লাগে তার প্রাচুর্য !” আজ বছর পঁচিশ পরে , অর্থ আমার দ্বারে নিরর্থক লুটোপুটি […]
মাঝরাত্তিরের অনুকাব্য :: ৬
১।। পতিত আত্মার হৃদয়ে কর্ণপাত করিনি বহুকাল – কত ধুকপুক আর্তনাদ আমায় ফাঁকি দিয়ে পালাল’ ; হিসেবের অগোচরেই প্রেমের নগ্ন দেহে কত আঘাতের পদচিহ্ন হায় ! এরও হিসেব বুঝি আমাকেই কষতে হল … ২।। তোমার কবরের গর্ভমূল চিড়ে এক টুকরো বাঁশ দেবে আমায় ? সে বাঁশকে বাঁশিতে রূপ দেব – বাঁশি হাতে হব বাঁশুরিয়া ! […]
অনুগল্প: অপেক্ষা
♦ মহিম চৌধুরী এখন কাজিপাড়া পান্থকুঞ্জ এর সামনে দাঁড়িয়ে। বাইশ বছর আগে এখানেই থাকত সুপ্ত। এটা সুপ্তর বাসা ছিল না; সুপ্তর মামার বাসা। হয়ত এখানেই সুপ্তর ঠিকানা পাওয়া যাবে। বাইশ বছর পর দেশে ফিরে এভাবেই স্কুল জীবনের বন্ধু সুপ্তকে খুঁজছে মহিম। হয়ত সুপ্তকে না, সুপ্তকে খোঁজার ছলে অন্য কাউকে কিংবা স্মৃতিকে অথবা বর্তমানকে। কখনো কখনো […]
রাত্তিরের অনুকাব্য :: ৩
১।। পড়ে আছে প্রজ্জ্বলিত স্মৃতির অঙ্গার – তোমার অন্ধ আদালতে ধিক্কার ! ২।। এই চারপাশের অসীম ব্যস্ততা যার মানে নিঃসীম স্তব্ধতা ; পাড়ায় পাড়ায় স্বপ্ন বিক্রেতা হকারের চিৎকার ! তোমাদের এই বিষ্ময়ের নগরে বসতি আমার । ৩।। কেমন আছেন? এক গাল হেসে বলি , ” ভালো আছি … “; ঢাকি আমার ‘মন্দ থাকা’ হাসির কৌশলে […]
তবু ওরা আমায় জেনেছে !
ওরা আমায় জেনেছিল’ মৃত্যুর সংলাপে কিংবা তারও পরে আমার নিস্তব্ধতায় ; অভাবের অনুভবে । রোজকার হুল্লোরময় উদ্যানে সাথে চলার শপথ নেয়া কিশোরটি আমায় ছেড়ে গিয়েছিলো , কোনো নতুন শপথের সন্ধানে । জানেনি সে কিশোর সেদিন, তাকে সাথে করে ছুটেছি আজীবন! আমায় কৃষ্ণে রূপ দিতে দিতে , স্বপ্নিতা , আমায় হঠাৎই কোনো পুরোনো পুতুলের মত ছুড়ে […]
কাতরতা !
আজও মাঝে মাঝে কান্না পায় ! অকারনে , অবেলায় , অসময় সব পদাবলি থমকে দাঁড়ায় ; কাগজে কলমে একরাশ নিরবতা বয়ে যায় ! দেখি আপন হৃদয়ের ভিতগুলোর একে একে ধ্বসে পড়া জীর্ন কাঠামো আর তার কাতর হাতছানি ; সে কাতরতা যে আমায় আরও চুর্ন করে দেয় , আরও নড়বড়ে করে দেয় – আজও টলমলে পায়ে […]
বিবর্ন পাতা থেকে :: ৩
অমি , অনেককাল তোর সাথে যোগাযোগ নেই । তোর কথা ভীষন মনে পড়ে । হৃদয়ের নিকটে শুধুই তুই রয়ে গেছিস । বাকিরা কেমন ধিরে ধিরে অন্তর্বাষ্পের মতই মিলিয়ে গেছে । ভাগ্যিস ! তুই শৈশবেই আমার হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলি । কৈশর কি আমার স্মৃতি না বর্তমান আজও ঠিক বুঝে উঠতে পারি না । আর যৌবন […]
মাঝরাতে ইদানিং !
মাঝরাতে ইদানিং মাঝেমাঝেই আর্তনাদ করে ওঠে প্রাণ ! তপ্ত দুপুরের ওলি-গলি ছুঁয়ে বারেবারে আমাতে ধেয়ে আসা নোংড়া সব বচসা , আশ্লীল চিৎকার আমার দ্বারে কড়া নাড়ে অবিরত ; অশ্রুভেজা শাড়ির আচল স্পর্শ করা লোনা বাষ্পে চোখ ঝাপসা দেখে আজ । ভর দুপুরেও ওসব ওলি-গলিময় আঁধার আজ খেলা করে এথা হেথা ! মাঝরাতে ইদানিং মাঝেমাঝেই আর্তনাদ […]